পোশাক-পরচ্ছিদে ইসলামরে নর্দিশেনা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইসলাম মানুষের সব ব্যাপারেই মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। সেসবের মধ্যে পোশাক-পরিচ্ছদ অন্যতম। হাদিসে অনুমোদিত পোশাকের ধরন, প্রকৃতি বর্ণনা করে নিষিদ্ধ পোশাক পরিধানের ব্যাপারে হুশিয়ার করা হয়েছে। অতএব পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে মহান আল্লাহর নির্দেশনা জেনে সে অনুযায়ী ইসলামসম্মত পোশাক পরিধান করা উম্মতে মুহাম্মদির একান্ত কর্তব্য।

এক. পোশাক এমন হতে হবে, যার দ্বারা পরিপূর্ণ সতর ঢাকা থাকে। পোশাক এত পাতলা, খাটো বা সংকীর্ণ হতে পারবে না, যার দরুন শরীরের এমন কোনো অঙ্গ প্রকাশ পেয়ে যায়, যা ঢেকে রাখা ওয়াজিব। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘অনেক মহিলা এমন রয়েছে, যারা কাপড় পরিধান করার পরও উলঙ্গ। তারা পরপুরুষকে নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করে এবং নিজেরাও পরপুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাদের মাথার চুল বখতি উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। যদিও জান্নাতের সুঘ্রাণ অনেক দূর থেকে পাওয়া যাবে।’ (মুসলিম, দ্বিতীয় খ- ২৭০ পৃষ্ঠা)।
দুই. পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে কাফের, মুশরিক বা ফাসিকদের অনুসরণ করা বা সাদৃশ্য গ্রহণ করা যাবে না। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতি বা সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ পরকালে তাদের সঙ্গে হাশর-নাশর হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, দ্বিতীয় খ-, হাদিস ন : ৫৫৯)।
তিন. পুরুষরা মহিলাদের মতো এবং মহিলারা পুরুষদের মতো পোশাক পরিধান করতে পারবে না। এ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সেসব পুরুষের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন, যারা মহিলাদের মতো পোশাক পরিধান করে এবং ওইসব মহিলার প্রতি অভিসম্পাত করেছেন, যারা পুরুষদের মতো পোশাক পরিধান করে।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৫৬৬)।
চার. অহংকার ও বিলাসিতা প্রকাশ পায়, এমন পোশাক পরিধান না করা। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় প্রসিদ্ধি লাভের পোশাক পরিধান করে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে লাউদনা ও অবমাননাকর পোশাক পরিধান করাবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৫৫৮)।
পাঁচ. পুরুষের জন্য রেশমি কাপড়ের পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ। এ সম্পর্কে হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ও রেশমি কাপড় ব্যবহার হারাম করা হয়েছে এবং মহিলাদের জন্য তা হালাল করা হয়েছে।’ (জামি তিরমিজি, ২৬ খ-, ৩০২ পৃষ্ঠা)।
ছয়. পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ লাল রঙের পোশাক পরিধান করা জায়েজ নয়। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি একজোড়া লাল কাপড় পরিধান করে অতিক্রমকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) কে সালাম দিল। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সালামের জবাব দেননি। এর মাধ্যমে তিনি লোকটির প্রতি তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৫৬৩)।
সাত. পোশাক সাদা রঙের হওয়া উত্তম। এ সম্পর্কে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা সাদা রঙের পোশাক পরিধান করো। কেননা এটিই অধিক পবিত্র ও পরিষ্কার। আর সাদা কাপড়েই তোমাদের মৃত ব্যক্তিদের দাফন দাও।’ (শামায়েলে তিরমিজি, ৫ পৃষ্ঠা)।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর