হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকটে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মরত চিকিৎসকদের । আবার চিকিৎসা নিতে এসে চিকিৎসক না থাকায় অনেক রোগীরা চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে করে ভোগান্তি বাড়ছে রোগী ও স্বজনদের। বিষয়টি স্বীকার করে বাড়তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্র্তপক্ষ।
রোগীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের দাবি এলাকাবাসীর। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয়। পরে সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৫ সালে এটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। কিন্তু হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ রোগী বহির্বিভাগে ও আন্তঃবিভাগে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এছাড়া ভৈরবের পার্শ্ববর্তী রায়পুরা, বেলাব, কুলিয়ারচরসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে দুর্ঘটনাজনিতসহ যেকোনো রোগের চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন কয়েকশ’ রোগী আসেন হাসপাতালটিতে।
হাসপাতালটিতে ২৯ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও মাত্র ১২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালের কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে চিকিৎসক না থাকায় অধিকাংশ রোগীরা এসে চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়াও আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি যন্ত্রপাতি থাকলে ও চিকিৎসক না থাকায় বাড়তি পয়সা দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে রোগীদের। এদিকে আবার প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরত চিকিৎসকরা।
আবার যারা চিকিৎসক দেখিয়েছেন তারা কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন। আগানগর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের হেলেনা বেগম জানান কষ্ট করে ২-৩ দিন ধরে হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের দেখাই পাচ্ছেন না। একই ইউনিয়নের জোসনা বেগম জানান রোগী ভর্তি করলেও চিকিৎসকের দেখা মিলছে না। কমলপুর গ্রামের নাছিমা বেগম জানান, চিকিৎসক দেখিয়েছেন কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
চিকিৎসা নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোগীদের প্রশ্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি আছে নেই শুধু চিকিৎসক। আবার কেউ কেউ সামান্য ওষুধ পেলেও অনেকে ওষুধ পাননি এমন অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সবিতা রানী জানান প্রতিদিন হাসপাতালে রোগীর ভিড় বাড়ছে। সেই তুলনায় জনবল নেই। তাই চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কে এন এম জাহাঙ্গীর জানান, শীতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
বহির্বিভাগে ও আন্তঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে ২৯ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ১২ জন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছে। হাসপাতালে চক্ষু, ইএনটি, অর্থোপেডিকসহ সব বিভাগে কনসাল্টট্যান্ট নিয়োগ দেয়া হলে হাসপাতালের সেবা দিতে ব্যাগ পেতে হবে না। রোগীরাও সেবা পাবে এবং পরিবেশও ভাল থাকবে। সরকার দ্রুত চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে সেবার মান নিশ্চিত করবে এমনইটাই দাবি রোগী ও এলাকাবাসীর।