ঢাকা ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেনাফ চাষে দূর হবে কৃষকের অভাব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২০:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৫৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কেনাফ আঁশ জাতীয় ফসল। এ ফসলের সাথে মানুষের তেমন পরিচয় নেই। পাটের মত লম্বা, ঢেঁড়সের পাতার মত পাতা বিশিষ্ট কেনাফ। উচ্চতা সাধারণ পাটের মত হলেও এর কাণ্ডগুলো তুলনামূলক মোটা। পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবেলা করে বেড়ে উঠতে পারে এ আঁশ ফসল কেনাফ।
রংপুরের কাউনিয়ার গোদাই চরের কেনাফ চাষী ফজল আলী, মজিবর মিয়া, লতিফ মিয়া জানান, কেনাফ চাষে নিড়ানি দেয়া লাগে না। একবার সার প্রয়োগ করলেই হয়ে যায়। উৎপাদন খরচ কম। এ ছাড়া ফলনও ভালো, আঁশের মানও ভালো পাওয়া যায়।

কেনাফের পাতা পড়ার সাথে সাথে ঘাস নষ্ট হয়ে যায়। আর পাতা পঁচে জমিতে সার হয়। এতে করে পরবর্তী যে ফসল আবাদ করা হয় সেখানে সার কম লাগে ও ফসলও ভালো হয়।
রংপুরের কাউনিয়াসহ উত্তরাঞ্চলের চরের ১’শ হেক্টর জমিতে এবার কেনাফের পরীক্ষামূলক চাষ হয়েছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট -এর উদ্ভাবিত এ আঁশ জাতীয় ফসল ইতোমধ্যেই কৃষকদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।

রংপুর আঞ্চলিক পাট গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আবুল ফজল মোল্লা বলেন,  অনবাদী, অনুর্বর জমিতে অল্প পরিচর্যা ও স্বল্প খরচে ১১০ দিন থেকে ১২০ দিনে কাটলে কেনাফের ভালো ফলন পাওয়া যায়।
কেনাফের খড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বীজ হতে ৭ থেকে ১৩ শতাংশ ওষুধি গুনাগুন সম্পন্ন তেল পাওয়া যায়। চর এলাকায় পাট করলে প্রতি বছর বন্যায় মরে যায়। কেনাফ বন্যার পানিতেও বেঁচে থাকে। এর উৎপাদন ভালো বলে কৃষকদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

মাটির স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে পাটের মতো কেনাফের গুরুত্বও অপরিসীম। কেনাফ ফসলের মূল মাটির ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি বা তার বেশি গভীরে প্রবেশ করে মাটির উপরি স্তরে সৃষ্ট শক্ত ‘প্লাউপ্যান’ ভেঙে দেয়, এর নিচে তলিয়ে যাওয়া অজৈব খাদ্য উপাদান সংগ্রহ করে মাটির ওপরের স্তরে মিশিয়ে দেয়।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১০০ দিন সময়ের মধ্যে প্রতি হেক্টর কেনাফ ফসল বাতাস থেকে প্রায় ১৪ দশমিক ৬৬ টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে এবং ১০.৬৬ টন অক্সিজেন নিঃসরণ করে বায়ুমন্ডলকে বিশুদ্ধ ও অক্সিজেনসমৃদ্ধ রাখে। কেনাফ আঁশ থেকে কাগজের পাল্প বা মণ্ড তৈরি করে নিউজপ্রিন্ট মিলের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার, কেনাফ খড়ি হার্ডবোর্ড বা পার্টেক্স মিলের কাঁচামাল ও চারকোল তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য।
তাছাড়া কেনাফ খড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার এবং বীজ থেকে ওষুধি গুণসম্পন্ন তেল পাওয়া যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কেনাফ চাষে দূর হবে কৃষকের অভাব

আপডেট টাইম : ০৩:২০:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কেনাফ আঁশ জাতীয় ফসল। এ ফসলের সাথে মানুষের তেমন পরিচয় নেই। পাটের মত লম্বা, ঢেঁড়সের পাতার মত পাতা বিশিষ্ট কেনাফ। উচ্চতা সাধারণ পাটের মত হলেও এর কাণ্ডগুলো তুলনামূলক মোটা। পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবেলা করে বেড়ে উঠতে পারে এ আঁশ ফসল কেনাফ।
রংপুরের কাউনিয়ার গোদাই চরের কেনাফ চাষী ফজল আলী, মজিবর মিয়া, লতিফ মিয়া জানান, কেনাফ চাষে নিড়ানি দেয়া লাগে না। একবার সার প্রয়োগ করলেই হয়ে যায়। উৎপাদন খরচ কম। এ ছাড়া ফলনও ভালো, আঁশের মানও ভালো পাওয়া যায়।

কেনাফের পাতা পড়ার সাথে সাথে ঘাস নষ্ট হয়ে যায়। আর পাতা পঁচে জমিতে সার হয়। এতে করে পরবর্তী যে ফসল আবাদ করা হয় সেখানে সার কম লাগে ও ফসলও ভালো হয়।
রংপুরের কাউনিয়াসহ উত্তরাঞ্চলের চরের ১’শ হেক্টর জমিতে এবার কেনাফের পরীক্ষামূলক চাষ হয়েছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট -এর উদ্ভাবিত এ আঁশ জাতীয় ফসল ইতোমধ্যেই কৃষকদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।

রংপুর আঞ্চলিক পাট গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আবুল ফজল মোল্লা বলেন,  অনবাদী, অনুর্বর জমিতে অল্প পরিচর্যা ও স্বল্প খরচে ১১০ দিন থেকে ১২০ দিনে কাটলে কেনাফের ভালো ফলন পাওয়া যায়।
কেনাফের খড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বীজ হতে ৭ থেকে ১৩ শতাংশ ওষুধি গুনাগুন সম্পন্ন তেল পাওয়া যায়। চর এলাকায় পাট করলে প্রতি বছর বন্যায় মরে যায়। কেনাফ বন্যার পানিতেও বেঁচে থাকে। এর উৎপাদন ভালো বলে কৃষকদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

মাটির স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে পাটের মতো কেনাফের গুরুত্বও অপরিসীম। কেনাফ ফসলের মূল মাটির ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি বা তার বেশি গভীরে প্রবেশ করে মাটির উপরি স্তরে সৃষ্ট শক্ত ‘প্লাউপ্যান’ ভেঙে দেয়, এর নিচে তলিয়ে যাওয়া অজৈব খাদ্য উপাদান সংগ্রহ করে মাটির ওপরের স্তরে মিশিয়ে দেয়।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১০০ দিন সময়ের মধ্যে প্রতি হেক্টর কেনাফ ফসল বাতাস থেকে প্রায় ১৪ দশমিক ৬৬ টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে এবং ১০.৬৬ টন অক্সিজেন নিঃসরণ করে বায়ুমন্ডলকে বিশুদ্ধ ও অক্সিজেনসমৃদ্ধ রাখে। কেনাফ আঁশ থেকে কাগজের পাল্প বা মণ্ড তৈরি করে নিউজপ্রিন্ট মিলের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার, কেনাফ খড়ি হার্ডবোর্ড বা পার্টেক্স মিলের কাঁচামাল ও চারকোল তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য।
তাছাড়া কেনাফ খড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার এবং বীজ থেকে ওষুধি গুণসম্পন্ন তেল পাওয়া যায়।