ভুট্টা আবাদের বৃদ্ধির সঙ্গে ভাগ্য ফিরেছে কৃষকদের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কয়েক বছর আগে যেসব জমিতে তামাক চাষ হতো এখন সেই সব জমিতে এবার ভুট্টা চাষ হচ্ছে। দিন দিন তাই জেলায় বাড়ছে ভুট্টার আবাদ। ভুট্টা আবাদের পরিধি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাগ্য ফিরেছে লালমনিরহাট জেলার শত শত কৃষকের।

হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক মকলেছুর রহমান জানান, ভুট্টা চাষ তামাকের চেয়ে লাভজনক। ভুট্টা চাষে পরিশ্রমও তুলনামূলকভাবে কম।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের কৃষক হাসান আলীও জানান একই কথা। তিনি বলেন, ‘ভুট্টা উৎপাদনে সার কম প্রয়োগ করতে হয়। পাশাপাশি সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিকের প্রয়োজন কম হয়। ফলে খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলা, পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় এবার ভুট্টার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। যদিও বিভিন্ন কোম্পানির প্রলোভনে এখনো আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলায় তামাক চাষের প্রভাব কিছুটা রয়ে গেছে।

তবে সরকারিভাবে মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেয়া হলে এ দুই উপজেলাও তামাকের পরিবর্তে ভুট্টা বা অন্য ফসল আবাদ বৃদ্ধি করা সম্ভব।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে জেলার পাঁচ উপজেলায় ২৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। যার মধ্যে ২২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির আবাদ থেকে ২ লাখ ৩ হাজার ৮৯৯ টন ভুট্টা উৎপাদন হয়। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৮ দশমিক ৯০ টন ফলন পাওয়া যায়। আর প্রতি মণ ভুট্টা ৫০০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হলে কৃষকরাও বেশ লাভবান হন।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়। এ থেকে উৎপাদন হয় ২ লাখ ১৮ হাজার ২২৮ টন। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৮ দশমিক ৮৮ টন করে ফলন পান কৃষক। বর্তমান বাজারে এসব ভুট্টা প্রতি মণ ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকদের লাভ হচ্ছে উৎপাদন খরচের প্রায় দ্বিগুণ। চলতি বছরে ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তাছাড়া তিস্তা বিধৌত হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জেগে ওঠা চরেও ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব চরে প্রতি বছর পতিত প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা উৎপাদন হচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) বিধু ভূষণ রায় বলেন, লালমনিরহাট সদর, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে আশাব্যঞ্জকভাবে ভুট্টা চাষ বৃদ্ধি করা সম্ভব হলেও কালীগঞ্জের একটি অংশ ও আদিতমারীতে এখনো তামাক চাষ পুরোপুরি থামানো যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর