হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুষ্টিয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তামাক চাষ। চাষিরা অধিক লাভের আশায় তামাক চাষে ঝুঁকছেন। ট্যোবাকো কোম্পানিগুলো অগ্রিম টাকা দিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করার কারণেই তামাক চাষে বেশি আগ্রহ পাচ্ছেন কৃষকরা।
জেলার বিভিন্ন স্থানে মাঠের পর মাঠ। তামাক লাগানোর জন্য জমি চাষ, জমিতে লাইন টানা, তামাক লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখাকার কৃষকরা। শাক-সবজি আবাদ করার জমিতেও চলছে তামাক লাগানোর কাজ। ধান কাটার ভরা মৌসুম হলেও তামাক লাগানোর কাজে দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না কৃষক। কুষ্টিয়ার মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলার বিস্তৃণ জমিতে তামাকের চাষ বেড়ে যাওয়ায় ফসলি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন, বীজ-সার-কীটনাশক ট্যোবাকো কোম্পানিগুলো আমাদের সরবরাহ করে থাকেন। এছাড়া উৎপাদনের পর ওই তামাক কোম্পানিগুলোই ক্রয় করে। এ ফসলে বারতি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না কৃষকদের।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধবইল ইউনিয়নের স্কুলপড়ার তামাক চাষি জাবের আলী বলেন, ‘তামাকের টাকা দিয়ে তিন বছর আগে বাড়িতে ইটের চার রুমের একটা ঘর করে ছিলাম। তামাক আবাদ বাদ দিয়ে ছিলাম। কিন্তু এবার আবার তামাক আবাদে ফিরে আসতে হলো। বাড়িতে ঘরের কাজ এখনো শেষ করতে পারিনি। আশা করছি কোনো বিপদ না আসলে তামাক আবাদ ভালোভাবে ঘরে তুলতে পারলেই ঘরের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। অন্য ফসল আবাদ করে লাভ হয় না তাই বাধ্য হয়ে তামাক চাষ করছি।’
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওয়াপড়া গ্রামের তামাক চাষি সেলিম আহমেদ বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রম হলেও তামাক আবাদ করে ভালো লাভ হয়। অন্য ফসল আবাদ করে তেমন একটা লাভ হয় না। তাই বাধ্য হয়ে তামাক অতি যত্নে আবাদ করছি। ৯০ দিনের তামাক চাষে অনেকের ভাগ্য বদলে গেছে। তাই এলাকার মানুষ কঠোর পরিশ্রমের কষ্ট মনে করেন না। তবে এ কথা সত্য যারা আগে তামাক আবাদ করেছে তাদের অনেকেই এখন অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছেন।’
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘তামাক না করার জন্য আমরা এলাকায় এলাকায় কৃষি অফিস থেকে সভা সেমিনার করছি। উদ্বুদ্ধ করছি অন্য ফসল আবাদ করার জন্য এই যেমন মসুর, সরিষা, গম। তামাক আবাদ করার ক্ষেত্রে কৃষক যে পরিমাণ পরিশ্রম করেন ও সময় ব্যয় করে তা যদি অন্য ফসলে ব্যয় করেন কৃষক লাভবান হবেন।