ঢাকা ০৪:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবি-বুয়েটে মাদকের আখড়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩৪১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। এখানে উচ্চতর গবেষণা হবে, জ্ঞান সাধনা হবে।সভ্যতার মানদণ্ডে উন্নীত ও রুচিশীল মানুষ বেরিয়ে আসবে এখান থেকে। কিন্তু তা কি হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ? সরকারি কিংবা বেসরকারি—সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার মান নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন আছে। বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে ধর্তব্যের মধ্যে নেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখানকার শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড ও রুচিবোধের যেসব খবর বাইরে আসে, তা মানুষকে শুধু হতাশই করে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অস্ত্রবাজি, হামলা-ভাঙচুরসহ কত খবরই না আসে এসব ক্যাম্পাস । তেমনই একটি হতাশাজনক খবর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুুয়েট) এখন মাদকের ছড়াছড়ি। গাঁজা, মদ, ইয়াবা—কিছুই দুষ্প্রাপ্য নয় এ দুটি ক্যাম্পাসে। প্রায় খোলাখুলিভাবেই চলে এসব কেনাবেচা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, বহিরাগত, ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ও পুলিশের কিছু সদস্যও জড়িয়ে গেছে মাদক বাণিজ্যে। আর তার অনিবার্য ফল হচ্ছে ক্রমেই বেশি সংখ্যায় শিক্ষার্থীর মাদকাসক্ত হয়ে পড়া। এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা রোধ করা জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট দেশের প্রধান দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। সারা দেশ থেকে অভিভাবকরা তাঁদের মেধাবী সন্তানদের এখানে পাঠান বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে। কয়েক বছর পর সেই সন্তান যদি শিক্ষার বদলে মাদকাসক্ত হয়ে ফিরে আসে, তাহলে অভিভাবকদের মনের অবস্থা কেমন হয় ? সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর এই পতনের দায় কে নেবে ? সরকার দেশের মানুষকে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের মনে আশা জাগিয়ে তুলছে। ভবিষ্যতে সেই স্বপ্ন ও আশার হাল ধরবে কারা ? এই মাদকাসক্ত তরুণরা? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পৃথক ও যৌথ প্রচেষ্টায় অতীতে অনেক মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবীকে ধরা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এরপর ওপর থেকে আসা টেলিফোন বা তদবিরের কারণে অনেককে তারা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। অনেককে আইনের হাতে সোপর্দ করা হলেও দেখা গেছে, তাদের প্রায় সবাই জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই কাজ করছে। যদি তা-ই হয়, তাহলে ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক এই মাদক বাণিজ্য বন্ধ হবে কিভাবে ?

শিক্ষাঙ্গনে শুধু বই পড়ালেই শিক্ষা হয় না, শিক্ষার পরিবেশও থাকতে হয়। নতুন শিক্ষার্থীরা প্রথমে অন্যের দেখাদেখি কৌতূহলবশত কিংবা পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে মাদক সেবন করে, তারপর আসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকাসক্তের না থাকে নৈতিক ভিত্তি, না থাকে যুক্তিবোধ। এরপর মাদকের অর্থ জোগাতে তারা হেন অন্যায় নেই, যাতে জড়িয়ে না পড়ে। তাদের শিক্ষাজীবন লাটে ওঠে। তারা পরিবার ও দেশের জন্য বোঝা হয়ে যায়। এই ধ্বংসের প্রক্রিয়া ঠেকাতেই হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর যেমন শিক্ষাঙ্গন থেকে, তেমনি পরিবার থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখতে হবে। মাদকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঢাবি-বুয়েটে মাদকের আখড়া

আপডেট টাইম : ০৪:১০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। এখানে উচ্চতর গবেষণা হবে, জ্ঞান সাধনা হবে।সভ্যতার মানদণ্ডে উন্নীত ও রুচিশীল মানুষ বেরিয়ে আসবে এখান থেকে। কিন্তু তা কি হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ? সরকারি কিংবা বেসরকারি—সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার মান নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন আছে। বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে ধর্তব্যের মধ্যে নেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখানকার শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড ও রুচিবোধের যেসব খবর বাইরে আসে, তা মানুষকে শুধু হতাশই করে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অস্ত্রবাজি, হামলা-ভাঙচুরসহ কত খবরই না আসে এসব ক্যাম্পাস । তেমনই একটি হতাশাজনক খবর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুুয়েট) এখন মাদকের ছড়াছড়ি। গাঁজা, মদ, ইয়াবা—কিছুই দুষ্প্রাপ্য নয় এ দুটি ক্যাম্পাসে। প্রায় খোলাখুলিভাবেই চলে এসব কেনাবেচা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, বহিরাগত, ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ও পুলিশের কিছু সদস্যও জড়িয়ে গেছে মাদক বাণিজ্যে। আর তার অনিবার্য ফল হচ্ছে ক্রমেই বেশি সংখ্যায় শিক্ষার্থীর মাদকাসক্ত হয়ে পড়া। এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা রোধ করা জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট দেশের প্রধান দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। সারা দেশ থেকে অভিভাবকরা তাঁদের মেধাবী সন্তানদের এখানে পাঠান বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে। কয়েক বছর পর সেই সন্তান যদি শিক্ষার বদলে মাদকাসক্ত হয়ে ফিরে আসে, তাহলে অভিভাবকদের মনের অবস্থা কেমন হয় ? সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর এই পতনের দায় কে নেবে ? সরকার দেশের মানুষকে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের মনে আশা জাগিয়ে তুলছে। ভবিষ্যতে সেই স্বপ্ন ও আশার হাল ধরবে কারা ? এই মাদকাসক্ত তরুণরা? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পৃথক ও যৌথ প্রচেষ্টায় অতীতে অনেক মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবীকে ধরা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এরপর ওপর থেকে আসা টেলিফোন বা তদবিরের কারণে অনেককে তারা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। অনেককে আইনের হাতে সোপর্দ করা হলেও দেখা গেছে, তাদের প্রায় সবাই জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই কাজ করছে। যদি তা-ই হয়, তাহলে ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক এই মাদক বাণিজ্য বন্ধ হবে কিভাবে ?

শিক্ষাঙ্গনে শুধু বই পড়ালেই শিক্ষা হয় না, শিক্ষার পরিবেশও থাকতে হয়। নতুন শিক্ষার্থীরা প্রথমে অন্যের দেখাদেখি কৌতূহলবশত কিংবা পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে মাদক সেবন করে, তারপর আসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকাসক্তের না থাকে নৈতিক ভিত্তি, না থাকে যুক্তিবোধ। এরপর মাদকের অর্থ জোগাতে তারা হেন অন্যায় নেই, যাতে জড়িয়ে না পড়ে। তাদের শিক্ষাজীবন লাটে ওঠে। তারা পরিবার ও দেশের জন্য বোঝা হয়ে যায়। এই ধ্বংসের প্রক্রিয়া ঠেকাতেই হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর যেমন শিক্ষাঙ্গন থেকে, তেমনি পরিবার থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখতে হবে। মাদকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।