ঢাকা ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোখ জরিয়ে যায় শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে দেখে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৪:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭
  • ৬৬৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এ যেন অন্য এক প্রকৃতি। দূর থেকেই অভ্যর্থনা জানায় লাল শাপলা। একটু কাছে যেতেই চোখ ধাঁধিয়ে ওঠে শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে।

শাপলার এমন লাল দুনিয়ার দেখা মিলবে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার চার বিলে। উপজেলার সাতলা ও হারতা লাগোয়া দুটি ইউনিয়ন। এই দুটি ইউনিয়নের সাতলা, নয়াকান্দি, পটিবাড়ি পাশাপাশি তিনটি বিল। একটু দূরেই হারতা ইউনিয়নে আরেকটি বিল। নাম কালবিরা। এই চারটি বিলজুড়ে রঙিন শাপলার বর্ণাঢ্য উৎসব চলছে এখন। বিশাল আয়তনের বিলগুলোতে ফুটে থাকা লাল শাপলা শরতের সৌন্দর্যকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে।

শাপলার বাহারি সৌন্দর্য চোখে দেখতেই সেখানে যাওয়া। আমাদের নৌকা চলল শাপলার রাজ্যে। আগাছা আর লতাগুল্মে ভরা বিলের স্বচ্ছ পানিতে ফোটা শাপলার ফাঁকে দেখা মিলল আধা ফোটা এমন লাখো শাপলা। নয়াকান্দি বিলে পর্যটকদের নিয়ে নৌকায় ঘোরেন ৬০ বছর বয়সী মতিলাল রায়। তিনি বললেন, এই চারটি বিলে তিন ধরনের শাপলা ফোটে। লাল, সাদা ও বেগুনি। তবে লাল শাপলার আধিক্য বেশি।

বিল থেকে তোলা শাপলা ধুয়ে নিচ্ছে এক কিশোরীমতিলালের কাছেই জানা গেল, ছোটবেলায় তাঁরা দেখেছেন কেবল সাদা শাপলা ফুটতে। কিন্তু বছর দশেক হলো দেখছেন লাল শাপলার আধিক্য। প্রাকৃতিকভাবেই এ চারটি বিলে এভাবে যুগ যুগ ধরে শাপলা ফুটছে।

অনেকে সাতলা ও পাশের বিলগুলোকে লাল শাপলার স্বর্গরাজ্য হিসেবেও অভিহিত করেন। শীত মৌসুমে পানি কমে গেলে শাপলা মরে যায়, কৃষকেরা তখন এই বিলে ধানের আবাদ করেন।

মতিলালেরও এই বিলে জমি রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে জমি চাষ, শাপলা ফোটার দিনগুলোতে পর্যটকদের নৌকায় ঘোরানো—এ দিয়েই চলে তাঁর সংসার।

পর্যটকদের প্রশান্তি বিলানো ছাড়াও এসব বিলের বিপুল শাপলা স্থানীয় ব্যক্তিদের অন্নের জোগান দেয়। বিল ঘুরতে ঘুরতে দেখা হলো এমন অনেকের সঙ্গে, যাঁদের অনেকেই আগাছা ঠেলে নৌকা নিয়ে বিলের গহিনে যাচ্ছেন। বিল থেকে শাপলা তুলে জমা করছেন নৌকায়। কথা হলো নয়াকান্দি গ্রামের সাধনা বাড়ৈ, সীমা বিশ্বাস, সন্ধ্যা রানী, শিখা বিশ্বাস আর লক্ষ্মী রায়ের সঙ্গে। তাঁরা সবাই শাপলা সংগ্রহ করতে এসেছেন। একজন বললেন, শাপলার ওপরই তাঁদের জীবিকা। প্রতিদিন শাপলা বিক্রি করে ২৫০-৩০০ টাকা আয় তাঁদের। শ্রাবণ থেকে কার্তিক—চার মাস এই-ই তাঁদের উপার্জনের উৎস। বিলের শাপলা বরিশাল, পিরোজপুর ও ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হয়।

এম জসিম উদ্দিন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চোখ জরিয়ে যায় শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে দেখে

আপডেট টাইম : ০৫:১৪:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এ যেন অন্য এক প্রকৃতি। দূর থেকেই অভ্যর্থনা জানায় লাল শাপলা। একটু কাছে যেতেই চোখ ধাঁধিয়ে ওঠে শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে।

শাপলার এমন লাল দুনিয়ার দেখা মিলবে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার চার বিলে। উপজেলার সাতলা ও হারতা লাগোয়া দুটি ইউনিয়ন। এই দুটি ইউনিয়নের সাতলা, নয়াকান্দি, পটিবাড়ি পাশাপাশি তিনটি বিল। একটু দূরেই হারতা ইউনিয়নে আরেকটি বিল। নাম কালবিরা। এই চারটি বিলজুড়ে রঙিন শাপলার বর্ণাঢ্য উৎসব চলছে এখন। বিশাল আয়তনের বিলগুলোতে ফুটে থাকা লাল শাপলা শরতের সৌন্দর্যকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে।

শাপলার বাহারি সৌন্দর্য চোখে দেখতেই সেখানে যাওয়া। আমাদের নৌকা চলল শাপলার রাজ্যে। আগাছা আর লতাগুল্মে ভরা বিলের স্বচ্ছ পানিতে ফোটা শাপলার ফাঁকে দেখা মিলল আধা ফোটা এমন লাখো শাপলা। নয়াকান্দি বিলে পর্যটকদের নিয়ে নৌকায় ঘোরেন ৬০ বছর বয়সী মতিলাল রায়। তিনি বললেন, এই চারটি বিলে তিন ধরনের শাপলা ফোটে। লাল, সাদা ও বেগুনি। তবে লাল শাপলার আধিক্য বেশি।

বিল থেকে তোলা শাপলা ধুয়ে নিচ্ছে এক কিশোরীমতিলালের কাছেই জানা গেল, ছোটবেলায় তাঁরা দেখেছেন কেবল সাদা শাপলা ফুটতে। কিন্তু বছর দশেক হলো দেখছেন লাল শাপলার আধিক্য। প্রাকৃতিকভাবেই এ চারটি বিলে এভাবে যুগ যুগ ধরে শাপলা ফুটছে।

অনেকে সাতলা ও পাশের বিলগুলোকে লাল শাপলার স্বর্গরাজ্য হিসেবেও অভিহিত করেন। শীত মৌসুমে পানি কমে গেলে শাপলা মরে যায়, কৃষকেরা তখন এই বিলে ধানের আবাদ করেন।

মতিলালেরও এই বিলে জমি রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে জমি চাষ, শাপলা ফোটার দিনগুলোতে পর্যটকদের নৌকায় ঘোরানো—এ দিয়েই চলে তাঁর সংসার।

পর্যটকদের প্রশান্তি বিলানো ছাড়াও এসব বিলের বিপুল শাপলা স্থানীয় ব্যক্তিদের অন্নের জোগান দেয়। বিল ঘুরতে ঘুরতে দেখা হলো এমন অনেকের সঙ্গে, যাঁদের অনেকেই আগাছা ঠেলে নৌকা নিয়ে বিলের গহিনে যাচ্ছেন। বিল থেকে শাপলা তুলে জমা করছেন নৌকায়। কথা হলো নয়াকান্দি গ্রামের সাধনা বাড়ৈ, সীমা বিশ্বাস, সন্ধ্যা রানী, শিখা বিশ্বাস আর লক্ষ্মী রায়ের সঙ্গে। তাঁরা সবাই শাপলা সংগ্রহ করতে এসেছেন। একজন বললেন, শাপলার ওপরই তাঁদের জীবিকা। প্রতিদিন শাপলা বিক্রি করে ২৫০-৩০০ টাকা আয় তাঁদের। শ্রাবণ থেকে কার্তিক—চার মাস এই-ই তাঁদের উপার্জনের উৎস। বিলের শাপলা বরিশাল, পিরোজপুর ও ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হয়।

এম জসিম উদ্দিন