শনিবার তারকাদের বিপিএলের জমজমাট আসর

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চারপাশে সবুজের বেষ্টনী। তার মাঝে নয়নাভিরাম সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। অনিন্দ্য সুন্দর এ স্টেডিয়ামে এবার শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। শুরু হচ্ছে চার ছক্কার দামামা। প্রকৃতির কোলে শনিবার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্সের লড়াই দিয়ে শুরু হবে এ টুর্নামেন্ট। খেলাটি শুরু হবে দুপুর ২টায়। একই দিনে মাঠে নামবে গতবারের রানার্স আপ রাজশাহী কিংসও। বিপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তাদের লড়াই সন্ধ্যা ৭টায়।

আগের সব আসর থেকে এবার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস একটু বেশি পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এবারই প্রথম বেশ বড় সর তারকারা থাকছেন বিপিএলে। অন্যান্য বছর সীমিত সময়ের জন্য থাকলেও এবার পুরো টুর্নামেন্টই খেলছেন ক্যারিবিয়ান দৈত্য ক্রিস গেইল। আছেন নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। জস বাটলার, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, রাইলি রুশো, কাইল অ্যাবট, বাবর আজমরা প্রথম বারের মতো আসছেন বিপিএলে। সুনীল নারিন, থিসারা পেরেরা, ড্যারেন সামি, এভিন লুইস, কাইরন পোলার্ড, লুক রাইট, মারলন স্যামুয়েলস, ডোয়াইন ব্রাভো, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, কুমার সাঙ্গাকারা, শহীদ আফ্রিদি, মোহাম্মদ আমিরদের মতো বড় তারকারা আছেন এ আসরে। ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অল রাউন্ডার শেন ওয়াটসনও। কিন্তু ইনজুরির কারণে আসতে পারছেন না। এ অস্ট্রেলিয়ান আসলে টুর্নামেন্টের জৌলুশ আরও বাড়ত।

তবে শুরুতেই পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের পাচ্ছেনা ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলো। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এর আয়োজনে দেশটিতে শুরু হচ্ছে ন্যাশনাল টি-টুয়েন্টি কাপ। ১১ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই টুর্নামেন্ট। ফলে শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিপিএলে বেশিরভাগ ম্যাচই খেলতে পারবেন না তারা। একমাত্র শহীদ আফ্রিদিই পারবেন বিপিএলের সব ম্যাচ খেলতে। সাথে অবসর নেওয়া আর দু একজন। পুরো সময় জুড়ে থাকছেন অবসর নেওয়া মোহাম্মদ সামি ও মিসবাহ উল হক। তবে ১৭ নভেম্বরের পর ছাড়পত্র পাবেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। সেখানেই ঘটছে বিপত্তি। কারণ উইন্ডিজের সঙ্গে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করছে পিসিবি। আর তা হলে কপাল পুড়তে পারে ১৯ পাকিস্তানি ক্রিকেটারের।

এক আসর পর আবার ফিরে এসেছে সিলেট। ফ্র্যাঞ্চাইজি বদলে নতুন নাম সিলেট সিক্সার্স নামে যোগ দিয়েছে দলটি। উদ্বোধনী ম্যাচে ঘরের মাঠেই খেলবে তারা। প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ঢাকা ডায়নামাইটস। যে দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আফ্রিদি-নারিন-সাঙ্গাকারার দলটি বিপক্ষে শুরুতেই বেশ চ্যলেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে নবীন সিলেট সিক্সার্সকে। তারুণ্য নির্ভর দলটির মূল স্তম্ভ সাব্বির আহমেদ, নাসির হোসেন ও নুরুল হাসানের মতো তরুণরা।

উদ্বোধনী দিনে দ্বিতীয় ম্যাচেই আকর্ষণ বেশি ক্রীড়ামোদীদের। কারণ বিপিএলের সেরা অধিনায়ক মাশরাফির বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টির সেরা স্যামির মোকাবেলা তখন। মাশরাফির রংপুরে আছেন গেইল, ম্যাককালাম, রবি বোপারা, স্যামুয়েল বদ্রি, থিসারা পেরেরা, কুশল পেরেরার মতো খেলোয়াড়রা। দেশি ক্রিকেটারদের ভাণ্ডারও বেশ অভিজ্ঞ তাদের। মোহাম্মদ মিঠুন, সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন, শাহরিয়ার নাফীস আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাকদের মতো প্রমাণিত খেলোয়াড় আছে দলটিতে। প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংসও দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বী। দলটিতে এবার যোগ দিয়েছেন বিপিএলের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। হালের দুই সেরা তরুণ মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজও আছে দলটিতে। যদিও সিলেট পর্বে মোস্তাফিজকে পাচ্ছে না তারা। তবে স্যামির নেতৃত্বে দলটির মূল শক্তি দলীয় একতা। তাই জমজমাট লড়াই আশা করছেন ক্রিকেটভক্তরা।
গত আসরের মতো এবারও নেই আলাদা করে কোন উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ টাকা দেওয়া হয়েছে দেশের বন্যার্তদের সাহায্যার্থে। তবে উদ্বোধনী কোন অনুষ্ঠান না থাকলেও বড় বড় তারকা খেলোয়াড়দের উপস্থিতিতে প্রাণটা একটু বেশি পাওয়া যাচ্ছে এবারের আসরে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর