হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের বুকে নিজের সম্মানজনক অবস্থান ধরে রাখতে যেকোনো ‘রক্তাক্ত যুদ্ধের’ জন্য চীন প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
আজ মঙ্গলবার চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে বাৎসরিক বক্তব্য দেয়ার সময় একথা বলেন শি। এ সময় চীনকে বিভক্ত করার কোনো চেষ্টা সফল হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের তাইওয়ান সফরের বিধান করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আইন করার পরই এই মন্তব্য করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট। চীন তাইওয়ানকে স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে দেখে, যা ভবিষ্যতে একত্রীকরণ করা হবে। শি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বেইজিং তার ‘এক চীন নীতি’ রক্ষায় কাজ করে যাবে। তিনি আরো বলেন, ‘দেশকে বিভক্ত করার সব কর্মকাণ্ড ও কৌশল ব্যর্থ হবে এবং জনগণের ঘৃণা কুঁড়াবে ও ইতিহাস তার বিচার করবে।’
দেশের বাইরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে চীনের উচ্চাভিলাস সম্পর্কে দেশটির এই প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা অন্য দেশের প্রতি হুমকির কারণ হবে না। তার ভাষায়, ‘যারা অন্যকে হুমকি দিয়ে অভ্যস্ত, তারাই সবাইকে হুমকি হিসেবে দেখে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিধান বাতিল করে নতুন আইন করেছে চীনের জাতীয় পার্লামেন্ট। এতে মাও সে তুংয়ের পর সবচেয়ে ক্ষমতাধার চীনা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন শি। পশ্চিমা সমালোচকদের ধারণা, আজীবন ক্ষমতায় থাকতেই চীনা প্রেসিডেন্ট নতুন এই আইন করেছেন।
চীনে আজীবন প্রেসিডেন্ট হলেন সি চিন পিং
বেইজিং: চীনের সংবিধানে আনা হলো এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন। সেই পরিবর্তন আনা হলো দেশটির ‘রাবার স্ট্যাম্প’ হিসেবে বিবেচিত আইন প্রণেতাদের হাত দিয়েই। অর্থাৎ, চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের সদস্যরা বর্তমান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-কে আজীবন ক্ষমতায় রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এর ফলে, প্রেসিডেন্টের জন্যে যে নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিল তা বাতিল হয়ে গেল।
কংগ্রেসের ৩,০০০ সদস্যের মধ্যে ২,৯৫৮ জন ভোট দেন সি চিন পিং-কে আজীবন প্রেসিডেন্ট করার প্রস্তাবটির সমর্থনে। আর বিপক্ষে ভোট দেন দুজন।
স্থানীয় সময় বিকালে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষণায় জানানো হয়, “সংবিধান সংশোধনের বিলটি পাস হয়ে গেছে।” এ সময় সি চিন পিং-কে তেমন আবেগ-প্রবণ হতে দেখা যায়নি। অন্যদের সঙ্গে তিনি তাঁর আসনে বসেই কংগ্রেসের বিদায়ী চেয়ারম্যানের বক্তব্য শোনেন।
একনায়কতন্ত্রের দিকে চীনের এমন যাত্রার সমালোচনা উঠেছে দেশটির বিভিন্ন মহল থেকে। তবে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর ফলে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও সুদৃঢ় হবে। ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অনেককে প্রকাশ্যে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও করতে দেখা যায়।
আইনসভার মুখপাত্র জানান, প্রেসিডেন্টের নির্দিষ্ট মেয়াদের আইনটি তুলে দেওয়ার হয়েছে কেননা, কমিউনিস্ট পার্টি এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যে পদ ধারণ করেন সেখানে কোন নির্দিষ্ট মেয়াদের বেড়াজাল নেই।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট সি-র খড়গ হস্ত তাঁকে জনপ্রিয়তার এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে এসেছে।