ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ হাজার মানুষের ভোগান্তি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ মে ২০১৮
  • ৩২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবান্ধা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়ারজান এলাকা ও সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের আলাই নদীর উপর একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো মেরামতের অভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সাঁকোটি মেরামত না করায় বেশি এলাকা ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই সাঁকোস্থানে একটি সেঁতু নির্মাণের জন্য এলজিইডিসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলেও নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ।

সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আলাই নদীর উপর পাটাতনের কয়েকটি বাঁশ ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করতে পারে না। মানুষ ও সাইকেল-মোটরসাইকেল চলাচলের কারণে সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। সাঁকোর উপর উঠলেই সাঁকোটি দোলে ও বাঁধনগুলো ঢিলে হয়ে যাওয়ায় নিচের দিকে হেলে পড়ে। সেখানে আধা ঘন্টারও বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেছে, একজন মানুষও সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করেনি। সব মানুষ সাঁকোটির নিচে পানিতে ভিজে চলাচল করেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে বানিয়ারজান ও সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মানুষদের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করা হয়। এই সাঁকোটির পূর্বপাশে ছয়ঘড়িয়া, উত্তর ফলিয়া ও দক্ষিণ ফলিয়া গ্রামসহ আশেপাশের আরো কয়েকটি গ্রাম ও পশ্চিমপাশে পৌরএলাকার বানিয়ারজান, মুন্সিপাড়াসহ আরো কয়েকটি এলাকার ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করতো। পূর্বপাশের এলাকার মানুষদের খুব অল্প সহজেই জেলা শহরে প্রবেশের অন্যতম একটি মাধ্যম এই বাঁশের সাঁকোটি। সাঁকোটি নষ্ট হলে সেটি মেরামত করা হয়।

কিন্তু গত দুই বছরেও আর মেরামত না করায় বর্তমানে মানুষ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে এ পথে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যারা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করেন তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আর এখন বেশিরভাগ মানুষই যানবাহন নিয়ে অন্যপথে বেশি এলাকা ঘুরে চলাচল করেন। এতে করে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। এখানে একটি সেঁতু নির্মিত হলে বিভিন্ন প্রকার ইঞ্জিনচালিত যানবাহনসহ প্রতিদিন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ এই সেঁতুর উপর দিয়ে চলাচল করবে বলে জানান স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছয়ঘড়িয়া গ্রামের এক কলেজ ছাত্র (২২) বলেন, সাঁকোটি গাইবান্ধা পৌরসভা ও বোয়ালী ইউনিয়নের মধ্যে হওয়ায় কোন পক্ষই মেরামতে কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। এর আগে পৌর মেয়রের উদ্যোগে কয়েকবার মেরামত করা হলেও এবার আর কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে চলাচলে আমাদেরকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। গাইবান্ধা পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সেলিম বলেন, বর্তমানে সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে মানুষ সাঁকোটি দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। এই সাঁকোস্থানে একটি সেঁতু নির্মাণের জন্য সদর আসনের সাংসদসহ উপজেলা চেয়ারম্যান, গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন ও যোগাযোগ করেও কোন কাজ হয়নি। হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এখানে অতিদ্রুত একটি সেঁতু নির্মাণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

সাঁকোটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ কেউ চলাচল করে না বিষয়টি জানালে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, এর আগে পৌরসভার অর্থায়নে আমি বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করে দিয়েছিলাম। সাঁকো মেরামতের বিষয়টি দেখছি। এ প্রসঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, সাঁকোটি মেরামতের কথা উল্লেখ করে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি আবেদন দিলে বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করে দেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

১০ হাজার মানুষের ভোগান্তি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো

আপডেট টাইম : ০৩:২৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবান্ধা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়ারজান এলাকা ও সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের আলাই নদীর উপর একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো মেরামতের অভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সাঁকোটি মেরামত না করায় বেশি এলাকা ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই সাঁকোস্থানে একটি সেঁতু নির্মাণের জন্য এলজিইডিসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলেও নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ।

সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আলাই নদীর উপর পাটাতনের কয়েকটি বাঁশ ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করতে পারে না। মানুষ ও সাইকেল-মোটরসাইকেল চলাচলের কারণে সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। সাঁকোর উপর উঠলেই সাঁকোটি দোলে ও বাঁধনগুলো ঢিলে হয়ে যাওয়ায় নিচের দিকে হেলে পড়ে। সেখানে আধা ঘন্টারও বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেছে, একজন মানুষও সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করেনি। সব মানুষ সাঁকোটির নিচে পানিতে ভিজে চলাচল করেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে বানিয়ারজান ও সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মানুষদের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করা হয়। এই সাঁকোটির পূর্বপাশে ছয়ঘড়িয়া, উত্তর ফলিয়া ও দক্ষিণ ফলিয়া গ্রামসহ আশেপাশের আরো কয়েকটি গ্রাম ও পশ্চিমপাশে পৌরএলাকার বানিয়ারজান, মুন্সিপাড়াসহ আরো কয়েকটি এলাকার ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করতো। পূর্বপাশের এলাকার মানুষদের খুব অল্প সহজেই জেলা শহরে প্রবেশের অন্যতম একটি মাধ্যম এই বাঁশের সাঁকোটি। সাঁকোটি নষ্ট হলে সেটি মেরামত করা হয়।

কিন্তু গত দুই বছরেও আর মেরামত না করায় বর্তমানে মানুষ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে এ পথে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যারা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করেন তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আর এখন বেশিরভাগ মানুষই যানবাহন নিয়ে অন্যপথে বেশি এলাকা ঘুরে চলাচল করেন। এতে করে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। এখানে একটি সেঁতু নির্মিত হলে বিভিন্ন প্রকার ইঞ্জিনচালিত যানবাহনসহ প্রতিদিন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ এই সেঁতুর উপর দিয়ে চলাচল করবে বলে জানান স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছয়ঘড়িয়া গ্রামের এক কলেজ ছাত্র (২২) বলেন, সাঁকোটি গাইবান্ধা পৌরসভা ও বোয়ালী ইউনিয়নের মধ্যে হওয়ায় কোন পক্ষই মেরামতে কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। এর আগে পৌর মেয়রের উদ্যোগে কয়েকবার মেরামত করা হলেও এবার আর কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে চলাচলে আমাদেরকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। গাইবান্ধা পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সেলিম বলেন, বর্তমানে সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে মানুষ সাঁকোটি দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। এই সাঁকোস্থানে একটি সেঁতু নির্মাণের জন্য সদর আসনের সাংসদসহ উপজেলা চেয়ারম্যান, গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন ও যোগাযোগ করেও কোন কাজ হয়নি। হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এখানে অতিদ্রুত একটি সেঁতু নির্মাণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

সাঁকোটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ কেউ চলাচল করে না বিষয়টি জানালে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, এর আগে পৌরসভার অর্থায়নে আমি বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করে দিয়েছিলাম। সাঁকো মেরামতের বিষয়টি দেখছি। এ প্রসঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, সাঁকোটি মেরামতের কথা উল্লেখ করে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি আবেদন দিলে বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করে দেওয়া হবে।