হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভরা বর্ষার আগে তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষের পণ্য পরিবহনে মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ির কোনো বিকল্প নেই। হাঁটু পানিতেও কদর থাকে এ গাড়ির। কিন্তু বর্ষায় ভরা যৌবনে ধরলা ও তিস্তার বুকে চলে বৈঠা বা ইঞ্জিন চালিত নৌকা। লালমনিরহাটের তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজানের বুকে জেগে ওঠা ধু ধু বালুচরে স্বপ্ন বোনে চরাঞ্চলের চাষিরা। কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন করা ফসল বাজারজাত কিংবা সংরক্ষণ করতে নিতে হয় মূল ভূখণ্ডে। শুষ্ক মৌসুমে বালু বা হাঁটু পানির পথে এসব পণ্য পরিবহনে করতে হয় ঘোড়া আর মহিষের গাড়িতেই। তাই শুষ্ক মৌসুমে ঘোড়া ও মহিষের গাড়ি আর বর্ষায় নৌকার কদর বাড়ে চরাঞ্চলে।
চরাঞ্চলের এসব গ্রামে অনেকেই ঘোড়া ও মহিষের গাড়ি চালিয়ে আয় করছেন। স্বচ্ছলতা এনেছেন সংসারে। গাড়ি চালানোর কারণে তাদের নামেরও পরিবর্তন হয়েছে। ঘোড়া গাড়ি চালক কালামের নাম হয়েছে ঘোড়া কালাম। মহিষের গাড়ি চালক আজিত মিয়ার নাম হয়েছে মৈশাল আজিত।
আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ বালাপাড়ার তিস্তা চরাঞ্চলের ঘোড়া গাড়ি চালক কালাম মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। শুষ্ক মৌসুমে কদর বেড়ে যাওয়ায় আয় বাড়ে। বর্ষাকালে মূল ভূখণ্ডে পণ্য পরিবহন করে আয় করেন তিনি। বর্তমানে ধান মাড়াই মৌসুম চলছে তাই ঘোড়া ও মহিষের গাড়ির কদর বেশি। দৈনিক আটশ’ থেকে হাজার টাকার ওপরে আয় হয়। ঘোড়ার খাবারের ব্যয় দুই/তিনশ’ টাকা। বাকি টাকায় চলে সংসার।
মহিষের গাড়ি চালক আজিত মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে উৎপাদিত সব ফসল পরিবহনে মহিষের গাড়িই বড় ভরসা। দুই মহিষের খাবার খরচ বাদে দৈনিক হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন তিনি। বর্ষা মৌসুমে গাড়ি তেমন একটা চলে না। তাই গাড়ি রেখে মহিষ দু’টি বিক্রি করে দেন। আবার শুষ্ক মৌসুমে কিনে নিয়ে শুরু করেন গাড়ি চালানো।