ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিজিটালে গতি এসেছে বিচার বিভাগে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০১:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩২৬ বার

ডিজিটাল সেবা চালুর পর বিচার বিভাগে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হচ্ছে। বিচারব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে ইতোমধ্যে চালু করা বিভিন্ন সেবার কারণে এই অগ্রগতি এসেছে। খবর বাসসের।

ইতিমধ্যে দেড় শতাধিক বিচারককে স্মার্ট ট্যাব প্রদান করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে সার্ভারসহ ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জামিন জালিয়াতি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, জেলা পর্যায়সহ অধস্তন ২০০ কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রযুক্তি সেবা চালু হয়েছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার সময় তথ্যাবলী সংরক্ষণে তথ্যপ্রযুক্তি চালু হয়েছে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্যও এই সেবা দেয়া হচ্ছে।

সুপ্রিম কোটের সিস্টেম এনালিস্ট কর্মকর্তা, ওয়েবসাইট ও আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে ২০০৯ সাল থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দায়িত্ব নেয়ার পর বিচার বিভাগের ডিজিটাল সেবায় আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি বেশকিছু কার্যক্রম উদ্বোধনও করেন। তিনি বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সার্কুলার জারি করেও সেবাকাজ চারুল করেন। ফলে ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম বাস্তবায়নে গতি এসেছে। ইতোমধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক বিচারককে স্মার্ট ট্যাব প্রদান এবং ঢাকা কোর্টের জন্য নতুন মোবাইল অ্যাপস ও চট্টগ্রাম কোর্টে ডিজিটাল সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে।

অনদিকে জামিন জালিয়াতি রোধেও নতুন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জালিয়াতি রোধে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের সাব ডোমেইন করে একটি সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এতে আদালতের আদেশের সব তথ্য থাকবে। দেশের কারাগারগুলো কোনো আসামিকে মুক্তি দেয়ার আগে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট আদেশের সব তথ্য দেখে ব্যবস্থা নেবে।

দেশের দুইশটি অধস্তন কোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের কার্যক্রম ও মামলা ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সেবা প্রদানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন সেবা ও কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের মধ্যেও ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ল্যাপটপ ও ট্যাব। এখন ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে অটোমেটিকভাবে সাক্ষ্য নেয়া হবে। বিচারকদের দেয়া হবে এমন যন্ত্র। দেশের প্রতিটি আদালতে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতে ইতোমধ্যে সংযোগ চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের আদালতসমূহে বছরের পর বছর অনিষ্পন্ন থাকা মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইতোমধ্যে সার্কুলার জারি করেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্টে সার্ভারসহ পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট স্থাপন করা হয়। বিচারব্যবস্থাকে আধুনীকায়ন এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা লাঘবে সহায়ক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত সমুহে মামলার তথ্যাদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রর্দশনের ব্যবস্থা করায় মামলা সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহ এখন অনেক সহজতর হয়েছে। ফলে সময় ও অর্থেরও অনেক সাশ্রয় হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।

সুপ্রিমকোর্টের ইতিহাস, বিভিন্ন তথ্য, সংবিধান, রুলস, কোর্ট ক্যালেন্ডার, বিভিন্ন আইন ও নজিরসহ সর্বোচ্চ আদালতে টেন্ডার, রিক্রুটমেন্ট, গেজেট, সার্কুলার, নোটিশ, রায় ও আদেশ ইত্যাদি বিষয় ওয়েবসাইটে সরবরাহ করা হচ্ছে। মামলার শুনানির তথ্য সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। সুপ্রিমকোর্টের বিচারিক বেঞ্চগুলোতে মামলার প্রতিদিনকার কার্যতালিকা এখন ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্টরা তা ঘরে বসে ওয়েবসাইট সার্চ করলেই তা আগাম জানতে পারে। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দৈনিক কার্যতালিকা, ক্রম অনুযায়ী মামলা শুনানির তথ্য সাথে সাথেই জানা যাচ্ছে। এতে বেঞ্চ সমূহের দৈনিক এবং প্রতি মূহূর্তের বিচারিক কার্যক্রমের সার সংক্ষেপ সরবরাহ করা হয়।

সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পরে হাইকোর্ট বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকারও হালনাগাদ করা হচ্ছে। আপিল বিভাগের মতো প্রতিনিয়ত হাইকোর্ট বিভাগের কার্যতালিকাও সচল হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিজিটালে গতি এসেছে বিচার বিভাগে

আপডেট টাইম : ১২:০১:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ডিজিটাল সেবা চালুর পর বিচার বিভাগে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হচ্ছে। বিচারব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে ইতোমধ্যে চালু করা বিভিন্ন সেবার কারণে এই অগ্রগতি এসেছে। খবর বাসসের।

ইতিমধ্যে দেড় শতাধিক বিচারককে স্মার্ট ট্যাব প্রদান করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে সার্ভারসহ ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জামিন জালিয়াতি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, জেলা পর্যায়সহ অধস্তন ২০০ কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রযুক্তি সেবা চালু হয়েছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার সময় তথ্যাবলী সংরক্ষণে তথ্যপ্রযুক্তি চালু হয়েছে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্যও এই সেবা দেয়া হচ্ছে।

সুপ্রিম কোটের সিস্টেম এনালিস্ট কর্মকর্তা, ওয়েবসাইট ও আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে ২০০৯ সাল থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দায়িত্ব নেয়ার পর বিচার বিভাগের ডিজিটাল সেবায় আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি বেশকিছু কার্যক্রম উদ্বোধনও করেন। তিনি বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সার্কুলার জারি করেও সেবাকাজ চারুল করেন। ফলে ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম বাস্তবায়নে গতি এসেছে। ইতোমধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক বিচারককে স্মার্ট ট্যাব প্রদান এবং ঢাকা কোর্টের জন্য নতুন মোবাইল অ্যাপস ও চট্টগ্রাম কোর্টে ডিজিটাল সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে।

অনদিকে জামিন জালিয়াতি রোধেও নতুন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জালিয়াতি রোধে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের সাব ডোমেইন করে একটি সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এতে আদালতের আদেশের সব তথ্য থাকবে। দেশের কারাগারগুলো কোনো আসামিকে মুক্তি দেয়ার আগে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট আদেশের সব তথ্য দেখে ব্যবস্থা নেবে।

দেশের দুইশটি অধস্তন কোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের কার্যক্রম ও মামলা ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সেবা প্রদানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন সেবা ও কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের মধ্যেও ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ল্যাপটপ ও ট্যাব। এখন ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে অটোমেটিকভাবে সাক্ষ্য নেয়া হবে। বিচারকদের দেয়া হবে এমন যন্ত্র। দেশের প্রতিটি আদালতে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতে ইতোমধ্যে সংযোগ চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের আদালতসমূহে বছরের পর বছর অনিষ্পন্ন থাকা মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইতোমধ্যে সার্কুলার জারি করেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্টে সার্ভারসহ পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট স্থাপন করা হয়। বিচারব্যবস্থাকে আধুনীকায়ন এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা লাঘবে সহায়ক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত সমুহে মামলার তথ্যাদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রর্দশনের ব্যবস্থা করায় মামলা সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহ এখন অনেক সহজতর হয়েছে। ফলে সময় ও অর্থেরও অনেক সাশ্রয় হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।

সুপ্রিমকোর্টের ইতিহাস, বিভিন্ন তথ্য, সংবিধান, রুলস, কোর্ট ক্যালেন্ডার, বিভিন্ন আইন ও নজিরসহ সর্বোচ্চ আদালতে টেন্ডার, রিক্রুটমেন্ট, গেজেট, সার্কুলার, নোটিশ, রায় ও আদেশ ইত্যাদি বিষয় ওয়েবসাইটে সরবরাহ করা হচ্ছে। মামলার শুনানির তথ্য সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। সুপ্রিমকোর্টের বিচারিক বেঞ্চগুলোতে মামলার প্রতিদিনকার কার্যতালিকা এখন ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্টরা তা ঘরে বসে ওয়েবসাইট সার্চ করলেই তা আগাম জানতে পারে। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দৈনিক কার্যতালিকা, ক্রম অনুযায়ী মামলা শুনানির তথ্য সাথে সাথেই জানা যাচ্ছে। এতে বেঞ্চ সমূহের দৈনিক এবং প্রতি মূহূর্তের বিচারিক কার্যক্রমের সার সংক্ষেপ সরবরাহ করা হয়।

সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পরে হাইকোর্ট বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকারও হালনাগাদ করা হচ্ছে। আপিল বিভাগের মতো প্রতিনিয়ত হাইকোর্ট বিভাগের কার্যতালিকাও সচল হবে।