ঢাকা ০৪:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয়টি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২২:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮
  • ৫৮৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাবনা সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন কামার ডাংগা-চরপাড়া সংলগ্ন ছোট নদীর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলে হাজার হাজার মানুষ। ৯ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এসব এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবী একটি ব্রিজি নির্মাণের। কামার ডাংগা, ঢালি পাড়া, মোল্লা পাড়া, চর পাড়া, দাস পাড়া,বের পাড়া, মুন্সী পাড়া, ফারাদপুর, শাখারী পাড়ার লোকেরা এই সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন।

নদীতে ব্রিজ না থাকায় গ্রামের জনগণ ১০০০ হাজার ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকো দিয়েই রাত-দিন যাওয়া-আসা করতে হয়। ছেলে-মেয়ে, কৃষক-কৃষাণী, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষকা, বাঁশের সাঁকোতে পার হচ্ছে হাজার-হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে কাটছে, এলাকার  ভুক্তভোগী জনগণের। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও রোগীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। বাঁশের সাঁকোতে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে কমল মতি ছোট বাচ্চারা, শিক্ষার্থীসহ খেটে খাওয়া মানুষদের। এ ব্রিজটি না হওয়ার কারনে ঔ এলাকার জনগণের চিকিৎসা, শিক্ষা, জমি চাষাবাদ করা সহ নানা কাজ কর্ম করা চরম অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে  দেখা যায়, সাদুল্লাপুর এই ছোট নদীর উপর দিয়ে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রী যারা দুবলিয়া কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয় ও শিশুরা দুবলিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেনে যাতায়াত করতে হয় এই সাঁকোর উপর দিয়ে । প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয় কোমলমতি শিশুদের।

৮টি প্রাইমারী স্কুল, ৫ টি কেজি স্কুল, ২ টি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি কলেজ পড়–য়া ছাত্ররা প্রতিদিন এই ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াত করে, পারাপার হওয়ার সময় অনেক শিশু সাঁকো থেকে পানিতে পরে হতাহতের খবর ও পাওয়া গেছে।

অপর দিকে এলাকার কৃষিক্ষেত খামারের ফসলসহ যাবতীয় মালামাল পারাপার করার সময় একমাত্র ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে যেতে হয়। যা একজন কৃষকের জন্য অনেক কষ্টের ব্যাপার। যার উপর দিয়ে একা একা পার হওয়া যায় না তার উপর দিয়ে বড় বড় ফসলি বোঝা বহন করে কৃষকেরা।

কামার ডাংগা গ্রামের মোজাহার আলী প্রামানিক সাংবাদিকদের জানান, এই সাঁকোর উপর দিয়ে একা একাই পার হওয়া যায় না তার উপর দিয়ে কৃষি ক্ষেত খামারের  উৎপদিত পণ্য নিয়ে কিভাবে পারাপার করি, আমাদের ক্ষেতের ফসলি বোঝা পারাপার করা যায় না। পারাপার হওয়ার সময় অনেকের হাত পা পর্যন্ত ভেঙ্গে গিয়েছে বলে জানান তিনি।

কাদের টাকা দিযে এই বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয় জানতে চাইলে চরপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল গফুর প্রামানিক সাংবাদিকদের জানান,স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এলাকার বাড়ি বাড়ি থেকে বাঁশ ঝাড় থেকে বাঁশ ও হাড়ি চাঁদা তুলে আমরা একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করে আসছি। যা এখন পর্যন্ত চলে আসছে ,যখন নষ্ট হয়ে যায় পুনরায় করার জন্য এই পন্থাই অবলম্বন করা হয় যা আমাদের জন্য অনেকটাই কষ্টের ব্যপার।

তিনি আরও জানান আমাদের এই দুর্ভোগ কেউ দেখে না। নির্বাচনের সময় আসলে বিভিন্ন প্রার্থীরা এসে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেয় ব্রিজ নির্মাণের। কিন্তু নির্বাচনের পর আর তাদের খোঁজ থাকে না, সাঁকো নির্মানের জন্য কিছু অর্থ চাইলেও তাদের থেকে পাওয়া যায় না।

এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি মানুষের দুর্ভোগ দুর করার স্বার্থে একটি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য তারা সরকারের প্রতি সৃদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মুন্সির সাথে যোগাযোগ তিনি জানান চেয়ারম্যান হিসেবে আমি নতুন উধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নয়টি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

