হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে ছেলেদের চাইতে মেয়েরাই দেশের ফুটবলে নিয়মিত সাফল্য পাচ্ছে। তাই এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এমনও বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশ থেকে কোনো দল যদি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে, তবে সেটা হবে কোনো নারী দল। তা যে বয়সসীমাতেই হোক না কেন।
অতিক্রান্ত বছরটি শেষই হলো মূলত নারী ফুটবলের সাফল্যে। ভারতকে উপর্যুপরি হারিয়ে অনূর্ধ্ব ১৫ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরেই বাজিমাত করলো বাংলাদেশের কিশোরীরা। এ সাফল্যের পরই দলটির কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন বিবিসিকে বলেন, ‘বাংলাদেশ নারী দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা বেশি, তাই বাফুফের পৃথক পরিকল্পনা এই দল নিয়ে।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তরফেও জানানো হয়েছে বয়সভিত্তিক দলগুলো গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্য নারী বিশ্বকাপে অংশ নেয়া। সে লক্ষ্যে নারীদের একটি দল গেল সেপ্টেম্বরে অনূর্ধ্ব ১৬ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও অংশ নিয়ে সবার নজর কাড়ে। বিশেষ করে শেষ খেলায় অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাক্রমশালী দলের সাথে এগিয়ে গিয়েও লড়ে তবেই হারে। এই হার ছিল জয়ের চেয়েও বেশি। এ খেলাটির আগে উত্তর কোরিয়া, জাপানের মতো বিশ্ব শক্তির সাথে খেলে সানজিদা, কৃষ্ণা, মার্জিয়া, তহুরা, রাজিয়া, স্বপ্নারা।
আশা জাগানিয়া ব্যাপার হলো বাফুফে মূল জাতীয় দল কিংবা দেশের ফুটবলকে ক্রমাবনতি থেকে রক্ষা করতে না পারলেও নারী খেলোয়াড়দের প্রশংসনীয় সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। থাইল্যান্ডের টুর্নামেন্টটির আগেই বিদেশে অনুশীলন ও প্রীতি ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়। এখন তো অনূর্ধ্ব ১৫ সাফ ট্রফি জয়ের পর ফেডারেশনের পরবর্তী লক্ষ্য ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব ২০ নারী বিশ্বকাপ খেলা।
বলা হয়ে থাকে সাফল্য আরো সাফল্য বয়ে আনে। সে লক্ষ্যেই বাফুফের লক্ষ্য এখন বয়সভিত্তিক নারী ফুটবলকে আরো জোরদার করা। তাই পরবর্তী বছরে নারী সাফের তিনটি টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব ১৫, অনূর্ধ্ব ১৮ ও মূল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবে বাংলাদেশের মেয়েরা। এছাড়াও খেলবে এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ ও অনূর্ধ্ব ১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে।
বাফুফে সভাপতি কাজি সালাউদ্দিন এর আগে মূল জাতীয় দলকেই বিশ্বকাপে খেলানোর অবাস্তব কথা বলতেন। হালে অবশ্য এ বিষয়টি নিয়ে আর কথা বলেন না। তবে নারী ফুটবলের বিশ্বকাপে খেলার ব্যাপারে তার সর্বশেষ পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত। তিনি বলেছেন অনূর্ধ্ব ১৬ দল এশিয়ার সেরা আটে খেলেছে। কাজেই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে গেলে সেরা তিনে যাওয়া সম্ভব। এ লক্ষ্যে তিনি টানা চার বছর বর্তমান ২৩ জনের সাথে আরো ২৭ জনকে যোগ করে প্রশিক্ষণ চালানোর অভিপ্রায় জানিয়েছেন।
আশা করা যায় অর্থ জোগাড় করে এটা করা গেলে নারী ফুটবলাররা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন বাতিঘর হয়ে দেখা দিবেন।