ঢাকা ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দোআঁশ মাটিতে লাউ চাষ লাখোপতি কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কবিগুরুর শ্বশুরবাড়ি আর ঘরে ঘরে নার্সারি ও শাকসবজি উৎপাদনের কারণে খুলনার ফুলতলা উপজেলা দেশ-বিদেশে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। মাছের পোনা ও কোয়েল উৎপাদন করেও এখানকার প্রান্তিক চাষিরা অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। পাশাপাশি চাষ হচ্ছে লাউ। দোআঁশ মাটিতে লাউ চাষ এখন এখানকার জনপ্রিয় ফসল। লাউ ও শাক বিক্রি করে এক মৌসুমেই লাখোপতি হচ্ছেন ফুলতলার হাজারো চাষি।

কৃষক সূত্রে জানা যায়, ইটের ভাটা আর নার্সারিতে ব্যবহার হচ্ছে এখানকার ৬৫ শতাংশ জমি। বাকি জমিতে গড়ে উঠেছে মাছের খামার। এ খামারে আইলের চার পাশে গড়ে উঠেছে শাকসবজির বাগান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লাউ। উপজেলার বরণপাড়া, ধোপাখোলা, শিরোমনি, গিলাতলা, মশিয়ালি, গাড়াখোলা, ছাতিয়ানি, পিপরাইল, বেজেরডাঙ্গা, বেগুনবাড়িয়া, ঢাকুরিয়া, নাউদাড়ি, মাতমডাঙ্গা, পটুয়াবান্দা গ্রামের ৮৪ হেক্টর জমিতে লাউয়ের আবাদ। বছরে দুই দফা এখানকার চাষিরা লাউ চাষ করে। বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত প্রথম দফা আর কার্তিক থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা লাউ চাষ হয় এখানে।

উল্লেখযোগ্য লাউ চাষিরা হচ্ছেন বরণপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্লা, হাসিবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম শেখ, মশিয়ালি পূর্বপাড়ার হায়দার আলী, ইসা খাঁ, কামাল হোসেন, ধোপাখোলা গ্রামের সালাম মোল্লা, হায়দার মোল্লা, নজরুল গাজী, কবির মোল্লা, নজরুল খাঁ, সরো কাজী, জামিরা গ্রামের শাহাদাত হোসেন, পয়গ্রাম কসবা গ্রামের মিজানুর রহমান, উত্তরডিহি গ্রামের কার্তিক চন্দ্র, পটুয়াবান্দা গ্রামের বিথিকা মন্ডল, কালাচাঁদ হায়দার, অসিত মন্ডল, বিশ্বজিৎ রায় ও বুদ্ধদেব মন্ডল।

লাউ চাষের বিবরণ দিয়ে বরণপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, মাদা করার সময় টিএসপি ও পটাশ সার ব্যবহার করা হয়। তার ১৫ দিন পরে মাদায় দুই থেকে তিনটি বীজ রোপণ করা হয়। ৩০ দিন পর জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। চার বিঘা জমিতে ২০০ মাদায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। বছরে লাউ ও শাক বিক্রি হয়েছে লাখ টাকার। পটিয়াবান্দা গ্রামের মিজানুর রহমান ৫ বিঘা মৎস্য খামারের আইলে লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন। লাউ উৎপাদনে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এখানে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তিন সপ্তাহ পরপর ফসফেট, পটাশ, ইউরিয়া ও জৈব সার ব্যবহার করেন। বরণপাড়া গ্রামের চাষি আমজাদ হোসেন মোল্লা লাউয়ের পাশাপাশি শিম, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো ও পানিকচুর আবাদ করেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিখা মল্লিক, সালমা সুলতানা, চামেলী মল্লিক জানান, সব গ্রামেই কম-বেশি লাউয়ের আবাদ হচ্ছে। চাষিরা প্রতি বছরই লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার অতিরিক্তি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবানন্দ বিশ্বাস জানান, লাউয়ের পাশাপাশি শাক বিক্রি করে চাষিরা লাভবান হচ্ছে। মাছের খামারের পাশে আইল এখন আর পতিত নেই। লাউয়ের আবাদে ভরে গেছে খামারের আইলের চার পাশ। এখানকার উৎপাদিত লাউ ও শাক দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা মেটাচ্ছে। তার দেয়া তথ্য মতে, উপজেলায় লাউ চাষির সংখ্যা সহস্রাধিক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দোআঁশ মাটিতে লাউ চাষ লাখোপতি কৃষক

আপডেট টাইম : ০১:১১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কবিগুরুর শ্বশুরবাড়ি আর ঘরে ঘরে নার্সারি ও শাকসবজি উৎপাদনের কারণে খুলনার ফুলতলা উপজেলা দেশ-বিদেশে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। মাছের পোনা ও কোয়েল উৎপাদন করেও এখানকার প্রান্তিক চাষিরা অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। পাশাপাশি চাষ হচ্ছে লাউ। দোআঁশ মাটিতে লাউ চাষ এখন এখানকার জনপ্রিয় ফসল। লাউ ও শাক বিক্রি করে এক মৌসুমেই লাখোপতি হচ্ছেন ফুলতলার হাজারো চাষি।

কৃষক সূত্রে জানা যায়, ইটের ভাটা আর নার্সারিতে ব্যবহার হচ্ছে এখানকার ৬৫ শতাংশ জমি। বাকি জমিতে গড়ে উঠেছে মাছের খামার। এ খামারে আইলের চার পাশে গড়ে উঠেছে শাকসবজির বাগান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লাউ। উপজেলার বরণপাড়া, ধোপাখোলা, শিরোমনি, গিলাতলা, মশিয়ালি, গাড়াখোলা, ছাতিয়ানি, পিপরাইল, বেজেরডাঙ্গা, বেগুনবাড়িয়া, ঢাকুরিয়া, নাউদাড়ি, মাতমডাঙ্গা, পটুয়াবান্দা গ্রামের ৮৪ হেক্টর জমিতে লাউয়ের আবাদ। বছরে দুই দফা এখানকার চাষিরা লাউ চাষ করে। বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত প্রথম দফা আর কার্তিক থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা লাউ চাষ হয় এখানে।

উল্লেখযোগ্য লাউ চাষিরা হচ্ছেন বরণপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্লা, হাসিবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম শেখ, মশিয়ালি পূর্বপাড়ার হায়দার আলী, ইসা খাঁ, কামাল হোসেন, ধোপাখোলা গ্রামের সালাম মোল্লা, হায়দার মোল্লা, নজরুল গাজী, কবির মোল্লা, নজরুল খাঁ, সরো কাজী, জামিরা গ্রামের শাহাদাত হোসেন, পয়গ্রাম কসবা গ্রামের মিজানুর রহমান, উত্তরডিহি গ্রামের কার্তিক চন্দ্র, পটুয়াবান্দা গ্রামের বিথিকা মন্ডল, কালাচাঁদ হায়দার, অসিত মন্ডল, বিশ্বজিৎ রায় ও বুদ্ধদেব মন্ডল।

লাউ চাষের বিবরণ দিয়ে বরণপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, মাদা করার সময় টিএসপি ও পটাশ সার ব্যবহার করা হয়। তার ১৫ দিন পরে মাদায় দুই থেকে তিনটি বীজ রোপণ করা হয়। ৩০ দিন পর জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। চার বিঘা জমিতে ২০০ মাদায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। বছরে লাউ ও শাক বিক্রি হয়েছে লাখ টাকার। পটিয়াবান্দা গ্রামের মিজানুর রহমান ৫ বিঘা মৎস্য খামারের আইলে লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন। লাউ উৎপাদনে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এখানে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তিন সপ্তাহ পরপর ফসফেট, পটাশ, ইউরিয়া ও জৈব সার ব্যবহার করেন। বরণপাড়া গ্রামের চাষি আমজাদ হোসেন মোল্লা লাউয়ের পাশাপাশি শিম, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো ও পানিকচুর আবাদ করেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিখা মল্লিক, সালমা সুলতানা, চামেলী মল্লিক জানান, সব গ্রামেই কম-বেশি লাউয়ের আবাদ হচ্ছে। চাষিরা প্রতি বছরই লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার অতিরিক্তি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবানন্দ বিশ্বাস জানান, লাউয়ের পাশাপাশি শাক বিক্রি করে চাষিরা লাভবান হচ্ছে। মাছের খামারের পাশে আইল এখন আর পতিত নেই। লাউয়ের আবাদে ভরে গেছে খামারের আইলের চার পাশ। এখানকার উৎপাদিত লাউ ও শাক দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা মেটাচ্ছে। তার দেয়া তথ্য মতে, উপজেলায় লাউ চাষির সংখ্যা সহস্রাধিক।