হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার প্রধানের পদ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচন আয়োজন না করলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন বিএনপি নেতা শামসুজ্জমান দুদু।
আজ রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে সহায়ক সরকারের দাবিতে এমন আন্দোলন হবে, যা প্রধানমন্ত্রী ভাবতেই পারছেন না।’
‘আমাদের কী দায় পড়েছে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) অধীনে নির্বাচনে যেতে হবে। নির্বাচন হবে, আমরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। কিন্তু সেই নির্বাচনে আপনি সরকার প্রধান থাকতে পারবেন না। আগামীতে শুধু বিএনপি এবং ২০ দলের না, জনগণের আন্দোলন হবে,’ বলেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি’ নিয়ে এই সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ’।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন বা অন্য কোনো দাবিই আন্দোলন ছাড়া অর্জিত হয়নি। কিন্তু বিএনপি আন্দোলন লড়াই ছাড়া দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের মীমাংসা চাচ্ছে। একটা ভোটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক যাতে জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জবাব দিতে পারে।’
উন্নয়ন করে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় কেন, সরকারের কাছে সেই প্রশ্ন তুলে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য পরিণতি এবং দলটি সংকটকালীন পরিস্থিতিতে পড়লে নেতা-কর্মীদের রাজপথে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান শামসুজ্জামান দুদু।
‘বেগম জিয়ার জেল হবে কি হবে না, এটা নিয়ে একটা আলোচনা আছে। আমরা কেউ কেউ মনে করছি জেল হয়ে গেলে দেশে তোলপাড় কিছু হয়ে যাবে। সরকারও এটা চিন্তা করে। আমরা রাস্তায় না নামলে তোলপাড় হবে কী করে? ফ্যাসিবাদের কাজ হচ্ছে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। ফ্যাসিবাদের কাজ হলো মানুষকে ঘরের বাহিরে না আনা। এটাকে ভাঙতে হবে। এই ভাঙতে পারা মানেই হলো নির্বাচনে জয়লাভ করা। এজন্য কত রক্তপাত হবে, কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কতজন বন্দি হবে, এটা জানি না। কত দিনে শেষ হবে এটাও বলা মুশকিল। এই জন্য যদি আমরা রাস্তায় না নামি শেষটা হবে কী করে?’
নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তবর পর ‘ভালো নির্বাচনের’ সুযোগ নেই বলেও মনে করেন তিনি।
‘প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায়, যে ভঙ্গিতে, যে শব্দে কথা বলেছেন, তাতে বুঝা যায় এ দেশে ভালো কোনো নির্বাচনের সুযোগ নাই। তিনি আবারো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা আরেকটি নির্বাচন করবেন বলে মাইন্ড সেট-আপ করেছেন, এটি আমার ধারণা,’ বলেন দুদু।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আ স ম মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতউল্লাহ, জিনাফ সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।