ঢাকা ০৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টার্কি পালনে সফল সখীপুরের কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৮:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৮৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শখের বসে টার্কি পালন করে এখন সফলতার মুখ দেখছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিন। সাংসারিক কাজের ফাকে টার্কি খামার গড়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। আলাউদ্দিনের টার্কি খামারের সফলতা দেখতে ঢাকা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই শত শত টার্কি খামের উৎসাহী লোকজন ছুটে আসছেন। উপজেলার বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক শামসুল হকের ছেলে মো. আলাউদ্দিন নিজ বসতবাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে চার শতাধিক আমেরিকান টার্কি মুরগী নিয়ে গড়ে তুলেছেন টার্কি খামার। টার্কি মুরগী বিক্রি, বাচ্চা উৎপাদন ও ডিম বিক্রি করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। টার্কি মুরগীর পাশাপাশি বসতবাড়িতে তিনি তিতি মুরগী, ফ্রান্সের দেশি মুরগী, দেশি ও বিদেশি  জাতের কবুতরের খামারও গড়ে তুলেছেন। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার। সরেজমিনে আলাউদ্দিনের টার্কি খামারে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, আলাউদ্দিন নিজ গ্রামে ২০১৫ সালে ২০ শতাংশ  জায়গার ওপর “আলাউদ্দিন টার্কি ফার্ম ”নামে একটি টার্কি মুরগীর খামার গড়ে তোলেন। প্রথমে তিনি ঢাকা থেকে ২০০ বাচ্চা এনে খামার শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর খামারে ৪’শ টার্কি মুরগী রয়েছে। তিনি জানান, প্রতিটি টার্কি মুরগী একটানা ২২টি পর্যন্ত ডিম দেয়।  টার্কি মুরগী দানাদার খাদ্য ছাড়াও কলমির শাক, বাঁধাকপি ও সবজি জাতীয় খাবার খায়। ৪ মাস পর থেকে খাওয়ার উপযোগী হয় এটি। একটি  টার্কি মুরগীর ওজন ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি টার্কি মুরগীর মাংস বিক্রি হয় ৬’শ থেকে ৭’শ টাকায়। ১ মাস বয়সী বাচ্চা বিক্রি হয় জোড়া প্রতি প্রায় তিন হাজার টাকা। প্রতি হালি ডিম বিক্রি করা হচ্ছে ৮’শ টাকা। সুস্বাদু এই মুরগীর রোগ বালাই তেমন হয়না। এর মাংসে অধিক পরিমানে প্রোটিন ও কম পরিমানে চর্বি রয়েছে। অনেকটা খাসির মাংসের মতই এ মুরগীর মাংসের স্বাদ হওয়ায় এটির মাংসও বাজারে একই দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আলাউদ্দিন বলেন, প্রথমে টেলিভিশনে বিভিন্ন সময় টার্কি মুরগীর ওপর প্রতিবেদন দেখে আমার উৎসাহ বেড়ে যেতো। ২০১৫ সালের শেষের দিকে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে ঢাকা থেকে  প্রথমে ২’শ টার্কির বাচ্চা এনে খামার গড়ে তুলি। সারা দেশে বাণিজ্যিকভাবে এই খামারের পরিকল্পনা ছড়িয়ে দিতে তিনি নিজেও এখন অন্যদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ও উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি মনে করেন, বেকারত্ব দূর করতে টার্কি পালন খুবই ভালো পরিকল্পনা। তিনি তাঁর ফার্মের পরিধি ও বাচ্চা ফুটানোর ব্যবস্থা করতে সরকারি ঋণ সহায়তার দাবি করেন। সখীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওকিল উদ্দিন  জানান, বাংলাদেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশে পশু-পাখি পালন করা অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজ। আলাউদ্দিনের দেখাদেখি সখীপুরে এখন অনেকেই টার্কি মুরগী পালনে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। রোগবালাই ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। টার্কি একটি বড় আকারের গৃহ পালিত পাখি। টার্কি প্রাণী সেরকম একটি সহনশীল জাত, যেকোন পরিবেশ দ্রুত এরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

