হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাবনাময় একটি নতুন দিগন্তের নাম ‘পায়রা সমুদ্র বন্দর’। যা এক সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্ন ছিল, বর্তমানে তা এখন কোটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের বাস্তবতায় রূপ লাভ করেছে। বন্দরকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকার হাতে নিয়েছে একাধিক বৃহৎ প্রকল্প। দিন দিন উন্নয়নের ছোঁয়ায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষা এক সময়ের অবহেলিত জনপদ কলাপাড়া উপজেলা এখন বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় চলমান রয়েছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়ক, পায়রা সেতু প্রকল্প, সেনানিবাস। নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে গোটা উপজেলায় চলছে মহাকর্মযজ্ঞ।
ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত তিনটি সেতু, সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন, কোস্টগার্ড প্রশিক্ষন কেন্দ্র ও লাইট হাউস ভবনসহ একাধিক প্রকল্প। এছাড়াও বন্দরকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটাকে আধুনিক ও বিশেষ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের রয়েছে মহা পরিকল্পনা। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর কলাপাড়া উপজেলায় রামনাবাদ নদীর চ্যানেলে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর একনেক’র সভায় পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো-সুবিধাদি শীর্ষক ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয় এবং ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আটটি ধারা ও উপ-ধারার বিধান রেখে সংসদে পায়রা বন্দর প্রকল্প ভূমি অধিগ্রহণ বিল ২০১৬ পাস করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ আগস্ট গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন ও নামফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পায়রা বন্দর কার্যক্রম শুরু করেন।
১৬ একর জমিতে পাকা অবকাঠামো ও পন্টুন দিয়ে জেটি নির্মাণ করে স্বল্প পরিসরে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়। নির্মিত হয়েছে ওয়্যারহাউস, ক্রেন, পন্টুন, পাইলট বোট, টাগ বোট, বয়া লেইয়িং ভেসেল, সার্ভে বোট ও প্রশাসনিক ভবন। পায়রা বন্দরের কাস্টম হাউসের সহকারী পরিচালক নাজির আহমেদ অলক জানান, বন্দর থেকে পণ্য খালাসের নির্ধারিত চার্জ কমানো হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহির্নোঙরে ১১টি মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস বাবদ ২১ কোটি ২০ লাখ ৩১ হাজার ৪৮৩ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে এবং ইতোপূর্বে কয়েকটি মাদার ভেসেল গভীর সাগরে নোঙ্গর করেছে।
পায়রা বন্দরকে আরও গতিশীল করতে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সাথে রেল যোগাযোগ চালু করা হবে। এরফলে সড়ক পথের দূরত্ব অনেকটাই কমে যাবে। বন্দরে মোট ১৬টি জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। দাফতরিক কয়েকটি কার্যালয় ছাড়াও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মান কাজ গড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ চলমান রয়েছে। শিপিং, এজেন্ট, সিএ্যান্ডএফ, ফ্রেইড ও ফরোয়ার্ড নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। সাড়ে তিন বছরে মধ্যে চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়ক ও ডাবল গেজ রেল লাইন সংযুক্ত করা হবে পায়রা বন্দরের সাথে। নৌ ও পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি পায়রা বন্দর থেকে চার লেনের মহা সড়ক নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। বর্তমানে দ্রুত গতিতে চার লেন সড়কের কাজ এগিয়ে চলছে।
পায়রা বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মো: সাইদুর রহমান জানান, বন্দরের সঙ্গে শিল্পায়নের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলে নানা ধরনের শিল্পের বিস্তার লাভ করবে। বিশেষ করে তৈরী পোষাকসহ রফতানিমুখী পন্যের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত শিপমেন্ট করার জন্য এ অঞ্চলে কারখানা নির্মান করবে। এর ফলে নতুন নতুন কর্ম সংস্থান সৃষ্টি হবে আর রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমে যাবে। প্রায় ৭ হাজার একর জমির ওপর পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রকল্প চলমান রয়েছে।
৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের পাঁচতলা প্রশাসনিক ভবন, ১ লাখ বর্গফুট আয়তনের একটি ওয়্যারহাউস, দুই কিলোমটার দীর্ঘ দুইটি কনটেইনার টার্মিনাল, প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ড্রাই বাল্ক টার্মিনাল, একটি এলএনজি টার্মিনাল, একটি লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল, কয়লা টার্মিনাল, অভ্যন্তরীণ ফেরি টার্মিনাল, নৌযান নির্মাণ ও মেরামতের জন্য শিপইয়ার্ড, পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ঘণ্টায় ২৫০ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, বন্দর রেডিও নিয়ন্ত্রন স্টেশন, ২শ’ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, জাহাজের নাবিকদের সংক্রমণ ব্যাধি ছড়ানো প্রতিরোধে পোর্ট হেলথ সেন্টার, রাজস্ব শুল্ক পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্সি, বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাসভবন, পায়রা বন্দরের কর্মীদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য স্কুল-কলেজ, স্বাস্থ্যসেবার জন্য হাসপাতাল, বন্দরের সাথে যুক্ত হবে রেল স্টেশন এবং পর্যটনের উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ভারত ও চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ পায়রা বন্দরে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বন্দরের নিরাপত্তার জন্য নৌবাহিনীর বেইজ স্টেশন স্থাপন করা হবে। গোটা প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৬৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বন্দরের কার্যক্রম শুরু করা হবে এবং ২০২৩ সালের মধ্য বন্দরের কাজ সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার জন্য দ্রুত গতিতে দিন রাত কাজ চলছে। কাজ সম্পন্ন হলে ১৩ থেকে ১৫ মিটার গভীরতার মাদার ভেসেল বন্দরে ভিড়তে পারবে। বন্দরটি সম্পূূর্ণ চালু হলে এক সাথে তিন থেকে চারটি মাদার ভেসেল পন্য ওঠা নামানোর কাজ করতে পারবে।
