জাতীয় সংসদে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বিল-২০১৫ সংশোধিত আকারে পাস হয়েছে।
দশম সংসদের সপ্তম অধিবেশনে সোমবার রাতে সংসদ কার্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।
বিলে দেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও তাদের জীবনমান উন্নয়নের স্বার্থে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং এতদুদ্দেশ্যে বিভিন্ন খাতের অবকাঠামোর অনুকূলে ব্যাপক বিনিয়োগ নিশ্চিতকল্পে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি অংশগ্রহণ এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব সৃষ্টির আইনিকাঠামো প্রদান ও একটি আস্থাশীল কর্তৃপক্ষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা হয়েছে।
বিলের বিধান কার্যকর হবার পর পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করার (পিপিপি কর্তৃপক্ষ) বিধান করা হয়। এ কর্তৃপক্ষ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ এবং কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হবে।
বিলে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সার্বিক পরিচালনা ও প্রশাসন বোর্ড অব গভর্নরস-এর ওপর ন্যস্ত এবং এর সকল ক্ষমতা কার্যাবলী বোর্ড অব গভর্নরস সম্পাদন করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের পিপিপির বোর্ড অব গভর্নরস গঠন করার বিধান করা হয়েছে। এ বোর্ড অব গভর্নরস-এর অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- অর্থমন্ত্রী (ভাইস-চেয়ারম্যান), প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত একজন মন্ত্রী, প্রকল্প সংশি�ষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব (পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব)।
তবে পিপিপি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে বোর্ড অব গভর্নরস চেয়ারপার্সনের পূর্বানুমোদনক্রমে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নয় এমন কোনো মন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ যে কোনো ব্যক্তিকে বোর্ডের সভায় আমন্ত্রণ জানাতে পারবে বলে বিধান করা হয়েছে।
বিলে পিপিপি কর্তৃপক্ষের বোর্ড অব গভর্নরস-এর সভা, ক্ষমতা ও কার্যাবলী, কার্যালয়, মন্ত্রিসভা কমিটি ও এর ক্ষমতা-কার্যাবলী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জনবল কাঠামো, পিপিপি বাস্তবায়ন, চুক্তি, প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদন, জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প, প্রকল্পে সরকারি আর্থিক অংশ গ্রহণ, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন, প্রকল্প কোম্পানি গঠন, পিপিপি চুক্তি সম্পাদন, অপরাধ ও স্বার্থের সংঘাত, বিরোধ নিষ্পত্তি, বিদ্যমান নীতিমালা রহিতকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধানের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া বিলে অভিযোগ পুনঃনিরীক্ষণ আপত্তির পদ্ধতি, গণপণ্য ও গণসেবা ব্যবহারকারীর অভিযোগ নিষ্পত্তি, গোপনীয়তা, মূল্য, বকেয়া ও ফি আদায়, তহবিল, ঋণ গ্রহণ ও বিনিয়োগ, বার্ষিক বাজেট বিবরণী, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা, সরকারি কর্মচারী, ক্ষমতা অর্পণ, বার্ষিক প্রতিবেদন, বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা, পিপিপি নীতিমালা প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা হয়েছে।
শ্রমিকদের মজুরির মান ও সাধারণ জনগণের সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং শিশুশ্রম নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত কোনো বিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো শর্ত অংশীদারিত্ব চুক্তিতে সন্নিবেশ করা যাবে না বলে বিলে উল্লেখ করা হয়।