ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটারদের আস্থা অর্জনে দুই দলের নতুন মুখ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৫৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃহত্তর সিলেটের প্রবেশদ্বার পাহাড়, টিলা আর চা বাগানে ঘেরা অনুপম সৌন্দর্যের লীলাভূমি হবিগঞ্জ। জেলার চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে হবিগঞ্জ-৪ আসন গঠিত। আসনটিতে এবার শোনা যাচ্ছে প্রায় অর্ধডজন নতুন মুখের কথা। এরা সবাই ক্লিন ইমেজের অধিকারী। তাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ভোটারদের। রাজনীতিতে নতুন হলেও এরা সবাই জাতীয়ভাবে বেশ পরিচিত। নতুন মুখ হিসেবে আলোচনায় আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন আহমেদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীসহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

এবার সম্ভাব্য প্রার্থী প্রায় দেড় ডজন। বিএনপি থেকে চারজন মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন দুইজন। তবে আলোচনায় আছেন দলটির জেলা আহ্বায়ক শিল্পপতি আলহাজ আতিকুর রহমান আতিক। তবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে আওয়ামী লীগ।

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ ছাড়া আলোচনায় আছেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত এনামুল হক মোস্তুফা শহীদের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতা নিজামুল হক মোস্তুফা শহীদ রানা, সাবেক মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম (বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত), শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি) মো. আবদুল হাইয়ের ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী আরিফুল হাই রাজিব, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট এম আকবর হোসেন জিতু, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. মুসলিম এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মিসির আলীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে প্রচারণায় রয়েছেন কয়েকজন প্রার্থী।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মো. ফয়সল মাঠে কাজ করছেন। তার ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে নিজস্ব একটি ভোটব্যাংক রয়েছে বলে দাবি তার সমর্থকদের। সাবেক এমপি ও সাবেক ছাত্রনেত্রী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার শিপার নামও শোনা যাচ্ছে নেতাকর্মীদের মুখে। আলোচনায় রয়েছে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরীর নাম। তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে।

প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাজাহান ও জামায়াতের সাবেক উপজেলা আমির মাওলানা মুখলিছুর রহমান। তবে সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল ইতোপূর্বে একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বারবার পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে। এ আসনে জাতীয় পর্টির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, জেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক শিল্পপতি মো. কাউছার-উল গনির নাম শোনা গেলেও হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আতিকুর রহমান আতিককে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

১৯৭০-এর নির্বাচন থেকে শুরু করে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বারবার বিজয়ী হয়েছেন। সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তুফা শহীদ ছয়বার এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি প্রায় ৩৪ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সাবেক এমপি প্রয়াত মাওলানা আসাদ আলীর ছেলে অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুবার জাতীয় পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার (বর্তমানে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এবং ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত) এ আসনে বিজয়ী হয়ে কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মুহিবুল হাসান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দলবিহীন নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ তানভীরের সঙ্গে খুব সহজেই নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর সমর্থকদের দাবি-তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভোটারদের আস্থা অর্জনে দুই দলের নতুন মুখ

আপডেট টাইম : ১২:১৮:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃহত্তর সিলেটের প্রবেশদ্বার পাহাড়, টিলা আর চা বাগানে ঘেরা অনুপম সৌন্দর্যের লীলাভূমি হবিগঞ্জ। জেলার চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে হবিগঞ্জ-৪ আসন গঠিত। আসনটিতে এবার শোনা যাচ্ছে প্রায় অর্ধডজন নতুন মুখের কথা। এরা সবাই ক্লিন ইমেজের অধিকারী। তাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ভোটারদের। রাজনীতিতে নতুন হলেও এরা সবাই জাতীয়ভাবে বেশ পরিচিত। নতুন মুখ হিসেবে আলোচনায় আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন আহমেদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীসহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

এবার সম্ভাব্য প্রার্থী প্রায় দেড় ডজন। বিএনপি থেকে চারজন মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন দুইজন। তবে আলোচনায় আছেন দলটির জেলা আহ্বায়ক শিল্পপতি আলহাজ আতিকুর রহমান আতিক। তবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে আওয়ামী লীগ।

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ ছাড়া আলোচনায় আছেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত এনামুল হক মোস্তুফা শহীদের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতা নিজামুল হক মোস্তুফা শহীদ রানা, সাবেক মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম (বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত), শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি) মো. আবদুল হাইয়ের ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী আরিফুল হাই রাজিব, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট এম আকবর হোসেন জিতু, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. মুসলিম এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মিসির আলীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে প্রচারণায় রয়েছেন কয়েকজন প্রার্থী।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মো. ফয়সল মাঠে কাজ করছেন। তার ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে নিজস্ব একটি ভোটব্যাংক রয়েছে বলে দাবি তার সমর্থকদের। সাবেক এমপি ও সাবেক ছাত্রনেত্রী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার শিপার নামও শোনা যাচ্ছে নেতাকর্মীদের মুখে। আলোচনায় রয়েছে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরীর নাম। তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে।

প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাজাহান ও জামায়াতের সাবেক উপজেলা আমির মাওলানা মুখলিছুর রহমান। তবে সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল ইতোপূর্বে একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বারবার পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে। এ আসনে জাতীয় পর্টির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, জেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক শিল্পপতি মো. কাউছার-উল গনির নাম শোনা গেলেও হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আতিকুর রহমান আতিককে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

১৯৭০-এর নির্বাচন থেকে শুরু করে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বারবার বিজয়ী হয়েছেন। সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তুফা শহীদ ছয়বার এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি প্রায় ৩৪ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সাবেক এমপি প্রয়াত মাওলানা আসাদ আলীর ছেলে অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুবার জাতীয় পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার (বর্তমানে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এবং ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত) এ আসনে বিজয়ী হয়ে কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মুহিবুল হাসান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দলবিহীন নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ তানভীরের সঙ্গে খুব সহজেই নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর সমর্থকদের দাবি-তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন।