হাওর বার্তা ডেস্কঃ ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কিশোরগঞ্জ বাজার থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে আঁকাবাঁকা গ্রামীণ মেঠোপথ পেরোলে চোখে পড়বে নয়নাভিরাম পাহাড়ি বনাঞ্চল সন্তোষপুর। প্রায় ১০৬ একর জমি নিয়ে এর বিস্তার।
বনের একটি বড় অংশ উজাড় করে আশির দশকে তৈরি করা হয়েছে রাবার বাগান। বাগানের ভেতরে আছে বিরল প্রজাতির বানরের বসবাস। যা দেখতে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী এখানে ভিড় করেন।
গ্রামটি ঘিরে রয়েছে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের নিপুণ হাতে তৈরি রাবার বাগান। সবুজ বনায়ন ও প্রকৃতির সৌন্দর্য শাল-গজারি গাছ, বন্যপ্রাণী, পাখিদের কিচির-মিচির শব্দ যেকোনো মানুষকে নির্মল আনন্দ দেবে। রাবার গাছ থেকে ট্রেপারদের (শ্রমিক) কষ আহরণের দৃশ্য এবং রাবার কষ থেকে রাবার উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। রাবার বাগান থেকে সংগৃহীত রাবার প্রক্রিয়াজাত করে দেশ-বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এখান থেকে বাংলাদেশ প্রচুর রাজস্ব আয় করে। বন বিভাগের অধীনে গোটা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বনবিটকে ঘিরে রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক বানর। বন বিভাগ থেকে এদের তদারকির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এদের খাবারের জন্যে আলাদা বরাদ্দও রয়েছে, তবে সেটি বেশ অপ্রতুল। বনাঞ্চলের বানরগুলোকে দর্শনার্থীরা নাম দিয়েছেন ‘সামাজিক বানর’। কারণ, এদের আচরণগুলো বেশ বন্ধুসুলভ। বানরগুলো দর্শনার্থীদের মাথায় ও কাঁধে উঠে খাবার নেয়। ছোট শিশুরা বন্যপ্রাণীর সঙ্গে দুষ্টুমি করলেও কামড় বা আঁচড় দেয় না। তাদের আচরণ দর্শনার্থীদের জন্যে হয়ে ওঠে উপভোগ্য। সেই দৃশ্য আপনি নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। বানররা বেশ দলবদ্ধ প্রাণী, তা এখানে আসলে আঁচ করতে পারবেন। প্রতিটি দলে রয়েছে একজন দলপতি আর রয়েছে শতাধিক বানর।
যেভাবে যাবেন বানরপল্লী
ট্রেন ও বাসযোগে যেতে পারেন। বাসে আসলে ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে আলম এশিয়া পরিবহনে (লোকাল সার্ভিস) সরাসরি চলে যেতে পারেন ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদরে। ভাড়া নেবে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা। এ বাস সার্ভিসে গেলে সময় একটু বেশি লাগবে। সময় বাঁচাতে চাইলে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে এনা পরিবহনে ২২০ টাকায় চলে যেতে পারবেন ময়মনসিংহের মাসকান্দা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। সেখান থেকে ২০ কিলোমিটার ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদরে যেতে বাস বা সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদর থেকে ১৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণাকুণি নাওগাঁও ইউনিয়নে সন্তোষপুর রাবার বাগান ও বনবিট। রাবার বাগান পর্যন্ত পাকা সড়ক। রাবার বাগানের অফিস থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা মাটির সড়ক পেরিয়ে বনবিট অফিস। উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা ভ্যানগাড়ি নিয়ে সরাসরি যেতে পারবেন রাবার বাগান ও বনবিটে। জনপ্রতি ভাড়া ৭০ থেকে ১০০ টাকা।