কোনো জাহাজকে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না এছাড়া বহির্নোঙরে পণ্য খালাসের ব্যবস্থাও থাকবে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে মোট ১৯টি প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ১২টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। আর বাকি সাতটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সংশিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়। বন্দরে ৬ হাজার কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মাদার ভেসেল নোঙর করতে পারবে। এ কারনে রামনাবাদ চ্যানেলে সঠিক নব্যতার জন্য ড্রেজিং চলমান রয়েছে। পায়রা বন্দর থেকে পণ্যবাহী রেল মাত্র তিন ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছতে পারবে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী জার্জিস তালুকদার জানান, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয় কয়লা ভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের। পরে ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ কলাপাড়া উপজেলার পায়রা সমুদ্র বন্দরের পাশের ইউনিয়ন ধানখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগা ওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ধাপের কাজ শুরু করা হয়। প্রায় ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দেয় চীনের এক্সিম ব্যাংক এবং চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, চীন ও অস্ট্রেলিয়া থেকে খুব সহজেই কয়লা আমদানি করা যাচ্ছে।
২০২১ সালের মধ্য এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে দিন-রাত আড়াই হাজার বাঙালি এবং ৬০০ চায়না শ্রমিক কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও প্রকল্পটি তদারকিতে রয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা। বর্তমানে এ প্রকল্পের ৩১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। ওই প্রকল্পে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার মিঠুন শিকদার জানান, প্রকল্পের মূল কাজের জন্য বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরের পর এখন দ্রুত গতিতে মাটি পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলছে। এজন্য বসানো হয়েছে চীনের তৈরি আধুনিক মাটি পরীক্ষার মেশিন। নির্মাণ করা হচ্ছে সাবস্টেশন। যেখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসরি সরবরাহ করবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালের মধ্য প্রথম ধাপের কাজ শেষ হবে।
২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধমে কলাপাড়া উপজেলার মাইটভাঙা গ্রামে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটার মহাসড়কের টিয়াখালী নদীর ওপরে নির্মিত ১৭৫ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ, কলাপাড়া উপজেলার প্রশাসনিক সম্প্রসারণ ও হলরুম নির্মাণের উদ্বোধন করেন। এর আগে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেল সেতুর কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
সাবমেরিন টেলি কমিউনিকেশন প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আশরাফ জানান, ২০১৩ সালে ১০ একর জমির ওপর ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন। তথ্য-প্রযুক্তির মহাস্রোতে যুক্ত হতে ২০১৪ সালে মার্চ মাসে মালয়েশিয়ার সি-মি-ইউ-৫ কনসোর্টিয়ামে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। সমুদ্র তলদেশের ২৫ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপিত হয় এবং পরীক্ষামূলক ভাবে সংযোগ চালু হয় ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন জানান, উদ্বোধনের দিন থেকে ২০০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ এবং পর্যায়ক্রমে তা ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে। বর্তমানে সি-মি-উই-৫ কনসোর্টিয়াম দেশে ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএস ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যান্ডউইথের ইন্টারনেট সেবা দিয়ে দিচ্ছে।
পায়রা সেতু প্রকল্পের আবাসিক প্রকৌশলী মনজিত কুমার সাহা জানান, ২০১২ সালের ৮ মে একনেক সভায় অনুমোদন হয় পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাটের পায়রা নদীর ওপারে পায়রা সেতু প্রকল্প। ২০১৩ সালের ১৯ মে প্রধানমন্ত্রী মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাটে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই সেতুর কাজ শুরু হয়। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে মূল সেতুর ৬৩০ মিটার সেতুর কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ২০ জুন প্রথম সংশোধনী সভায় একনেকে ডিপিপি অনুযায়ী এ সেতুর প্রাক্কালিত ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২৭৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
পরে সেতু নির্মাণের চুক্তি মূল্য ধরা হয় ১ হাজার ২২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সেতু নির্মাণ বাস্তবায়নে কাজ করছে চীনের লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লি:। কনস্যালটেন্সি ফার্ম হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ, কুয়েত, ভারত ও কোরিয়ার ৪টি প্রতিষ্ঠান। ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকার মধ্য বাংলাদেশ সরকারের ৩৮৪ কোটি ৫০ লাখ এবং সাহায্য তহবিলে রয়েছে ৮৯৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। পায়রা সমুদ্র বন্দরকে প্রাধান্য দিয়ে এ সেতুটি চার লেন করা হচ্ছে। মূল সেতুতে স্প্যান থাকছে চারটি। নদীর মাঝখানে দুইটি ২০০ মিটার ও পাশের দুইটি ১১৫ মিটার করে। এছাড়া পটুয়াখালী প্রাান্তে ১৬টি ও বরিশাল প্রান্তে ৩০ মিটার করে ১২টি স্প্যান থাকবে। মাঝে লেন ছাড়াও থাকবে ১ মিটার দৈর্ঘ্যের ফুটপাথ। সেতুটির ২৬টি পিলারের মধ্য নদীর পাড়ের অন্তত ২০টি পিলার তৈরী সম্পন্ন হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ:বারেক মোল্লা বলেন, কুয়াকাটাকে আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ার জন্য একটি মহা পরিকল্পনা করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উন্নয়নের তালিকায় এলজিইডিতে ৪৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বন্দর কেন্দ্রিক দক্ষিণাঞ্চলে যে উন্নয়ন হচ্ছে তা এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। পায়রা বন্দরের কারণে দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি পাবে দক্ষিণাঞ্চলের অবহেলিত বিশাল জনগোষ্ঠী।
লেখক: তুষার হালদার