সবজি চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতকালীন সবজি আগাম বাজারে তুলতে পারলেই বেশি লাভ, আর একটু দেরি হলেই বাজারে বেচতে হয় পানির দরে। এ কারণে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। লক্ষ্য একটাই ভরা মৌসুমের আগেই বেশি দামের বাজার ধরা।
নিকলী উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নিকলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৩০২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে বেসরকারিভাবে এ হিসাব আরও বেশি হবে বলে কৃষকেরা ধারণা দেন।

উপজেলার নিকলী সদর ইউনিয়নের বড় হাওর, সিংপুর হাওর , ছাতিরচর হাওর ও দামপাড়া ইউনিয়নের হাওরে শাকসবজির চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত। এসব হাওরে মুলা, লালশাক, পালংশাক, ঢেড়শ, বেগুন, ফুলকপি, বাধাঁকপি, টমেটো, পুঁইশাক, ধনেপাতা, রসুন, পেয়াজ, করলা ও কাঁচামরিচের চাষ হয়। গত সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার নিকলী সদরের বড় হাওর, দামপাড়া হাওর, জারুইতলা হাওর, গুরুই হাওরের কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সবজি চাষিরা শীতের সবজির চারা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসময় কৃষকদেরকে জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপন করতে দেখা গেছে। আবার কেউ আগাছামুক্ত করতে জমিতে নিড়ানি দিচ্ছেন।

নিকলী সদর ইউনিয়নের বড়হাটি গ্রামের চাষি আব্দুল মিয়ার (৫৫) সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এবার তিনি ৯০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে পুরো জমিতেই বিভিন্ন ধরণের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছেন। একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হয় ৩৫০ টাকারও বেশি তাই নিজেই ক্ষেতের নিড়ানির কাজে নেমে পড়েছেন।
দামপাড়া গোয়ালহাটি গ্রামের চাষি আহাদ আলী (৫০) জানান, তিনি এবার ৩৫ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চাষ করছেন। শীতের আগে শীতকালীন সবজি বাজারে তোলা হলে ওই সবজির চাহিদা থাকে বেশি। ফলে সেগুলোর দামও বেশি পাওয়া যায়। তিনি আশা করছেন শীত আসার আগেই তিনি ফুলকপি বাজারে বিক্রির জন্য আনতে পারবেন।

একই গ্রামের আমির উদ্দিন (৫৫) জানান, তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে এবার আলুর বদলে বেগুন চাষ করছেন। শীত আসার আগেই বেগুন বাজারে আনতে পারবেন। তখন প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হবে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে, যা শীতের সময় বাজারে ওই বেগুন বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে।
নিকলী সদর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মীর আব্দুল হান্নান জানান, নিকলীর চাষিদের বিশেষ নজর এখন শীতকালীন সবজির দিকে। হাওরের পানি কমে যাওয়ার পর থেকেই চাষিরা কোমরে গামছা বেঁধে মাঠে নেমেছন। কে কতো ভালো ফসল ফলাতে পারে এর প্রতিযোগিতা রয়েছে চাষিদের মধ্যে। এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া সবজি চাষের উপযোগী রয়েছে।

নিকলী উপজেলায় ৩০২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষাবাদ হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো থাকলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছি। এ লক্ষ্যে আমরা স্থানীয় কৃষকদের নানা রকম পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর