ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসলাম বিতর্ক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০১:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩৮২ বার

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির একজন সম্ভাব্য প্রার্থী বেন কারসন বলেছেন, ইসলাম ধর্ম মার্কিন সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
আমেরিকার টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মি. কারসন বলেছেন, একজন মুসলিমকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি মানতে রাজি নন।
তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে দেশটির মুসলিম গ্রুপগুলো বলছে, এমন বক্তব্য দিয়ে মি. কারসন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন পাবার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
মাত্র আগের দিনই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে মুসলমান বলার প্রতিবাদ না করায়, রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প, তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখন প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন লাভের লড়াইয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। কেন এ প্রচারণায় ইসলাম বা মুসলমানদের নিয়ে এসব বক্তব্য আসছে?
বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াশিংটনে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের ইসলামোফোবিয়া বা ইসলাম ভীতি আছে। সেই ভীতিটা আসলে রক্ষণশীলদের তৈরি করা একটা ভীতি।
তিনি বলছেন রক্ষণশীলা ধর্মের ভিত্তিতেই বিভক্তি করার চেষ্টা করে।
তারা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান। এটা রিপাবলিকান দলের অত্যন্ত রক্ষণশীলদের একটি অংশ চাচ্ছেন এটাকে ব্যবহার করে রিপাবলিকান দলের মধ্যে তাদের সমর্থন তৈরি করতে। এই দলটির বাইরে এর কোন আবেদন আছে বলে মনে হয়না।
বেন কারসন বলেছেন ইসলামি মূল্যবোধ মার্কিন সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।কি আছে সেদেশের সংবিধানে ?
এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রিয়াজ বলেন, “আর্টিক্যাল ৬-এ বলা হয়েছে ধর্ম কোন ধরনের সরকারি রাষ্ট্রীয় বা জনস্বার্থ পদে অধিষ্ঠিত হবার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারেনা। ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সংবিধানের বিরোধ কোথায় সেটা বেন কারসন বলেননি। এটা আসলে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা। ইসলাম বিরোধিতাকে জাগিয়ে তোলা বা ব্যবহারের জন্যেই এসব বলা হচ্ছে”।
কিন্তু ইসলাম বিরোধিতায় কি ভোট আসবে ?
এ প্রশ্নের জবাবে মি. রিয়াজ বলেন রক্ষণশীলদের মধ্যে পারবে। এখন প্রাথমিক পর্যায়ের নির্বাচন কিন্তু যিনি প্রার্থী হবেন তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ বিতর্কটা আসলে রিপাবলিকানদের মধ্যেই রয়েছে। নির্বাচিত হবার ক্ষেত্রে এগুলো কাজে লাগবেনা।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান ভোটার কতো ও রাজনীতিতে তাদের প্রভাব কতো জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রায় তিন মিলিয়ন মুসলমান রয়েছে। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে মুসলমানদের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু তারচেয়ে বড় বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ব্যবস্থা ও সাম্যের জন্যে এটা ক্ষতিকর।
ফলে বেন কারসনের বক্তব্য রিপাবলিকান পার্টির জন্যে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই তিনি মন্তব্য করেন।

সূত্রঃ বিবিসি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসলাম বিতর্ক

আপডেট টাইম : ১২:০১:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির একজন সম্ভাব্য প্রার্থী বেন কারসন বলেছেন, ইসলাম ধর্ম মার্কিন সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
আমেরিকার টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মি. কারসন বলেছেন, একজন মুসলিমকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি মানতে রাজি নন।
তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে দেশটির মুসলিম গ্রুপগুলো বলছে, এমন বক্তব্য দিয়ে মি. কারসন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন পাবার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
মাত্র আগের দিনই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে মুসলমান বলার প্রতিবাদ না করায়, রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প, তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখন প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন লাভের লড়াইয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। কেন এ প্রচারণায় ইসলাম বা মুসলমানদের নিয়ে এসব বক্তব্য আসছে?
বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াশিংটনে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের ইসলামোফোবিয়া বা ইসলাম ভীতি আছে। সেই ভীতিটা আসলে রক্ষণশীলদের তৈরি করা একটা ভীতি।
তিনি বলছেন রক্ষণশীলা ধর্মের ভিত্তিতেই বিভক্তি করার চেষ্টা করে।
তারা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান। এটা রিপাবলিকান দলের অত্যন্ত রক্ষণশীলদের একটি অংশ চাচ্ছেন এটাকে ব্যবহার করে রিপাবলিকান দলের মধ্যে তাদের সমর্থন তৈরি করতে। এই দলটির বাইরে এর কোন আবেদন আছে বলে মনে হয়না।
বেন কারসন বলেছেন ইসলামি মূল্যবোধ মার্কিন সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।কি আছে সেদেশের সংবিধানে ?
এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রিয়াজ বলেন, “আর্টিক্যাল ৬-এ বলা হয়েছে ধর্ম কোন ধরনের সরকারি রাষ্ট্রীয় বা জনস্বার্থ পদে অধিষ্ঠিত হবার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারেনা। ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সংবিধানের বিরোধ কোথায় সেটা বেন কারসন বলেননি। এটা আসলে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা। ইসলাম বিরোধিতাকে জাগিয়ে তোলা বা ব্যবহারের জন্যেই এসব বলা হচ্ছে”।
কিন্তু ইসলাম বিরোধিতায় কি ভোট আসবে ?
এ প্রশ্নের জবাবে মি. রিয়াজ বলেন রক্ষণশীলদের মধ্যে পারবে। এখন প্রাথমিক পর্যায়ের নির্বাচন কিন্তু যিনি প্রার্থী হবেন তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ বিতর্কটা আসলে রিপাবলিকানদের মধ্যেই রয়েছে। নির্বাচিত হবার ক্ষেত্রে এগুলো কাজে লাগবেনা।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান ভোটার কতো ও রাজনীতিতে তাদের প্রভাব কতো জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রায় তিন মিলিয়ন মুসলমান রয়েছে। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে মুসলমানদের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু তারচেয়ে বড় বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ব্যবস্থা ও সাম্যের জন্যে এটা ক্ষতিকর।
ফলে বেন কারসনের বক্তব্য রিপাবলিকান পার্টির জন্যে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই তিনি মন্তব্য করেন।

সূত্রঃ বিবিসি