টার্কি পালনে সফল সখীপুরের কৃষক

আপডেট টাইম : ১২:৩৮:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শখের বসে টার্কি পালন করে এখন সফলতার মুখ দেখছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিন। সাংসারিক কাজের ফাকে টার্কি খামার গড়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। আলাউদ্দিনের টার্কি খামারের সফলতা দেখতে ঢাকা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই শত শত টার্কি খামের উৎসাহী লোকজন ছুটে আসছেন। উপজেলার বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক শামসুল হকের ছেলে মো. আলাউদ্দিন নিজ বসতবাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে চার শতাধিক আমেরিকান টার্কি মুরগী নিয়ে গড়ে তুলেছেন টার্কি খামার। টার্কি মুরগী বিক্রি, বাচ্চা উৎপাদন ও ডিম বিক্রি করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। টার্কি মুরগীর পাশাপাশি বসতবাড়িতে তিনি তিতি মুরগী, ফ্রান্সের দেশি মুরগী, দেশি ও বিদেশি  জাতের কবুতরের খামারও গড়ে তুলেছেন। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার। সরেজমিনে আলাউদ্দিনের টার্কি খামারে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, আলাউদ্দিন নিজ গ্রামে ২০১৫ সালে ২০ শতাংশ  জায়গার ওপর “আলাউদ্দিন টার্কি ফার্ম ”নামে একটি টার্কি মুরগীর খামার গড়ে তোলেন। প্রথমে তিনি ঢাকা থেকে ২০০ বাচ্চা এনে খামার শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর খামারে ৪’শ টার্কি মুরগী রয়েছে। তিনি জানান, প্রতিটি টার্কি মুরগী একটানা ২২টি পর্যন্ত ডিম দেয়।  টার্কি মুরগী দানাদার খাদ্য ছাড়াও কলমির শাক, বাঁধাকপি ও সবজি জাতীয় খাবার খায়। ৪ মাস পর থেকে খাওয়ার উপযোগী হয় এটি। একটি  টার্কি মুরগীর ওজন ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি টার্কি মুরগীর মাংস বিক্রি হয় ৬’শ থেকে ৭’শ টাকায়। ১ মাস বয়সী বাচ্চা বিক্রি হয় জোড়া প্রতি প্রায় তিন হাজার টাকা। প্রতি হালি ডিম বিক্রি করা হচ্ছে ৮’শ টাকা। সুস্বাদু এই মুরগীর রোগ বালাই তেমন হয়না। এর মাংসে অধিক পরিমানে প্রোটিন ও কম পরিমানে চর্বি রয়েছে। অনেকটা খাসির মাংসের মতই এ মুরগীর মাংসের স্বাদ হওয়ায় এটির মাংসও বাজারে একই দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আলাউদ্দিন বলেন, প্রথমে টেলিভিশনে বিভিন্ন সময় টার্কি মুরগীর ওপর প্রতিবেদন দেখে আমার উৎসাহ বেড়ে যেতো। ২০১৫ সালের শেষের দিকে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে ঢাকা থেকে  প্রথমে ২’শ টার্কির বাচ্চা এনে খামার গড়ে তুলি। সারা দেশে বাণিজ্যিকভাবে এই খামারের পরিকল্পনা ছড়িয়ে দিতে তিনি নিজেও এখন অন্যদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ও উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি মনে করেন, বেকারত্ব দূর করতে টার্কি পালন খুবই ভালো পরিকল্পনা। তিনি তাঁর ফার্মের পরিধি ও বাচ্চা ফুটানোর ব্যবস্থা করতে সরকারি ঋণ সহায়তার দাবি করেন। সখীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওকিল উদ্দিন  জানান, বাংলাদেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশে পশু-পাখি পালন করা অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজ। আলাউদ্দিনের দেখাদেখি সখীপুরে এখন অনেকেই টার্কি মুরগী পালনে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। রোগবালাই ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। টার্কি একটি বড় আকারের গৃহ পালিত পাখি। টার্কি প্রাণী সেরকম একটি সহনশীল জাত, যেকোন পরিবেশ দ্রুত এরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।