আপডেট টাইম : ১১:২২:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাবনা সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন কামার ডাংগা-চরপাড়া সংলগ্ন ছোট নদীর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলে হাজার হাজার মানুষ। ৯ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এসব এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবী একটি ব্রিজি নির্মাণের। কামার ডাংগা, ঢালি পাড়া, মোল্লা পাড়া, চর পাড়া, দাস পাড়া,বের পাড়া, মুন্সী পাড়া, ফারাদপুর, শাখারী পাড়ার লোকেরা এই সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন।

নদীতে ব্রিজ না থাকায় গ্রামের জনগণ ১০০০ হাজার ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকো দিয়েই রাত-দিন যাওয়া-আসা করতে হয়। ছেলে-মেয়ে, কৃষক-কৃষাণী, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষকা, বাঁশের সাঁকোতে পার হচ্ছে হাজার-হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে কাটছে, এলাকার  ভুক্তভোগী জনগণের। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও রোগীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। বাঁশের সাঁকোতে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে কমল মতি ছোট বাচ্চারা, শিক্ষার্থীসহ খেটে খাওয়া মানুষদের। এ ব্রিজটি না হওয়ার কারনে ঔ এলাকার জনগণের চিকিৎসা, শিক্ষা, জমি চাষাবাদ করা সহ নানা কাজ কর্ম করা চরম অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে  দেখা যায়, সাদুল্লাপুর এই ছোট নদীর উপর দিয়ে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রী যারা দুবলিয়া কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয় ও শিশুরা দুবলিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেনে যাতায়াত করতে হয় এই সাঁকোর উপর দিয়ে । প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয় কোমলমতি শিশুদের।

৮টি প্রাইমারী স্কুল, ৫ টি কেজি স্কুল, ২ টি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি কলেজ পড়–য়া ছাত্ররা প্রতিদিন এই ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াত করে, পারাপার হওয়ার সময় অনেক শিশু সাঁকো থেকে পানিতে পরে হতাহতের খবর ও পাওয়া গেছে।

অপর দিকে এলাকার কৃষিক্ষেত খামারের ফসলসহ যাবতীয় মালামাল পারাপার করার সময় একমাত্র ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে যেতে হয়। যা একজন কৃষকের জন্য অনেক কষ্টের ব্যাপার। যার উপর দিয়ে একা একা পার হওয়া যায় না তার উপর দিয়ে বড় বড় ফসলি বোঝা বহন করে কৃষকেরা।

কামার ডাংগা গ্রামের মোজাহার আলী প্রামানিক সাংবাদিকদের জানান, এই সাঁকোর উপর দিয়ে একা একাই পার হওয়া যায় না তার উপর দিয়ে কৃষি ক্ষেত খামারের  উৎপদিত পণ্য নিয়ে কিভাবে পারাপার করি, আমাদের ক্ষেতের ফসলি বোঝা পারাপার করা যায় না। পারাপার হওয়ার সময় অনেকের হাত পা পর্যন্ত ভেঙ্গে গিয়েছে বলে জানান তিনি।

কাদের টাকা দিযে এই বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয় জানতে চাইলে চরপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল গফুর প্রামানিক সাংবাদিকদের জানান,স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এলাকার বাড়ি বাড়ি থেকে বাঁশ ঝাড় থেকে বাঁশ ও হাড়ি চাঁদা তুলে আমরা একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করে আসছি। যা এখন পর্যন্ত চলে আসছে ,যখন নষ্ট হয়ে যায় পুনরায় করার জন্য এই পন্থাই অবলম্বন করা হয় যা আমাদের জন্য অনেকটাই কষ্টের ব্যপার।

তিনি আরও জানান আমাদের এই দুর্ভোগ কেউ দেখে না। নির্বাচনের সময় আসলে বিভিন্ন প্রার্থীরা এসে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেয় ব্রিজ নির্মাণের। কিন্তু নির্বাচনের পর আর তাদের খোঁজ থাকে না, সাঁকো নির্মানের জন্য কিছু অর্থ চাইলেও তাদের থেকে পাওয়া যায় না।

এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি মানুষের দুর্ভোগ দুর করার স্বার্থে একটি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য তারা সরকারের প্রতি সৃদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মুন্সির সাথে যোগাযোগ তিনি জানান চেয়ারম্যান হিসেবে আমি নতুন উধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।