ঢাকা ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিশেহারা কৃষক ধানক্ষেতে পচন-মাজরা পোকার আক্রমণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমন ধানগাছে পচন রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণে কৃষি কর্মকর্তাদের খোঁজে দিশেহারা হয়ে ঘুরছে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার শতাধিক কৃষক। কৃষকদের এমন হা-হাকার দেখার বুঝি কেউ নেই।

এ উপজেলার বিভিন্নস্থানে ধানগাছে পচন, মাজরা পোকার আক্রমণ ও পাতা মোড়ানো রোগে আক্রান্ত আমন জমির পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে। সেই সাথে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দায়সারা দায়িত্ব পালনের কারণে কাঙ্খিত ফলন নিয়ে মহাচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ, কাদিরজংগঙ্গল, নোয়াবাদ ইউনিয়নের বালিয়া, পাড়া বালিয়া, হালগড়া এলাকার কৃষকেরা অনেক কষ্টে আমন ধান রোপন করেছেন। ক্ষেতে ধানের শীষ বের হওয়ার পর্যায়ে আসার সময়ে দেখা দিয়েছে ধান গাছে পচন, পাতা মোড়ানো রোগ ও মাজরা কাটা পোকার আক্রমন।

স্থানীয়ভাবে ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অনেক চাষি। এদিকে স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাসে একদিনও দেখাই মিলছে না।

পাড়াবালিয়ার ব্লকের কৃষক আব্দুল মালেক, মরতুজ আলীরা জানান, আমাদের এলাকায় আমন ধান ক্ষেতে মাজরা পোকা, পচন ও পাতা মোড়ানো রোগের আক্রমন সবচেয়ে বেশি।

রোপা আমন মৌসুমের মাঝামাঝি আকস্মিকভাবে ধান ক্ষেতে পচন ও পাতা মরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এখন আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। কারণ গত বছর যে ১ কাঠা ক্ষেতে ৫ থেকে ৬ মন ধান পেয়েছি। এ বছর তাতে এক মনও পাবার আশা নেই।

তারা অভিযোগ করে বলেন, এসব এলাকার কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ফোন করলে মাসে একদিনও দেখা মিলেনি। তাদের ছাড়া আমরা এসব রোগের পরমর্শ পাবো কোথায় ?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় মৌসুমের শুরুতে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে ইরি-বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই আমনে পাতা মরা ও পচন রোগ এ অঞ্চলের কৃষকদের উপর এ যেন মরার উপর খাড়া গা। এ এলাকার শতাধিক কৃষকের স্বপ্নের ফসল হারিয়ে যাবার উপক্রম হওয়ায় তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান ও আজিজুল ইসলাম খান বলেন, কোন কৃষক যদি আমাকে ফোন না দিয়েই অভিযোগ আনে তাহলে আমার করার কিছুই নেই। তবে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় নাইট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে ধানের পাতা নরম হয়ে পাতামরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে ধানের ফলনে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কৃষকরা তার কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছেন না।

করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম জানান, উপজেলার কিছু এলাকায় বিএলবি ব্যাকটেরিয়া ও বাদামি গাছ ফড়িংয়ে আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে না যাওয়ার বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দিশেহারা কৃষক ধানক্ষেতে পচন-মাজরা পোকার আক্রমণ

আপডেট টাইম : ০৫:০৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমন ধানগাছে পচন রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণে কৃষি কর্মকর্তাদের খোঁজে দিশেহারা হয়ে ঘুরছে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার শতাধিক কৃষক। কৃষকদের এমন হা-হাকার দেখার বুঝি কেউ নেই।

এ উপজেলার বিভিন্নস্থানে ধানগাছে পচন, মাজরা পোকার আক্রমণ ও পাতা মোড়ানো রোগে আক্রান্ত আমন জমির পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে। সেই সাথে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দায়সারা দায়িত্ব পালনের কারণে কাঙ্খিত ফলন নিয়ে মহাচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ, কাদিরজংগঙ্গল, নোয়াবাদ ইউনিয়নের বালিয়া, পাড়া বালিয়া, হালগড়া এলাকার কৃষকেরা অনেক কষ্টে আমন ধান রোপন করেছেন। ক্ষেতে ধানের শীষ বের হওয়ার পর্যায়ে আসার সময়ে দেখা দিয়েছে ধান গাছে পচন, পাতা মোড়ানো রোগ ও মাজরা কাটা পোকার আক্রমন।

স্থানীয়ভাবে ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অনেক চাষি। এদিকে স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাসে একদিনও দেখাই মিলছে না।

পাড়াবালিয়ার ব্লকের কৃষক আব্দুল মালেক, মরতুজ আলীরা জানান, আমাদের এলাকায় আমন ধান ক্ষেতে মাজরা পোকা, পচন ও পাতা মোড়ানো রোগের আক্রমন সবচেয়ে বেশি।

রোপা আমন মৌসুমের মাঝামাঝি আকস্মিকভাবে ধান ক্ষেতে পচন ও পাতা মরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এখন আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। কারণ গত বছর যে ১ কাঠা ক্ষেতে ৫ থেকে ৬ মন ধান পেয়েছি। এ বছর তাতে এক মনও পাবার আশা নেই।

তারা অভিযোগ করে বলেন, এসব এলাকার কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ফোন করলে মাসে একদিনও দেখা মিলেনি। তাদের ছাড়া আমরা এসব রোগের পরমর্শ পাবো কোথায় ?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় মৌসুমের শুরুতে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে ইরি-বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই আমনে পাতা মরা ও পচন রোগ এ অঞ্চলের কৃষকদের উপর এ যেন মরার উপর খাড়া গা। এ এলাকার শতাধিক কৃষকের স্বপ্নের ফসল হারিয়ে যাবার উপক্রম হওয়ায় তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান ও আজিজুল ইসলাম খান বলেন, কোন কৃষক যদি আমাকে ফোন না দিয়েই অভিযোগ আনে তাহলে আমার করার কিছুই নেই। তবে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় নাইট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে ধানের পাতা নরম হয়ে পাতামরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে ধানের ফলনে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কৃষকরা তার কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছেন না।

করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম জানান, উপজেলার কিছু এলাকায় বিএলবি ব্যাকটেরিয়া ও বাদামি গাছ ফড়িংয়ে আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে না যাওয়ার বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।