ঢাকা ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশি ঋণের ভেতরের কথা সাধারণ মানুষ জানে না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৬:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩০২ বার

বিদেশি ঋণের ভেতরের খবর দেশের সাধারণ মানুষ জানে না বলেছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আমাদের দেশের জন্য কম সুদে বিদেশি ঋণ ভাল। কিন্তু এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের শর্ত থাকে। এর একটা বড় অংশ কনসালটেন্সির কাজে চলে যায়। আবার জিনিসপত্র কিনতেও তাদের উপদেশ মানতে হয়। মানুষ শুধু দেখে এত টাকা, আসল কাজের কোন অগ্রগতি নাই। ভেতরের খবর কেউ জানে না, রাখে না। আমাদের কোনটা প্রয়োজন তা আমাদের ঠিক করার কথা। কিন্তু আসলেই আমরা তা করতে পারিনা।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও কার্জন হল পরিবেশ ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘ভূমিকম্প ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা’ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। চার পর্বের এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ডিন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, বিসিএসআইআর-এর সাবেক পরিচালক ড. কাজী নাছরিন ফারুক, এইচবিআরআই-এর পরিচালক মুহা: আবু সাদেক, সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস পরিচালক ব্রিগে. জেনা. আলী আহমেদ খান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মাহবুব জাহান খান প্রমুখ।
এম এ মান্নান বলেন, বিদেশি ঋণ সম্পর্কে আমাদের দেশে একটা ধারণা হয়ে গেছে যে এগুলো মনে হয় এমনিতেই দিয়ে দেয়। মিডিয়াতে বলা হয় বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আমাদের সঙ্গে এত এত কোটি টাকার প্রকল্প সই করেছে। আসলে মোট কথা হল একটাও কিন্তু খয়রাত নয়। আমাদের যে সুদে ঋণ দেয়া হয় মনে হয় কত কম। কিন্তু যাদের কাছ থেকে আসছে সে তুলনায় তা কম নয়। ঋণদাতা দেশগুলোর অর্থনীতি সারাবিশ্বকে শোষণ করে ফুলেফেঁপে উঠেছে। সেখানে ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ তো দূরের কথা উল্টো মূলধন থেকে কেটে রাখা হয়।
মন্ত্রী বলেন, দাতা দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ হলে খুশিতে লাফ দিয়ে ওঠে। অথচ আমরা ৬-৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। তাদের দেশে আর বিনিয়োগের জায়গা নেই। তাই তারা টাকা নিয়ে আমাদের দেশে উড়ে আসে। আমাদের এখানে তারা ২/৩ শতাংশ লাভ পেলেই তাদের অনেক লাভ হয়।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর, গভীর সমুদ্রবন্দর, সারা দেশে বিদ্যুতায়ন, পদ্মা সেতু, রেলওয়ে প্রজেক্টের জন্য তাদের কাছে ঋণ পাওয়া যায় না। বলা হয় তোমরা যথেষ্ঠ সক্ষম। তারা বলে গ্রামীণ শিক্ষা ক্ষেত্র, সমাজকে সচেতন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবেশকে সুন্দর রাখার জন্য ঋণ গ্রহণ করো। যে পরিবেশকে ব্যবহার করে তারা বিশ্বের শীর্ষে আরোহণ করল, সেই পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব এখন আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। গত চারশ বছর এই পরিবেশ খেয়ে কারা বড় হয়েছে? যারা একটা পাখি মারার জন্য দশটা-বিশটা জাহাজ নিয়ে অভিযানে যায় তারাই বলে পরিবেশ রক্ষা কর। হাজার হাজার মানুষ মারতে যাদের চোখের পাতাও নড়ে না, তারা আবার মানবাধিকারের কথা বলে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সভায় উপস্থাপিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষের জীবনের প্রথম কাজই তো বোধ হয় বিকল্প খোঁজা। আর এই বিকল্প আসবে আমাদের দেশের গবেষকদের কাছ থেকে। বিকল্প খুঁজলেই অনেক কিছুর সমাধান আসবে, যেখানে কম খরচ বেশি লাভ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বিদেশি ঋণের ভেতরের কথা সাধারণ মানুষ জানে না

