ঢাকা ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রি ধান ৪৩ জাতে কৃষকের মুখে হাসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৩:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৪২১ বার

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিলফা গ্রামের রইচ শেখের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করা হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউট উদ্ভাবিত আগাম ও খরাসহিষ্ণু বোনা আউশ ধানের ব্রি ধান ৪৩ জাত। সফল আবাদ হওয়ায় এই জাতটি নিয়ে কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নতুন উদ্ভাবিত এ জাতটিতে অধিক ফলন হওয়ায় ও পবর্তীতে আমন চাষ করায় আগামীতে এ জাতটি আবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে নতুন এ জাতটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবে মনে করছেন গবেষকরা।

সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, খরার কথা বিবেচনা করে কৃষকদের জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্স্টিটিউট ব্রি-৪৩ জাতের এই ধান উদ্ভাবন করে। তাদের উদ্ভাবিত এ জাতের ধানটি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় পরীক্ষমূলকভাবে চাষ করা হয়। খরাসহিষ্ণু বোনা আউশ ধানের জাতটি অন্যান্য ধানের তুলনা অল্প দিনে ধান পাকায় ও অধিক ফলন হওয়ায় খুশি কৃষকরা।

ব্রি’র গবেষকদের উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৪৩ জাতটি ছিটিয়ে, সারি করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। হেক্টর প্রতি অন্ততঃ সাড়ে ৩ টনেরও বেশি ফলন দিতে সক্ষম। অন্য ধানের চেয়ে আর ১৫-২০ দিন আগেই ফসলটি ঘরে তোলা যাবে। এতে একদিকে যেমন কৃষকদের সময়, সার ও ডিজেল বেঁচে খরচ কমবে অন্যদিকে প্রাকৃতিক ঝুঁকিও কমে আসবে। এ কারণেই নতুন জাতের এ ধান চাষ করলে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে।

এদিকে কৃষকদের এ জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাঁটা ও মাড়াই করে এর উৎপাদনের পরিমাণ দেখানো হয়েছে। এ উপলক্ষে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.সমীর কুমার গোস্বামী। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফরিদপুরের ভাঙ্গা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আমির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মোঃ মনিরুজ্জামান, ব্রি ভাঙ্গা কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী মোঃ তারেক আজিজ, কৃষক রইচ শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ জাতের ধান চাষি নিলফা গ্রামের কৃষক রইচ শেখ জানান, তিনি ১৩ কাঠা জমিতে এ জাতের ধান চাষ করে প্রচন্ড খরা থাকা সত্ত্বেও ভালো ফলন পেয়েছেন। তিনি আগামী বছর আরো বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের ধানের চাষ করবেন এবং এলাকার অন্য কৃষকদেরকেও এ জাতের ধানের চাষ করার জন্য আহবান জানান।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, ‘এ জাতের ধান এ অঞ্চলের কৃষকের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাবে। ধান কাটার পর কৃষকরা অন্য ফসলও ফলাতে পারবেন।’ তিনি এ জাতের আউশ ধান চাষের জন্য কৃষকদেরকে এগিয়ে আসতে বলেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফরিদপুরের ভাঙ্গা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আমির হোসেন বলেন, ‘ব্রি ধান ৪৩ বোনা আউশ ধানের একটি জাত। এটি একটি আগাম ও খরাসহিষ্ণু জাত। তিন ভাবে বীজ বোনা যায়- ছিটিয়ে, সারি করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে। ব্রি ধান ৪৩ দেশের খরাপ্রবণ এলাকায় বপনযোগ্য ধান । জাতটির জীবন কাল মাত্র ১০০ দিন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে ব্রি ধান ৪৩ হেক্টর প্রতি ৩.৫ টন ফলন দিয়ে থাকে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রি ধান ৪৩ জাতে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট টাইম : ০৯:১৩:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিলফা গ্রামের রইচ শেখের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করা হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউট উদ্ভাবিত আগাম ও খরাসহিষ্ণু বোনা আউশ ধানের ব্রি ধান ৪৩ জাত। সফল আবাদ হওয়ায় এই জাতটি নিয়ে কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নতুন উদ্ভাবিত এ জাতটিতে অধিক ফলন হওয়ায় ও পবর্তীতে আমন চাষ করায় আগামীতে এ জাতটি আবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে নতুন এ জাতটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবে মনে করছেন গবেষকরা।

সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, খরার কথা বিবেচনা করে কৃষকদের জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্স্টিটিউট ব্রি-৪৩ জাতের এই ধান উদ্ভাবন করে। তাদের উদ্ভাবিত এ জাতের ধানটি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় পরীক্ষমূলকভাবে চাষ করা হয়। খরাসহিষ্ণু বোনা আউশ ধানের জাতটি অন্যান্য ধানের তুলনা অল্প দিনে ধান পাকায় ও অধিক ফলন হওয়ায় খুশি কৃষকরা।

ব্রি’র গবেষকদের উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৪৩ জাতটি ছিটিয়ে, সারি করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। হেক্টর প্রতি অন্ততঃ সাড়ে ৩ টনেরও বেশি ফলন দিতে সক্ষম। অন্য ধানের চেয়ে আর ১৫-২০ দিন আগেই ফসলটি ঘরে তোলা যাবে। এতে একদিকে যেমন কৃষকদের সময়, সার ও ডিজেল বেঁচে খরচ কমবে অন্যদিকে প্রাকৃতিক ঝুঁকিও কমে আসবে। এ কারণেই নতুন জাতের এ ধান চাষ করলে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে।

এদিকে কৃষকদের এ জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাঁটা ও মাড়াই করে এর উৎপাদনের পরিমাণ দেখানো হয়েছে। এ উপলক্ষে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.সমীর কুমার গোস্বামী। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফরিদপুরের ভাঙ্গা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আমির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মোঃ মনিরুজ্জামান, ব্রি ভাঙ্গা কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী মোঃ তারেক আজিজ, কৃষক রইচ শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ জাতের ধান চাষি নিলফা গ্রামের কৃষক রইচ শেখ জানান, তিনি ১৩ কাঠা জমিতে এ জাতের ধান চাষ করে প্রচন্ড খরা থাকা সত্ত্বেও ভালো ফলন পেয়েছেন। তিনি আগামী বছর আরো বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের ধানের চাষ করবেন এবং এলাকার অন্য কৃষকদেরকেও এ জাতের ধানের চাষ করার জন্য আহবান জানান।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, ‘এ জাতের ধান এ অঞ্চলের কৃষকের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাবে। ধান কাটার পর কৃষকরা অন্য ফসলও ফলাতে পারবেন।’ তিনি এ জাতের আউশ ধান চাষের জন্য কৃষকদেরকে এগিয়ে আসতে বলেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফরিদপুরের ভাঙ্গা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আমির হোসেন বলেন, ‘ব্রি ধান ৪৩ বোনা আউশ ধানের একটি জাত। এটি একটি আগাম ও খরাসহিষ্ণু জাত। তিন ভাবে বীজ বোনা যায়- ছিটিয়ে, সারি করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে। ব্রি ধান ৪৩ দেশের খরাপ্রবণ এলাকায় বপনযোগ্য ধান । জাতটির জীবন কাল মাত্র ১০০ দিন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে ব্রি ধান ৪৩ হেক্টর প্রতি ৩.৫ টন ফলন দিয়ে থাকে।’