বরিশালে আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রবহমান সরকারি খালের মুখ ভরাট করেছেন প্রভাবশালী তিন ব্যক্তি। তাঁরা ওই স্থানে পেট্রল পাম্প, বাড়ি ও মাছের ঘের স্থাপন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে বাকাল ইউনিয়নের মানশী ফুল্লশ্রী গ্রামের বাইপাস সড়কের দুই পাশ থেকে প্রবাহিত খাল ও কালভার্টের মুখে বালু ফেলা হয়েছে। বালু দিয়ে ভরাট করায় ওই গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার জলাবদ্ধ জীবনযাপন করছে। জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেতে খাল ও কালভার্টের মুখ দখলমুক্ত করতে গ্রামবাসী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণের সময় বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মধ্য দিয়ে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়। বাইপাস সড়কের দুই পাশে পানি প্রবাহের জন্য খাল খনন ও কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কয়েক দিন আগে পাশের উপজেলা গৌরনদীর বাসিন্দা আলাউদ্দিন ভূইয়া পেট্রল পাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য তিনি ফুল্লশ্রী এলাকার রাস্তার পূর্ব পাশের খাল ও কালভার্টের মুখ বন্ধ করে বালু ফেলে প্রায় এক একর জমি ভরাট করেন। আরেক প্রভাবশালী কামাল ফকির বাড়ি নির্মাণের জন্য খালসহ সড়ক জনপথের ৫০ শতাংশ জমির ওপর বালু ফেলে ভরাট করেন। এ ছাড়া জাকির হোসেন ফকির নামে আরেকজন চাষের জন্য খালের দুই প্রান্তে বালু ফেলে ভরাট করেছেন। তিনি মাছ চাষ করার কারণে ওই খাল থেকে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বাকাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিপুল দাস বলেন, ‘খাল ও সরকারি জমি ভরাটের কারণে ওই এলাকায় অবস্থিত উপজেলা পরিষদের চত্বরসহ প্রায় অর্ধশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি জানার পরে ইউএনও, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।’
অভিযুক্ত আলাউদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘আমার ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে পেট্রল পাম্প করার জন্য বালু দিয়ে ভরাট করেছি। পেট্রল পাম্পে যানবাহন আসা-যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হবে। এ জন্য সড়ক ও জনপথের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।’
আরেক দখলদার কামাল ফকির বলেন, ‘সরকারি খাল কিংবা জমি ভরাট করিনি। আমার নিজের কেনা জমি বালু দিয়ে ভরাট করেছি।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ শাহেদ বলেন, ‘সড়কের পাশে পেট্রল পাম্প নির্মাণের জন্য অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে সেটি এখন পর্যন্ত আমার হাতে আসেনি। ব্যক্তিমালিকানার জমিতে স্থাপনা নির্মাণের পরে সেখানে যাতায়াতের জন্য নিয়ম মেনে সড়ক ও জনপথের জমির ওপরে ছোট আকারে রাস্তা নির্মাণ করা যেতে পারে। তবে সেই রাস্তা নির্মাণের সময়ে পানি প্রবাহে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। মাছ ও বাড়ি করার জন্য সড়ক ও জনপথের জমি ভরাট করার বিষয়ে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’