হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জ জেলার পাহাড়ি এলাকায় পতিত জমিতে কলা চাষে সফলতা আসছে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কলার চাষ। পাহাড়ে কলা চাষে একদিকে যেমন গাছে কোনো ধরনের সার প্রয়োগের দরকার হয় না; অন্যদিকে এখানে উৎপাদিত কলা পাকাতে কোনো কেমিক্যালও মেশানো হয় না। গাছে পাকা শুরু হলেই কলা বিক্রি করা হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব গাছপাকা কলা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। বাড়ছে কদরও।
জানা যায়, জেলার বাহুবল, নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার আদিবাসীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ পাহাড়ি পতিত জমিতে দেশীয় কলার চাষ করছেন। এসব কলা গাছে পাকা শুরু হলে তারা বিক্রি করেন। গাছপাকা হওয়ায় এখানকার কলার চাহিদাও প্রচুর। ফলে এখন পাহাড়ে প্রতিযোগিতামূলক কলা চাষ শুরু হয়েছে।
কলাচাষি বিনয় দেব বর্মার ঘরের পাশেই দেশি জাতের অর্ধশতাধিক কলাগাছ। তিনি জানান, এখানে কলাগাছে একদিকে যেমন সার প্রয়োগের দরকার হচ্ছে না; অন্যদিকে পাকাতে ব্যবহার হচ্ছে কোনো কেমিক্যাল। ফলে পুরোপুরি বিষমুক্ত হওয়ায় কলার মূল্যও ভালো। আর বারোমাসই কলার ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কাজল মিয়া নামে এক কলা বিক্রেতা বলেন, বাজারে কেমিক্যাল দিয়ে পাকিয়ে কলা বিক্রি হচ্ছে, ক্রেতাদের কাছে তাই গাছপাকা পাহাড়ি কলার কদর বেশি।
সরেজমিন দেখা গেছে, পাহাড়ি টিলায় টিলায় কলা চাষ হচ্ছে। আবার পাহাড়ের লেবু বাগানেও দেশি কলার চাষ করা শুরু হয়েছে। এতে করে তারা লেবুর সঙ্গে কলা বিক্রি করেও অধিক লাভবান হচ্ছেন। লেবুচাষি সাইদুল ইসলাম বলেন, বাহুবলের পাহাড়ে প্রায় ৫০ একর জমিতে লেবু চাষ করছি। আর লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে কলাগাছ লাগিয়ে দারুণ ফলন পাচ্ছি। লেবুর মতো বারোমাস কলাও বিক্রি করতে পারছি। সাইদুলের মতো আরও অনেকেই লেবু বাগানে কলা চাষ শুরু করেছেন। তারাও ভালো ফলন পাচ্ছেন।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, পাহাড়ের কলা পুরোপুরিই বিষমুক্ত। এখানকার কলাগাছে তেমন একটা সারও দিতে হয় না আর পাকাতেও ব্যবহার হয় না কোনো কেমিক্যাল। তাই বলা যায়, বিনা খরচে বিষমুক্ত কলা বিক্রি করে পাহাড়িরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।