হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার মানা হয় তাঁকে। এ তকমা পেয়েছেন এই সময়েরই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলির কাছ থেকে। অথচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর আগুনে বোলিং সামনাসামনি দেখার সৌভাগ্য হয়নি পাকিস্তানের মানুষেরই। অবাক হওয়ার মতোই তথ্য, আন্তর্জাতিক অভিষেকের ৮ বছর পর এই প্রথমবারের মতো দেশের হয়ে দেশের মাটিতে খেললেন মোহাম্মদ আমির।
এই ৮ বছর কত-কী না ঘটে গেছে। স্পট ফিক্সিংয়ের কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ৫ বছর নিষেধাজ্ঞাও কাটিয়ে এসেছেন আমির। করতে হয়েছে কারাবাসও। সব কেলেঙ্কারি, বিতর্ক আর জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমির ফিরেছেন স্বমহিমায়। কিন্তু কোথাও যেন একটা অপূর্ণতা রয়েই যাচ্ছিল। দেশের মাটিতে, স্বজাতির সামনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে না পারার আক্ষেপ তো আর ছোটখাটো কোনো বিষয় নয়। অবশেষে আমিরের জীবনে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এল। ওয়াসিম-ওয়াকার যুগ-পরবর্তী পাকিস্তানের সেরা এই পেস বোলিং-প্রতিভা সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, সেই উপলক্ষকে কিন্তু স্মরণীয় করেই রেখেছেন। ৪ ওভার বল করে ১৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট, ডট বল ১৬টি! পাকিস্তান ম্যাচ জিতেছে ৩৬ রানে।
গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে পাকিস্তানের যে দলটি খেলেছে, সেখানে মাত্র ২ জন ক্রিকেটারের ঘরের মাঠে টেস্ট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল—শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ হাফিজ। এর মধ্যে সবচেয়ে ‘তাজা’ অভিজ্ঞতা মালিকের। ২০০৯ সালের ১ মার্চ লাহোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই দুঃস্বপ্নের টেস্টে ছিলেন এই অল-অলরাউন্ডার। যেদিন বন্দুকধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঝাঁজরা হয়েছিল শ্রীলঙ্কার টিমবাস। হাফিজের অভিজ্ঞতা আরও আগের। তাঁর সর্বশেষ ঘরের মাঠে খেলার স্মৃতি ১০ বছর আগের। ২০০৭ সালের ১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করাচি টেস্টই পাকিস্তানের মাটিতে বড় সংস্করণে হাফিজের সর্বশেষ অভিজ্ঞতা।
আমিরকে দুর্ভাগা মানতেই হচ্ছে। কারণ, টেস্ট না খেললেও দলের অনেকেই ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ খেলেছিলেন। গতকালের আগেই দেশের মাটিতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল বাবর আজমসহ কয়েকজনেরই। অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদও ২০০৮ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তান দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। সেবার এশিয়া কাপের আয়োজক হয়েছিল পাকিস্তান।
ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই আমিরের অভিষেক ২০০৯ সালে। টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক শ্রীলঙ্কায়, টি-টোয়েন্টি অভিষেক ইংল্যান্ডে। শুরুর দিনগুলোতেই ওয়াসিম আকরামের উত্তরসূরি বলা হয়েছিল বাঁহাতি এই ফাস্ট বোলারকে। এত দিন পর দেশের মাটিতে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ হলো তাঁর। সেটি নিশ্চয়ই আমিরের জন্য মধুর এক অভিজ্ঞতা।