ঢাকা ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে রোজা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ মে ২০১৮
  • ৩৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘তারাবি নামাজ পড়িতে যাইব মোল্লাবাড়িতে আজ, মেনাজদ্দীন কলিমদ্দীন আয় তোরা করি সাজ’ পল্লীকবি জসীমউদ্দিন এ বিখ্যাত কবিতাটিতে এটিই ফুটে উঠেছে যে তারাবি ও রমজান আমাদের দেশের মানুষের শত শত বছরের সংস্কৃতি। সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উপাদান হলো ধর্ম। কোনো দেশের মানুষের রীতিনীতি, জীবনাচারকে এক কথায় সে দেশের সংস্কৃতি বলে। প্রতিটি দেশের সংস্কৃতিতে ধর্মের প্রভাবই বেশি কাজ করে। বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান হওয়ায় বাংলাদেশের সংস্কৃতিতেও ইসলামের রয়েছে ব্যাপক প্রভাব। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে রোজাকে যেভাবে দেখা যায় :

রোজার পূর্বপ্রস্তুতি
রমজান মাস আসার আগেই বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে শুরু হয় প্রস্তুতি। রোজা রাখতে অধিকাংশ মানুষই দৈহিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এমনকি ছোট ছোট বাচ্চা পর্যন্ত রোজা রাখার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নামে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সংসারের ভারী কাজগুলো আগেই সেরে নেন বাড়ির কর্তা-মহিলারা মিলে।

মসজিদে মসজিদে রমজানবিষয়ক বয়ান
রমজান মাস আসার নিকটবর্তী জুমা থেকেই খুতবাগুলোয় মসজিদে মসজিদে রমজানের গুরুত্ব, ফজিলত ও করণীয়-বর্জনীয় নিয়ে চলে বিশেষ বয়ান বা আলোচনা। এতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা রোজা সম্পর্কে বিস্তারিতে জানতে পারেন এবং বাড়ির মহিলাদের জানিয়ে উপকৃত করতে পারেন।

রমজান মাসকে স্বাগত জানানো
বাংলাদেশের মুসলমানরা বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় আনন্দঘন পরিবেশে রমজানকে বরণ করে নেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন, ইসলামি সংগঠনগুলো রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় বিভিন্ন সোগান নিয়ে র‌্যালি, প্রচারপত্র বিতরণ ও পোস্টারিং করে থাকে। রমজান শুরু হওয়ার আগেই ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রধান প্রধান মসজিদে সাহরি ও ইফতারের সময়সূচিসংবলিত সুন্দর সুন্দর ক্যালেন্ডার সরবরাহ করা হয়। মুসল্লিরাও সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বাড়িতে নিয়ে তা টানিয়ে দেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ২৯ শাবান রমজানের চাঁদ দেখার জন্য বৈঠক হয়। চাঁদ দেখা গেলেই তা দ্রুত প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো চাঁদ দেখার খবর প্রচার করে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে।

তারাবি ও ওয়াক্তিয়া নামাজে মুসল্লিদের আধিক্য
রমজানের চাঁদ উঠতেই পাড়ামহল্লা এবং শহরে নেমে আসে রমজানের পবিত্র আমেজ। জায়নামাজ হাতে মুসলমানরা মসজিদে ছুটে চলেন তারাবি নামাজ আদায়ের জন্য। মসজিদগুলোয় নেমে আসে মুসল্লিদের ঢল। ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই তারাবি নামাজে দাঁড়িয়ে যায় এককাতারে। বাবার সঙ্গে শিশুদের মসজিদে যাওয়াও বাংলার এক অনন্য সংস্কৃতি। তারাবি শেষ হলে মানুষের দল বেঁধে বাসায় ফেরা ঈদের দিনের মতো রাস্তাঘাট শুধু টুপি, পাঞ্জাবিতে এক আলাদা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের পরিবেশ ফুটে ওঠে। বাসায় বাসায় মহিলারা ছোট শিশুদের নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান।

গ্রামে-গঞ্জে সাহরির জন্য মানুষকে জাগানো
রাতের শেষ প্রহরে মসজিদের মাইকে বিংবা অন্য কোনো ব্যবস্থায় সাহরি খাওয়ার জন্য জাগিয়ে তোলা বাঙালির শত বছরের এক অনন্য সংস্কৃতি। কিছুক্ষণ পর পর সাহরির সময় আর কত মিনিট আছে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। দরদভরা কণ্ঠে হামদ-নাত পরিবেশন করা হয়। অনেক এলাকায় সাহরি ও ইফতারের সময় জানিয়ে মাইকে সাইরেনও বাজানো হয়।

রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা
মসজিদ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রোজার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। আয়োজন করা হয় তাফসির মাহফিলের। প্রতিদিনের তারাবিতে পাঠ্য আয়াতগুলোর শিক্ষাও তুলে ধরা হয় মুসল্লিদের সামনে। মানুষও আগ্রহে তা শ্রবণ করে।

সমাজে সম্প্রীতি বৃদ্ধি
রোজার মাসে আমাদের দৈনন্দিন জীবানাচারে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। অফিস আদালত বা পরিবার পাড়ায় সব জায়গায়ই মানুষ একটু বেশি বিনয়ী হয়ে ওঠে। পুণ্যের আশায় হোক বা দুর্বল দেহের কারণে হোক, সামাজিক আচরণে বেশ ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। তাছাড়া অফিস-আদালতে বা আড্ডায় মিথ্যা, চাটুকারিতা বা চোগলখুরিতা কমে আসে রোজার মাসের আদব অনুসরণের কারণে। এছাড়া ইফতার-মাগরিব-এশা-তারাবির টাইট শিডিউলে বাজে আড্ডারও তেমন ফুরসত থাকে না। সমাজও এর একটা ইতিবাচক ফল পায়।

নানা পদের ইফতারি বিক্রির পসরা
আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশের বাজারে বাজারে, শহর-গ্রামে ইফতারের পূর্বে নানা পদে ইফতারসামগ্রী সাজিয়ে হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসে ইফতারের অস্থায়ী দোকান। রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার বা বেইলী রোডে ইফতারির দোকান চোখে পড়ে ব্যাপকভাবে। ইফতারের সময় সব হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও দিনের বেলায় হোটেলগুলোর সামনে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। সাধারণ অমুসলিম ও অসামর্থ্যবান মানুষ ছাড়া কেউই হোটেলে প্রবেশ করেন না। শুধু সাহরি ও ইফতারের আয়োজনে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় অধিকাংশ হোটেল। বেশিরভাগ মুসলিম হোটেল দিনের বেলা খাবার বিক্রি বন্ধ রাখে। ব্যক্তি, সামাজিক কিংবা প্রতিষ্ঠানিক উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ইফতার মাহফিলের।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার রমজান কেন্দ্রিক নানা আয়োজন
রোজার মাসে পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলো আয়োজন করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। দেশের শীর্ষ পত্রিকাগুলোয় মাসব্যাপী বড় বড় ইসলামিক স্কলাররা প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও কলাম লেখেন। টিভি চ্যানেলগুলোর ইসলামিক আলোচনা অনুষ্ঠান, মাসব্যাপী শিশুদের কোরআন তেলওয়াত কিংবা ইসলামি গান ও জ্ঞানের প্রতিযোগিতার প্রোগ্রামগুলোও এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে বাঙালি সংস্কৃতিতে। এক কথায় আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির এক অনবদ্য অংশ হলো রোজা ও রমজান। পাপাচার ছেড়ে দেওয়ার যে মহান শিক্ষা রোজা আমাদের দিয়ে যায়, তা সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে সারা বছর তা মানতে একে অন্যকে উদ্বুদ্ধ করলে অনেকাংশে কমে যাবে অন্যায়। আমাদের সংস্কৃতিতে শুদ্ধতার পরশ দিয়ে যাবে রমজান ও রোজা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে রোজা

আপডেট টাইম : ০৩:০৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘তারাবি নামাজ পড়িতে যাইব মোল্লাবাড়িতে আজ, মেনাজদ্দীন কলিমদ্দীন আয় তোরা করি সাজ’ পল্লীকবি জসীমউদ্দিন এ বিখ্যাত কবিতাটিতে এটিই ফুটে উঠেছে যে তারাবি ও রমজান আমাদের দেশের মানুষের শত শত বছরের সংস্কৃতি। সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উপাদান হলো ধর্ম। কোনো দেশের মানুষের রীতিনীতি, জীবনাচারকে এক কথায় সে দেশের সংস্কৃতি বলে। প্রতিটি দেশের সংস্কৃতিতে ধর্মের প্রভাবই বেশি কাজ করে। বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান হওয়ায় বাংলাদেশের সংস্কৃতিতেও ইসলামের রয়েছে ব্যাপক প্রভাব। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে রোজাকে যেভাবে দেখা যায় :

রোজার পূর্বপ্রস্তুতি
রমজান মাস আসার আগেই বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে শুরু হয় প্রস্তুতি। রোজা রাখতে অধিকাংশ মানুষই দৈহিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এমনকি ছোট ছোট বাচ্চা পর্যন্ত রোজা রাখার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নামে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সংসারের ভারী কাজগুলো আগেই সেরে নেন বাড়ির কর্তা-মহিলারা মিলে।

মসজিদে মসজিদে রমজানবিষয়ক বয়ান
রমজান মাস আসার নিকটবর্তী জুমা থেকেই খুতবাগুলোয় মসজিদে মসজিদে রমজানের গুরুত্ব, ফজিলত ও করণীয়-বর্জনীয় নিয়ে চলে বিশেষ বয়ান বা আলোচনা। এতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা রোজা সম্পর্কে বিস্তারিতে জানতে পারেন এবং বাড়ির মহিলাদের জানিয়ে উপকৃত করতে পারেন।

রমজান মাসকে স্বাগত জানানো
বাংলাদেশের মুসলমানরা বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় আনন্দঘন পরিবেশে রমজানকে বরণ করে নেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন, ইসলামি সংগঠনগুলো রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় বিভিন্ন সোগান নিয়ে র‌্যালি, প্রচারপত্র বিতরণ ও পোস্টারিং করে থাকে। রমজান শুরু হওয়ার আগেই ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রধান প্রধান মসজিদে সাহরি ও ইফতারের সময়সূচিসংবলিত সুন্দর সুন্দর ক্যালেন্ডার সরবরাহ করা হয়। মুসল্লিরাও সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বাড়িতে নিয়ে তা টানিয়ে দেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ২৯ শাবান রমজানের চাঁদ দেখার জন্য বৈঠক হয়। চাঁদ দেখা গেলেই তা দ্রুত প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো চাঁদ দেখার খবর প্রচার করে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে।

তারাবি ও ওয়াক্তিয়া নামাজে মুসল্লিদের আধিক্য
রমজানের চাঁদ উঠতেই পাড়ামহল্লা এবং শহরে নেমে আসে রমজানের পবিত্র আমেজ। জায়নামাজ হাতে মুসলমানরা মসজিদে ছুটে চলেন তারাবি নামাজ আদায়ের জন্য। মসজিদগুলোয় নেমে আসে মুসল্লিদের ঢল। ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই তারাবি নামাজে দাঁড়িয়ে যায় এককাতারে। বাবার সঙ্গে শিশুদের মসজিদে যাওয়াও বাংলার এক অনন্য সংস্কৃতি। তারাবি শেষ হলে মানুষের দল বেঁধে বাসায় ফেরা ঈদের দিনের মতো রাস্তাঘাট শুধু টুপি, পাঞ্জাবিতে এক আলাদা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের পরিবেশ ফুটে ওঠে। বাসায় বাসায় মহিলারা ছোট শিশুদের নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান।

গ্রামে-গঞ্জে সাহরির জন্য মানুষকে জাগানো
রাতের শেষ প্রহরে মসজিদের মাইকে বিংবা অন্য কোনো ব্যবস্থায় সাহরি খাওয়ার জন্য জাগিয়ে তোলা বাঙালির শত বছরের এক অনন্য সংস্কৃতি। কিছুক্ষণ পর পর সাহরির সময় আর কত মিনিট আছে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। দরদভরা কণ্ঠে হামদ-নাত পরিবেশন করা হয়। অনেক এলাকায় সাহরি ও ইফতারের সময় জানিয়ে মাইকে সাইরেনও বাজানো হয়।

রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা
মসজিদ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রোজার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। আয়োজন করা হয় তাফসির মাহফিলের। প্রতিদিনের তারাবিতে পাঠ্য আয়াতগুলোর শিক্ষাও তুলে ধরা হয় মুসল্লিদের সামনে। মানুষও আগ্রহে তা শ্রবণ করে।

সমাজে সম্প্রীতি বৃদ্ধি
রোজার মাসে আমাদের দৈনন্দিন জীবানাচারে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। অফিস আদালত বা পরিবার পাড়ায় সব জায়গায়ই মানুষ একটু বেশি বিনয়ী হয়ে ওঠে। পুণ্যের আশায় হোক বা দুর্বল দেহের কারণে হোক, সামাজিক আচরণে বেশ ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। তাছাড়া অফিস-আদালতে বা আড্ডায় মিথ্যা, চাটুকারিতা বা চোগলখুরিতা কমে আসে রোজার মাসের আদব অনুসরণের কারণে। এছাড়া ইফতার-মাগরিব-এশা-তারাবির টাইট শিডিউলে বাজে আড্ডারও তেমন ফুরসত থাকে না। সমাজও এর একটা ইতিবাচক ফল পায়।

নানা পদের ইফতারি বিক্রির পসরা
আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশের বাজারে বাজারে, শহর-গ্রামে ইফতারের পূর্বে নানা পদে ইফতারসামগ্রী সাজিয়ে হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসে ইফতারের অস্থায়ী দোকান। রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার বা বেইলী রোডে ইফতারির দোকান চোখে পড়ে ব্যাপকভাবে। ইফতারের সময় সব হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও দিনের বেলায় হোটেলগুলোর সামনে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। সাধারণ অমুসলিম ও অসামর্থ্যবান মানুষ ছাড়া কেউই হোটেলে প্রবেশ করেন না। শুধু সাহরি ও ইফতারের আয়োজনে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় অধিকাংশ হোটেল। বেশিরভাগ মুসলিম হোটেল দিনের বেলা খাবার বিক্রি বন্ধ রাখে। ব্যক্তি, সামাজিক কিংবা প্রতিষ্ঠানিক উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ইফতার মাহফিলের।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার রমজান কেন্দ্রিক নানা আয়োজন
রোজার মাসে পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলো আয়োজন করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। দেশের শীর্ষ পত্রিকাগুলোয় মাসব্যাপী বড় বড় ইসলামিক স্কলাররা প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও কলাম লেখেন। টিভি চ্যানেলগুলোর ইসলামিক আলোচনা অনুষ্ঠান, মাসব্যাপী শিশুদের কোরআন তেলওয়াত কিংবা ইসলামি গান ও জ্ঞানের প্রতিযোগিতার প্রোগ্রামগুলোও এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে বাঙালি সংস্কৃতিতে। এক কথায় আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির এক অনবদ্য অংশ হলো রোজা ও রমজান। পাপাচার ছেড়ে দেওয়ার যে মহান শিক্ষা রোজা আমাদের দিয়ে যায়, তা সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে সারা বছর তা মানতে একে অন্যকে উদ্বুদ্ধ করলে অনেকাংশে কমে যাবে অন্যায়। আমাদের সংস্কৃতিতে শুদ্ধতার পরশ দিয়ে যাবে রমজান ও রোজা।