আপডেট টাইম : ১১:২৬:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিদেশি ঋণের ভেতরের খবর দেশের সাধারণ মানুষ জানে না বলেছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আমাদের দেশের জন্য কম সুদে বিদেশি ঋণ ভাল। কিন্তু এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের শর্ত থাকে। এর একটা বড় অংশ কনসালটেন্সির কাজে চলে যায়। আবার জিনিসপত্র কিনতেও তাদের উপদেশ মানতে হয়। মানুষ শুধু দেখে এত টাকা, আসল কাজের কোন অগ্রগতি নাই। ভেতরের খবর কেউ জানে না, রাখে না। আমাদের কোনটা প্রয়োজন তা আমাদের ঠিক করার কথা। কিন্তু আসলেই আমরা তা করতে পারিনা।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও কার্জন হল পরিবেশ ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘ভূমিকম্প ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা’ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। চার পর্বের এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ডিন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, বিসিএসআইআর-এর সাবেক পরিচালক ড. কাজী নাছরিন ফারুক, এইচবিআরআই-এর পরিচালক মুহা: আবু সাদেক, সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস পরিচালক ব্রিগে. জেনা. আলী আহমেদ খান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মাহবুব জাহান খান প্রমুখ।
এম এ মান্নান বলেন, বিদেশি ঋণ সম্পর্কে আমাদের দেশে একটা ধারণা হয়ে গেছে যে এগুলো মনে হয় এমনিতেই দিয়ে দেয়। মিডিয়াতে বলা হয় বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আমাদের সঙ্গে এত এত কোটি টাকার প্রকল্প সই করেছে। আসলে মোট কথা হল একটাও কিন্তু খয়রাত নয়। আমাদের যে সুদে ঋণ দেয়া হয় মনে হয় কত কম। কিন্তু যাদের কাছ থেকে আসছে সে তুলনায় তা কম নয়। ঋণদাতা দেশগুলোর অর্থনীতি সারাবিশ্বকে শোষণ করে ফুলেফেঁপে উঠেছে। সেখানে ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ তো দূরের কথা উল্টো মূলধন থেকে কেটে রাখা হয়।
মন্ত্রী বলেন, দাতা দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ হলে খুশিতে লাফ দিয়ে ওঠে। অথচ আমরা ৬-৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। তাদের দেশে আর বিনিয়োগের জায়গা নেই। তাই তারা টাকা নিয়ে আমাদের দেশে উড়ে আসে। আমাদের এখানে তারা ২/৩ শতাংশ লাভ পেলেই তাদের অনেক লাভ হয়।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর, গভীর সমুদ্রবন্দর, সারা দেশে বিদ্যুতায়ন, পদ্মা সেতু, রেলওয়ে প্রজেক্টের জন্য তাদের কাছে ঋণ পাওয়া যায় না। বলা হয় তোমরা যথেষ্ঠ সক্ষম। তারা বলে গ্রামীণ শিক্ষা ক্ষেত্র, সমাজকে সচেতন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবেশকে সুন্দর রাখার জন্য ঋণ গ্রহণ করো। যে পরিবেশকে ব্যবহার করে তারা বিশ্বের শীর্ষে আরোহণ করল, সেই পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব এখন আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। গত চারশ বছর এই পরিবেশ খেয়ে কারা বড় হয়েছে? যারা একটা পাখি মারার জন্য দশটা-বিশটা জাহাজ নিয়ে অভিযানে যায় তারাই বলে পরিবেশ রক্ষা কর। হাজার হাজার মানুষ মারতে যাদের চোখের পাতাও নড়ে না, তারা আবার মানবাধিকারের কথা বলে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সভায় উপস্থাপিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষের জীবনের প্রথম কাজই তো বোধ হয় বিকল্প খোঁজা। আর এই বিকল্প আসবে আমাদের দেশের গবেষকদের কাছ থেকে। বিকল্প খুঁজলেই অনেক কিছুর সমাধান আসবে, যেখানে কম খরচ বেশি লাভ।