ঢাকা ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্দি-জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ মে ২০১৮
  • ৩২৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সর্দি-জ্বর হলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পাকামোটা আমরা প্রায়ই করে থাকি। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এটা যে কত বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা নিয়ে একবারও কি আমরা খতিয়ে দেখি।

কিছুদিন পরপর অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কারণ শরীরে বারবার অ্যান্টিবায়োটিক ঢুকলে ব্যাকটেরিয়াগুলো ক্রমেই বুঝতে পারে কীভাবে তাকে মোকাবিলা করতে হবে। ফলে তারা দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে দেহে বাড়তে থাকে। তারপর আস্তে আস্তে কমে যায় অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করার ক্ষমতা। তখন আরো কড়া ওষুধ দেওয়ার দরকার হয়।

অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক থেকে যে শুধু শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলো মরে যায় তা নয়, রোগপ্রতিরোধের জন্য রক্তে মজুদ থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়াও মরে যায়। এ ব্যাকটেরিয়া শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তেও সাহায্য করে। ফলে রোগপ্রতিরোধক্ষমতা ক্রমে কমে যেতে থাকে।

সর্দি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর জ্বর ভাব হলেই শুরু করে দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক। শ্বাসজনিত অধিকাংশ রোগ যেমন—কাশি, হাঁপানি, সর্দি, ভাইরাসের জন্য হয়। সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। ভাইরাস ইনফেকশন সারাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই।

অনেক অ্যান্টিবায়োটিকে আমাদের অ্যালার্জি থাকতে পারে। না জেনে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেলে যদি তা শরীরে সহ্য না হয়, তার প্রভাব কিন্তু মারাত্মক হতে পারে। এমনকি স্টমাক ওয়াশও করতে হতে পারে। ত্বকের অ্যালার্জি হলে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।

অল্প অসুখে অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে কোনো বড় রোগের জন্য তা তুলে রেখে দিন। কারো ব্যাকটেরিয়াল মেনেনজাইটিস, চেস্ট ইনফেকশন, সিভিয়ার ডায়রিয়ার মতো কোনো অসুখ হলে তখন অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া গতি নেই। তাই আগে থেকেই বেশি অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে ফেললে, বড় অসুখের সময় ওষুধের গ্রুপ বাছতে চিকিৎসককে হিমশিম খেতে হবে। চিকিৎসায় বিলম্ব ঘটলে তা কখনো কখনো প্রাণঘাতীও হতে পারে।

যা করবেন না

♦ সর্দি, কাশি, রাইনাইটিস, ফ্লু-এর মতো ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।

♦  চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দিতে না চাইলে জোর করে খাবেন না।

♦ অ্যান্টিবায়োটিকের যে ডোজ যেভাবে নির্দিষ্ট রয়েছে, তা পুরোটা শেষ করুন। ইচ্ছেমতো খাবেন না, তাহলে কাজ করবে না।

♦ একবার অ্যান্টিবায়োটিক কিনে পরে খাওয়ার জন্য তা রেখে দেবেন না। অন্যের প্রেসক্রিপশন দেখে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। এতে রোগ কমার বদলে বাড়বে।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, বক্ষব্যাধি বিভাগ, এমএইচ শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্দি-জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না

আপডেট টাইম : ০৯:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সর্দি-জ্বর হলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পাকামোটা আমরা প্রায়ই করে থাকি। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এটা যে কত বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা নিয়ে একবারও কি আমরা খতিয়ে দেখি।

কিছুদিন পরপর অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কারণ শরীরে বারবার অ্যান্টিবায়োটিক ঢুকলে ব্যাকটেরিয়াগুলো ক্রমেই বুঝতে পারে কীভাবে তাকে মোকাবিলা করতে হবে। ফলে তারা দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে দেহে বাড়তে থাকে। তারপর আস্তে আস্তে কমে যায় অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করার ক্ষমতা। তখন আরো কড়া ওষুধ দেওয়ার দরকার হয়।

অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক থেকে যে শুধু শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলো মরে যায় তা নয়, রোগপ্রতিরোধের জন্য রক্তে মজুদ থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়াও মরে যায়। এ ব্যাকটেরিয়া শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তেও সাহায্য করে। ফলে রোগপ্রতিরোধক্ষমতা ক্রমে কমে যেতে থাকে।

সর্দি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর জ্বর ভাব হলেই শুরু করে দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক। শ্বাসজনিত অধিকাংশ রোগ যেমন—কাশি, হাঁপানি, সর্দি, ভাইরাসের জন্য হয়। সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। ভাইরাস ইনফেকশন সারাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই।

অনেক অ্যান্টিবায়োটিকে আমাদের অ্যালার্জি থাকতে পারে। না জেনে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেলে যদি তা শরীরে সহ্য না হয়, তার প্রভাব কিন্তু মারাত্মক হতে পারে। এমনকি স্টমাক ওয়াশও করতে হতে পারে। ত্বকের অ্যালার্জি হলে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।

অল্প অসুখে অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে কোনো বড় রোগের জন্য তা তুলে রেখে দিন। কারো ব্যাকটেরিয়াল মেনেনজাইটিস, চেস্ট ইনফেকশন, সিভিয়ার ডায়রিয়ার মতো কোনো অসুখ হলে তখন অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া গতি নেই। তাই আগে থেকেই বেশি অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে ফেললে, বড় অসুখের সময় ওষুধের গ্রুপ বাছতে চিকিৎসককে হিমশিম খেতে হবে। চিকিৎসায় বিলম্ব ঘটলে তা কখনো কখনো প্রাণঘাতীও হতে পারে।

যা করবেন না

♦ সর্দি, কাশি, রাইনাইটিস, ফ্লু-এর মতো ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।

♦  চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দিতে না চাইলে জোর করে খাবেন না।

♦ অ্যান্টিবায়োটিকের যে ডোজ যেভাবে নির্দিষ্ট রয়েছে, তা পুরোটা শেষ করুন। ইচ্ছেমতো খাবেন না, তাহলে কাজ করবে না।

♦ একবার অ্যান্টিবায়োটিক কিনে পরে খাওয়ার জন্য তা রেখে দেবেন না। অন্যের প্রেসক্রিপশন দেখে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। এতে রোগ কমার বদলে বাড়বে।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, বক্ষব্যাধি বিভাগ, এমএইচ শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।