ঢাকা ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির নিচে বীজতলা, দিশেহারা কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩৫০ বার

জুলাই-আগস্ট মাসের টানা বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ কারণে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলায় যে পরিমাণ বীজতলার প্রয়োজন, তা করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু যেসব বীজতলা করা হয়েছে তার অর্ধেক ডুবে গেছে পানির নিচে।

ডুবে যাওয়া এসব বীজতলার মধ্যে বেশ কিছু বীজতলার চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে চলতি বছর আমন চাষের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তিত এ জেলার কৃষকরা। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অশোক কুমার শর্মা জানান, কৃষকদের অনুকূলে আবহাওয়া থাকায় গত বছর পটুয়াখালী জেলায় ২ লাখ ৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিলো। যার বেশির ভাগ চাষ হয়েছিল প্রাকৃতিকভাবে জেগে ওঠা জেলার শতাধিক চরে। বাম্পার ফলন হওয়ায় গত বছর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে।

সে ধারাবাহিকতায় এবারও ২ লাখ হেক্টর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এজন্য বীজতলা করার প্রয়োজন ছিল ১৮ হাজার হেক্টর। এখন পর্যন্ত জেলায় ১৬ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত এবং ৪শ’ ৩৭ হেক্টর জমির বীজতলা পচে নষ্ট হয়েছে।

তিনি আরো জানান, প্রায় ষোল লাখ মানুষের এ জেলায় শতকরা ৪৫ দশমিক ৮৪ ভাগ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এখানে কৃষি জমির পরিমাণ সাড়ে ৫ লাখ একর। আমন চাষের লক্ষ পূরণে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন করে বীজতলা তৈরি হবে বলে দাবি করেন তিনি।

জেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগস্ট মাস শেষ হলেও আমনের ক্ষেত ২/৩ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকায় অধিকাংশ কৃষক চাহিদা মাফিক আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারছে না। এতে করে আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা।

লোহালিয়া এলাকার শাহজাহান মিয়া, বারেক মৃধা, আলমগীর হোসেনসহ একাধিক আমন চাষী বাংলানিউজকে জানান, ৩/৪বার চেষ্টা করেও বীজতলা করতে না পারায় আমন উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত তারা। অনেক স্থানে বীজতলা তৈরি করলেও পানিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো উপায় না পেয়ে সেই পানিতেই আবার বীজতলা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

বীজতলা তৈরির জন্য জমিকে জলাবদ্ধতা মুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে অনেক কৃষক বলেন, জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট নির্মাণ করা দরকার।

তবে, স্লুইসগেট নির্মাণের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পানির নিচে বীজতলা, দিশেহারা কৃষক

আপডেট টাইম : ১২:২১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জুলাই-আগস্ট মাসের টানা বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ কারণে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলায় যে পরিমাণ বীজতলার প্রয়োজন, তা করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু যেসব বীজতলা করা হয়েছে তার অর্ধেক ডুবে গেছে পানির নিচে।

ডুবে যাওয়া এসব বীজতলার মধ্যে বেশ কিছু বীজতলার চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে চলতি বছর আমন চাষের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তিত এ জেলার কৃষকরা। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অশোক কুমার শর্মা জানান, কৃষকদের অনুকূলে আবহাওয়া থাকায় গত বছর পটুয়াখালী জেলায় ২ লাখ ৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিলো। যার বেশির ভাগ চাষ হয়েছিল প্রাকৃতিকভাবে জেগে ওঠা জেলার শতাধিক চরে। বাম্পার ফলন হওয়ায় গত বছর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে।

সে ধারাবাহিকতায় এবারও ২ লাখ হেক্টর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এজন্য বীজতলা করার প্রয়োজন ছিল ১৮ হাজার হেক্টর। এখন পর্যন্ত জেলায় ১৬ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত এবং ৪শ’ ৩৭ হেক্টর জমির বীজতলা পচে নষ্ট হয়েছে।

তিনি আরো জানান, প্রায় ষোল লাখ মানুষের এ জেলায় শতকরা ৪৫ দশমিক ৮৪ ভাগ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এখানে কৃষি জমির পরিমাণ সাড়ে ৫ লাখ একর। আমন চাষের লক্ষ পূরণে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন করে বীজতলা তৈরি হবে বলে দাবি করেন তিনি।

জেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগস্ট মাস শেষ হলেও আমনের ক্ষেত ২/৩ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকায় অধিকাংশ কৃষক চাহিদা মাফিক আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারছে না। এতে করে আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা।

লোহালিয়া এলাকার শাহজাহান মিয়া, বারেক মৃধা, আলমগীর হোসেনসহ একাধিক আমন চাষী বাংলানিউজকে জানান, ৩/৪বার চেষ্টা করেও বীজতলা করতে না পারায় আমন উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত তারা। অনেক স্থানে বীজতলা তৈরি করলেও পানিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো উপায় না পেয়ে সেই পানিতেই আবার বীজতলা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

বীজতলা তৈরির জন্য জমিকে জলাবদ্ধতা মুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে অনেক কৃষক বলেন, জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট নির্মাণ করা দরকার।

তবে, স্লুইসগেট নির্মাণের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।