ঢাকা ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ায় দুর্দশায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৬:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৪২৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানবপাচারের অভিযোগে চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুনকে গ্রেপ্তারের পর থেকে দুর্দশায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা। এখন নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে দেশটিতে বৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের। এনিয়ে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। আপাতত মালয়েশিয়া সরকারের পদক্ষেপগুলোতে নজর রাখছে দূতাবাস। আগ বাড়িয়ে কিছুই করছেন না তারা। মালয়েশিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বলেন, চিত্রপরিচালক গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরা শুনেছি।

এখনো সরকারের তরফ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। জানানোর পর করণীয় ঠিক করা হবে। তিনি বলেন, আদম পাচার ঘটনায় একটি দেশের নাম ঘুরেফিরে মিডিয়াতে আসলে কিছুটা তো সমস্যা হয়। এ ধরনের অনুষ্ঠানে গিয়ে কেউ গ্রেপ্তার হলে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। এজন্য সবাইকে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ নাইটস’ নাম দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আদম পাচার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দলে ‘সিনেমাটিক বাংলাদেশি নাইটস’ নামের কনসার্টে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে ৪৮ জনের একটি দল মালয়েশিয়া যায়। ওই দলে ছিলেন তারকা কণ্ঠশিল্পী, ব্যান্ড, নির্মাতা এবং চিত্রনায়ক-নায়িকা। এর বাইরে আরো ৫৭ ব্যক্তিকে শিল্পী সাজিয়ে ভিসা করে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা করে নেয়া হয়।

কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টে নামার পর থেকেই বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট ও ভিসায় গরমিল পাওয়া যায়। তাই ইমিগ্রেশনের সময়ই ১৫ জনকে আটক করে স্থানীয় গোয়েন্দা পুলিশ। তাদেরকে আটকের পর দোভাষীর সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মালয়েশিয়া গোয়েন্দা বিভাগ।

তথ্য অনুযায়ী কুয়ালালামপুরের পুত্রী হোটেল থেকে আরো ১৫ জনকে আটক করা হয়। এরপর কুয়ালালামপুরের টুইন টাওয়ারের পাশের এলপি নামের একটি ভবন থেকে অনন্য মামুনের সঙ্গে আরো ২৭ জনকে আটক করা হয়। অনন্য মামুনের সঙ্গে শ্যাম নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকেও আটক করা হয়। মালয়েশিয়াতে কনসার্টে অংশ নিতে যান সংগীত শিল্পী এইচএম রানা।

তিনি জানান, পাচার হওয়া বাংলাদেশিদের এলপি ভবনের ২০ তলায় রাখা হয়। ভবনটি ২৬ তলা। শিল্পীদের নিচের ফ্লোরগুলোর আবাসিক রুমে রাখা হয়। মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় ২৪শে ডিসেম্বর ভোর থেকেই ভবনটিতে পুলিশের অভিযান শুরু হয়। এর মধ্যে কয়েক জন শিল্পীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে ২৬ বাংলাদেশি আটক

তবে শিল্পীদের প্রোফাইল পরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। আমিও ওই দলের সদস্য ছিলাম। বুকিং বিনতাংয়ে বসবাসরত বাংলাদেশি আরমান চৌধুরী রবিন বলেন, বাংলাদেশিরা মানবপাচার করে এ বিষয়টি মালয়েশিয়ানরা এতদিন ভুলতে বসেছিল। কিন্তু চিত্রপরিচালকের আদম পাচারের কাহিনী স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে ফলাও করে প্রচার হয়েছে।

তাই বাংলাদেশি পরিচয় দিতে মাঝে মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশি দেখলেই এখন টিপ্পনী কাটছে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। গত দুইদিন ধরে বাংলাদেশিদের কাজে নিতে ভয় পাচ্ছে মালিকরা। সব মিলিয়ে মালয়েশিয়াতে দুর্দশায় আছেন বাংলাদেশিরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মালয়েশিয়ায় দুর্দশায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা

আপডেট টাইম : ০৫:১৬:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানবপাচারের অভিযোগে চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুনকে গ্রেপ্তারের পর থেকে দুর্দশায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা। এখন নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে দেশটিতে বৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের। এনিয়ে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। আপাতত মালয়েশিয়া সরকারের পদক্ষেপগুলোতে নজর রাখছে দূতাবাস। আগ বাড়িয়ে কিছুই করছেন না তারা। মালয়েশিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বলেন, চিত্রপরিচালক গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরা শুনেছি।

এখনো সরকারের তরফ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। জানানোর পর করণীয় ঠিক করা হবে। তিনি বলেন, আদম পাচার ঘটনায় একটি দেশের নাম ঘুরেফিরে মিডিয়াতে আসলে কিছুটা তো সমস্যা হয়। এ ধরনের অনুষ্ঠানে গিয়ে কেউ গ্রেপ্তার হলে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। এজন্য সবাইকে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ নাইটস’ নাম দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আদম পাচার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দলে ‘সিনেমাটিক বাংলাদেশি নাইটস’ নামের কনসার্টে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে ৪৮ জনের একটি দল মালয়েশিয়া যায়। ওই দলে ছিলেন তারকা কণ্ঠশিল্পী, ব্যান্ড, নির্মাতা এবং চিত্রনায়ক-নায়িকা। এর বাইরে আরো ৫৭ ব্যক্তিকে শিল্পী সাজিয়ে ভিসা করে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা করে নেয়া হয়।

কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টে নামার পর থেকেই বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট ও ভিসায় গরমিল পাওয়া যায়। তাই ইমিগ্রেশনের সময়ই ১৫ জনকে আটক করে স্থানীয় গোয়েন্দা পুলিশ। তাদেরকে আটকের পর দোভাষীর সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মালয়েশিয়া গোয়েন্দা বিভাগ।

তথ্য অনুযায়ী কুয়ালালামপুরের পুত্রী হোটেল থেকে আরো ১৫ জনকে আটক করা হয়। এরপর কুয়ালালামপুরের টুইন টাওয়ারের পাশের এলপি নামের একটি ভবন থেকে অনন্য মামুনের সঙ্গে আরো ২৭ জনকে আটক করা হয়। অনন্য মামুনের সঙ্গে শ্যাম নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকেও আটক করা হয়। মালয়েশিয়াতে কনসার্টে অংশ নিতে যান সংগীত শিল্পী এইচএম রানা।

তিনি জানান, পাচার হওয়া বাংলাদেশিদের এলপি ভবনের ২০ তলায় রাখা হয়। ভবনটি ২৬ তলা। শিল্পীদের নিচের ফ্লোরগুলোর আবাসিক রুমে রাখা হয়। মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় ২৪শে ডিসেম্বর ভোর থেকেই ভবনটিতে পুলিশের অভিযান শুরু হয়। এর মধ্যে কয়েক জন শিল্পীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে ২৬ বাংলাদেশি আটক

তবে শিল্পীদের প্রোফাইল পরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। আমিও ওই দলের সদস্য ছিলাম। বুকিং বিনতাংয়ে বসবাসরত বাংলাদেশি আরমান চৌধুরী রবিন বলেন, বাংলাদেশিরা মানবপাচার করে এ বিষয়টি মালয়েশিয়ানরা এতদিন ভুলতে বসেছিল। কিন্তু চিত্রপরিচালকের আদম পাচারের কাহিনী স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে ফলাও করে প্রচার হয়েছে।

তাই বাংলাদেশি পরিচয় দিতে মাঝে মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশি দেখলেই এখন টিপ্পনী কাটছে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। গত দুইদিন ধরে বাংলাদেশিদের কাজে নিতে ভয় পাচ্ছে মালিকরা। সব মিলিয়ে মালয়েশিয়াতে দুর্দশায় আছেন বাংলাদেশিরা।