হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুদেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে আগেই। এবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো কঠিন পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউস সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসে মদদদাতা রাষ্ট্রের তকমা দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েই এখন আলোচনা চলছে বলে গতকাল শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার।
আগামী সপ্তাহে ১০ দিনের এশিয়া সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটিই তার প্রথম এশিয়া সফর। চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে গিয়ে সেখানকার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। তার ঠিক আগে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এত বড় পদক্ষেপের ভাবনা-চিন্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন হুশিয়ারি সত্ত্বেও একের পর এক পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। এমনকি উত্তর কোরিয়া থেকে সরাসরি আমেরিকার কয়েকটি শহরকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন কিম।
শাস্তি হিসেবে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। এমনকি জাতিসংঘও সরব হয়েছে কিমের বিরুদ্ধে। আর্থিকভাবে উত্তর কোরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে ক্রমাগত। তবু থামানো যায়নি কিমকে।
সাংবাদিক সম্মেলনে কিমের সৎভাই কিম জং- ন্যামের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন ম্যাকমাস্টার। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে খুন হন ন্যাম। ম্যাকমাস্টার বলেছেন, ‘একটি দেশের সরকার যখন নার্ভ গ্যাস ব্যবহার করে প্রকাশ্য বিমানবন্দরে কাউকে খুন করে এবং যিনি খুন হয়েছেন, তারই ভাই নিজে সেই খুনের নেপথ্যে থাকেন, তাকে সন্ত্রাসবাদ ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না। সুতরাং আমরা উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসবাদের মদদদাতার তকমা দেওয়া নিয়ে ভাবছি। খুব শিগগিরই আপনারা বাকিটা জানতে পারবেন।’
একই সঙ্গে আর্থিকভাবে উত্তর কোরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিশ্বের বাকি দেশগুলোর সঙ্গে তারা আলোচনা চালাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ম্যাকমাস্টার। প্রসঙ্গক্রমে এসেছে চীনের কথাও। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে বেইজিংয়ের বন্ধুত্বের কথা অজানা নয়। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু পরীক্ষা নিয়ে প্রথম দিকে বেইজিং নীরব থাকলেও পরে মুখ খুলেছে তারা। কিমকে সংযত থাকার বার্তাও দিয়েছে বেইজিং। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বক্তব্য, ‘চীন আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয়। তবু বেইজিংয়ের এ নিয়ে আরো কিছু করা দরকার। আসলে চীনের এটা বোঝা উচিত, আমেরিকা নিজের জন্য কোনো উপকার চাচ্ছে না। উত্তর কোরিয়ার সামনে গোটা বিশ্বই এখন বিপন্ন।’
একদিকে, আমেরিকা যখন পিয়ংইয়ংকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে, উল্টো তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অভিযোগ এনেছে উত্তর কোরিয়া। গত শুক্রবার কোরীয় উপদ্বীপের ওপর দিয়ে মহড়া চালিয়েছে এক জোড়া মার্কিন বোমারু বিমান। মার্কিনবাহিনীর সঙ্গে মহড়া দিয়েছে জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনীও। গুয়ামে মার্কিন বিমানঘাঁটি অ্যান্ডারসন থেকে বোমারু বিমান উড়ে যাওয়ার খবর স্বীকার করেছে আমেরিকাও। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থার বক্তব্য, এভাবে গোটা কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনার পারদ চড়াতে চাইছে ওয়াশিংটন। হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে তাদের সার্বভৌমত্বেও। তবে মার্কিন বিমানবাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনো আগ্রাসন নয়, রুটিন মাফিক মহড়া চালানো হয়েছে। যাতে আমেরিকাকে সাহায্য করেছে তার দুই বন্ধু দেশ, জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়া।