জাকির হোসাইনঃ কার্তিক থেকেই শুরু হেমন্তকাল। এই হেমন্তে হাওর এলাকায় বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। আমাদের দেশে হাওর আছে- কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলায়।
হেমন্তে হাওর থেকে জল সরতে শুরু করে। এ সময় হাওরের যেদিকে যাবেন দুই চোখ খুঁজে পাবেন শুধু সবুজের রূপ। এপার থেকে ওপার দেখা যায় না।
মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা : কিশোরগঞ্জের এ তিন উপজেলাই হাওর। ঢাকা থেকে সড়ক পথে বাসে নয়তো রেলে কিশোরগঞ্জ নেমে অটোরিকশায় করে চামড়া বন্দরে আসুন।
এখানে ট্রলার, লঞ্চ, নৌকাসহ সবই রয়েছে মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ যাওয়ার। লঞ্চ সরাসরি ইটনা, আজমিরীগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, যায়। ট্রলার ছাড়ে আধা ঘণ্টা পর পর। প্রথমে আসুন মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রামে। প্রথম এসে দেখবেন মিঠামইন উপজেলাকে । চারদিকে বাঁধ দিয়ে বেশ সুন্দর করা হয়েছে মিঠামইন সদর।
এখানে রাত যাপন করার জন্য ডাকবাংলো ও ভাল মানের হোটেল আছে । এ ছাড়া অনুমতি নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দফতরের গেস্ট হাউসে থাকা যাবে। মিঠামইনে বিশাল ঐতি্য্য কাঠের বাজার আছে ।
এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতেই হবে। মনে পড়বে—‘হায় হেমন্তলক্ষ্মী, তোমার নয়ন কেন ঢাকা/হিমের ঘন ঘোমটাখানি ধুমল রঙে আঁকা/সন্ধ্যা প্রদীপ তোমার হাতে—মলিন হেরি কুয়াশাতে/কণ্ঠে তোমার বাণী যেন করুণ—বাষ্পে মাখা’ কবিতার এই চরণগুলো।
হেমন্তে মিঠামইনের হাওরে কোথাও কোথাও পানি আছে। সেখানে নৌকায় উঠে দূরে বহু দূরে চলে যান। নয়ন ভরে দেখে নেন হাওরের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। এখানে দেখবেন প্রায় প্রতিটি বাড়ির চারদিকে ঢেউ খেলছে পানি আর পানি।
চামড়া বন্দর থেকে সরাসরি লঞ্চে ইটনা, আজমিরীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ যাওয়া যাবে। ইটনা যেতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টা, সুনামগঞ্জ যেতে সময় লাগবে চার ঘণ্টা,। ইটনার ধনপুরের হাওর, উত্তরে শনির হাওর। আবার ইটনা থেকে লঞ্চ ও ট্রলারে করে সুনামগঞ্জের শুল্লা ও দিরাইয়ের দিকে যায়। আজমিরীগঞ্জ হইতে কাকাইছেও বাজার, কাটখাল বাজার, আব্দুল্লাপুর, আদমপুর, অষ্টগ্রাম হয়ে ভৈরবে নৌভ্রমণে লঞ্চে যাওয়া যায়।
এ ছাড়া নেত্রকোনার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট লঞ্চ ও ট্রলার দিয়ে যাতায়াত করা যায়। সবগুলো এলাকাতে রাত যাপন করার জন্য ডাকবাংলো ও থাকার হোটেল পাবেন। হেমন্তকালে এখানের হাওর থেকে পানি সরে যায়।