ঢাকা ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান এরা মাঝে মধ্যে স্কুলে যায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুন ২০১৮
  • ৪৮৫ বার

হাওর বাত্রা ডেস্কঃ ময়না, পায়েল আর আকিদ। একই গ্রামের বাসিন্দা। তিনজনের সবাই স্কুলে পড়ে। তবে নিয়মিত নয়। পারিবারিক কাজের ফাঁকে যদি সময় হয়, তাহলেই তারা স্কুলে যায়। তাদের পরিবার থেকেও পড়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয় না। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হিলালপুর গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান এরা। বিকেলে মাছ শিকারের জাল নিয়ে হাওরে যাচ্ছিল ওই তিন শিশু।

এ সময় সাংবাদিদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তারা জানায়, ভাই আমরা হকলেই পড়তে চাই। তবে নিয়মিত ইস্কুলে যাইতে পারি না। পরিবারের সব কাম কইরা স্কুলে যাইবার সময় পাই না। সময় পাইলে মাইজে মাইজে (মাঝে মাঝে) ইস্কুলে যাই।

Image result for শুশিদের জাল দিয়ে মাছ ছবি

তিনজনের মধ্যে সবার বড় আকিদ। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আকিদ জানায়, সে শুধু পরীক্ষায় অংশ নেয় নিয়মিত। তবে প্রতিদিন তার স্কুলে যাওয়া হয় না। কারণ মাঠে গরু চড়ানোসহ সংসারের বড়দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাঠে কাজ করতে হয়। যেদিন কাজের চাপ কম থাকে সেদিনই সে স্কুলে যায়।

এছাড়া ময়না আর পায়েল ২য় ও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদেরও আকিদের মতো অবস্থা। পরিবার থেকেও স্কুলে যাওয়ার জন্য তাদের বলা হয় না। তবে তারা পড়াশোনা করে বড় চাকরি করতে চায়।

সরেজমিনে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, শতশত শিশুর শিক্ষাবঞ্চিত হওয়ার চিত্র। এর মধ্যে অনেক শিশু জীবনে একদিনও স্কুলের বারান্দায় যাওয়ার সুযোগ পায়নি। আবার কিছু শিশু শুরুতে স্কুলে গেলেও ১ম, ২য় এবং ৩য় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেমে যায় শিক্ষা জীবন। হাওরাঞ্চলের এই শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের প্রতি নজর দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল।

ওই এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, কৃষিকাজ করার স্বার্থে সবাইকে গরু পালতে হয়। আর সেই গরু চড়ানোর কাজেই তাদের শিশু সন্তানদের নিয়োজিত করতে হয় বাধ্য হন তারা। কারণ প্রাপ্তবয়স্ক একজন রাখাল রাখলে অনেক টাকা দিতে এতে তাদের পোষায় না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান এরা মাঝে মধ্যে স্কুলে যায়

আপডেট টাইম : ০৩:২১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুন ২০১৮

হাওর বাত্রা ডেস্কঃ ময়না, পায়েল আর আকিদ। একই গ্রামের বাসিন্দা। তিনজনের সবাই স্কুলে পড়ে। তবে নিয়মিত নয়। পারিবারিক কাজের ফাঁকে যদি সময় হয়, তাহলেই তারা স্কুলে যায়। তাদের পরিবার থেকেও পড়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয় না। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হিলালপুর গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান এরা। বিকেলে মাছ শিকারের জাল নিয়ে হাওরে যাচ্ছিল ওই তিন শিশু।

এ সময় সাংবাদিদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তারা জানায়, ভাই আমরা হকলেই পড়তে চাই। তবে নিয়মিত ইস্কুলে যাইতে পারি না। পরিবারের সব কাম কইরা স্কুলে যাইবার সময় পাই না। সময় পাইলে মাইজে মাইজে (মাঝে মাঝে) ইস্কুলে যাই।

Image result for শুশিদের জাল দিয়ে মাছ ছবি

তিনজনের মধ্যে সবার বড় আকিদ। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আকিদ জানায়, সে শুধু পরীক্ষায় অংশ নেয় নিয়মিত। তবে প্রতিদিন তার স্কুলে যাওয়া হয় না। কারণ মাঠে গরু চড়ানোসহ সংসারের বড়দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাঠে কাজ করতে হয়। যেদিন কাজের চাপ কম থাকে সেদিনই সে স্কুলে যায়।

এছাড়া ময়না আর পায়েল ২য় ও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদেরও আকিদের মতো অবস্থা। পরিবার থেকেও স্কুলে যাওয়ার জন্য তাদের বলা হয় না। তবে তারা পড়াশোনা করে বড় চাকরি করতে চায়।

সরেজমিনে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, শতশত শিশুর শিক্ষাবঞ্চিত হওয়ার চিত্র। এর মধ্যে অনেক শিশু জীবনে একদিনও স্কুলের বারান্দায় যাওয়ার সুযোগ পায়নি। আবার কিছু শিশু শুরুতে স্কুলে গেলেও ১ম, ২য় এবং ৩য় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেমে যায় শিক্ষা জীবন। হাওরাঞ্চলের এই শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের প্রতি নজর দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল।

ওই এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, কৃষিকাজ করার স্বার্থে সবাইকে গরু পালতে হয়। আর সেই গরু চড়ানোর কাজেই তাদের শিশু সন্তানদের নিয়োজিত করতে হয় বাধ্য হন তারা। কারণ প্রাপ্তবয়স্ক একজন রাখাল রাখলে অনেক টাকা দিতে এতে তাদের পোষায় না।