বর্তমান সরকার রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে একটি বৃত্তাকার সড়ক এবং পার্শ্ব দিয়ে নদীপথে নৌরুটসহ ‘ঢাকা সার্কুলার রুট’ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সংসদে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা সার্কুলার রুট’ আবদুল্লাহপুর থেকে শুরু হয়ে ধউর-বিরুলিয়া-গাবতলী-বাবুবাজার-সদরঘাট-ফতুল্লা-চাষাড়া-সাইনবোর্ড-সিমরাইল-ডেমরা-পূর্বাচল সড়ক-তেরমুখ হয়ে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৪ লেন বিশিষ্ট ও ৫ মিটার বিভাজকসহ নির্মাণ করা হবে। এ রুট বাস্তবায়ন বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, ডেমরা থেকে তেরমুখ পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার অংশে বর্তমানে কোন সড়ক বা বাঁধ না থাকায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে লিড এজেন্সি করে সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ঢাকা সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম ইস্টার্ন বাইপাস বহুমুখী প্রকল্প শীর্ষক প্রকল্পটি ঢাকা সার্কুলার রুট: ফেজ-১ আখ্যায়িত করে একটি পিডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, অবশিষ্ট ৬৭ কিলোমিটার অংশকে ঢাকা সার্কুলার রুট, ফেজ-২ হিসেবে নামকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মূলত এই ৬৭ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পশ্চিম অংশের বেড়িবাঁধ। বর্তমানে তেরমুখ থেকে আবদুল্লাহপুর অংশে এক লেন বিশিষ্ট সড়ক এবং আবদুল্লাহপুর থেকে সোয়ারিঘাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের অংশে সড়ক ও জনপথের ২ লেন বিশিষ্ট সড়ক বিদ্যমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৃত্তাকার সড়কের মূল কম্পোনেন্ট হলো বিদ্যমান সড়কগুলোকে ধীরগতি সম্পন্ন যানবাহনের জন্য আলাদা ২ লেন সম্পন্ন সার্ভিস রোডসহ ৪ লেন সড়কে উন্নীত করা এবং সড়কের মাঝে ৫ মিটার বিশিষ্ট বিভাজকের সংস্থান রাখা এবং গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনে ফ্লাইওভার নির্মাণের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করা।
শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক বিভাজনের ওপর এলিভেটেড ট্রেন লাইন স্থাপন এবং তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু পুনঃখননের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নৌরুট চালু করা। বৃত্তাকার সড়কের ২য় ফেজ-এর ৬৭ কিলোমিটার সড়ক অংশে ডিটেইলড ইস্টিমেট প্রস্তুত করার লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন সড়ক ও জনপথ অধিদফতর টপোগ্রাফিকেল সার্ভের কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এই কাজ সম্পাদন একটি দীর্ঘ মেয়াদি ও ব্যয়বহুল কার্যক্রম। এ কাজের মাধ্যমে ঢাকার যানজট, জলাবদ্ধতা ও নদী দূষণ দূর করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।