হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ছিটমামুদপুর, লতিফপুর ও তরফপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া, তরফপুর ও পাথরঘাটা এলাকায় বোরো ধানের চারা গাছের গোড়া থেকে পঁচে মরে যাচ্ছে। এতে কৃষকেরা বেকায়দায় পড়েছেন। বাড়তি খরচ করে পুনরায় ধান বুনে ফসল ঘরে তুলার চেষ্টা করছেন তারা।
জানা গেছে, প্রায় ১৫ দিন আগে এলাকায় বোরো ধান বোনা শুরু হয়। ধানের চারা বোনার তিন থেকে চারদিন পরই গোড়া থেকে পঁচতে শুরু করে তা মারা যেতে থাকে। কৃষকেরা ফলনের জন্য মারা যাওয়া ধান গাছের চারা পুনরায় বাড়তি খরচ করে বুনা শুরু করেছেন। নয় আট দিন আগে তাদের ৫০ শতাংশ জমিতে ধান গাছের চারা বুনা হয়। যা বুনার তিন দিন পরই মরতে শুরু করে।
লেহাজ উদ্দিন (৫৫) নামের এক কৃষক বলেন, ‘কয়দিন আগে এক খ্যাত রুইছি (বুনেছেন)। হঠাৎ কইরা দেহি গুছা (চারা) মইর্যা যাইতাছে। পরে পুরা খ্যাত থিক্যা ধান উঠিয়্যা আবার বুনছি। অহন অবো কিনা জানিনা। আগে ২০ হাজার গেছে। অহন আরও ১০ হাজার যাইবো। খালি আমি না। আমার নাগাল আরও ম্যালা ম্যানষের খ্যাত গেছে।’
জালেকা বেগম জানান, তার স্বামী প্রবাসী। এজন্য বাড়ির কাজ তাকেই করতে হয়। বর্গাসহ ২০০ শতক জমিতে এবছর বোরো ধান বুনেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ তিন দিন আগে থেকে ধানের চারার নীচ থেকে পঁচতে শুরু করে। এক পর্যায়ে চারা মরে যায়। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে তিনি পুনরায় জমিতে ধান লাগাচ্ছেন। কৃষি বিভাগের কেউ গতকাল পর্যন্ত তাদের খোঁজ নেননি।
নয়াপাড়া গ্রামের সৈয়দ রুহুল আমিন জানান, তিনি সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে এলাকার প্রায় ১২ একর জমির মালিকদের ধানের আবাদ করতে পানি দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে শরিফ উদ্দিন মিয়ার ৫৫ শতক, হযরত মোল্লার ৩৫ শতক ও পলাশ খানের প্রায় ৩০ শতাংশ জমি রয়েছে। তারা প্রায় ১৫ দিন আগে ধান বুনেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ধানের চারা মরে যাওয়াতে তারা বিপাকে পড়েন। পাঁচ দিন আগে তারা পুনরায় খেতে ধানের চারা বুনেছেন। ওই এলাকায় প্রতি একর জমির ধান বুনতে হালচাষ, সার, শ্রমিকের মজুরি ও ধানের চারা কিনতে প্রায় ২০ হাজার টাকা কৃষকেরা ব্যয় করেছেন। যাদেরকে নতুন করে পুনরায় ধান বুনতে আবারও প্রায় ১০ হাজার টাকা করে বাড়তি গুনতে হচ্ছে। অনেককে ধানের চারা জোগাড় করতে বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে এলাকার কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। কৃষকেরা ধানের মূল্য দিয়ে তাদের ব্যয় হওয়া টাকা তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়েও চিন্তিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, তিনি সম্প্রতি মির্জাপুরে যোগদান করেছেন। ঠান্ডার প্রভাব বেশি থাকায় ধানের চারা মরে যেতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।