ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চড়াসুদের ঋণে জড়িয়ে পড়ছে জেলেরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৭
  • ৪২৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলছে মা ইলিশ নিধন বিরোধী অভিযান। নদীতে জাল ফেললেই ভ্রাম্যমাণ আদালত জেলেদের আটক ও জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এসময়ে সরকারি বরাদ্ধের ২০ কেজি করে ভিজিএফ চালের সহায়তাও পাচ্ছি না। সংসার চালানোর জন্য বেসরকারি সংস্থা ‘আশা’ থেকে ১০ টাকা হারে সুদে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি।

কথাগুলো বলছিলেন জেলেপাড়ার ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি ও জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি ।

এ স্থানে এক সময় বিপুল সংখ্যক জেলেরা বাস করতো বলে এলাকাটির নাম জেলে পাড়া। বর্তমানে সেখানে জেলে পরিবার রয়েছে মাত্র ৩৫ টি। এসব পরিবারের ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক লোক নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরে জিবীকা নির্বাহ করেন। কিন্তু নদীতে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ মৌসুমে তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এসব জেলেদের জন্য ভিজিএফের চাল বরাদ্ধ থাকলেও পাচ্ছেন না তারা। নিরুপায় হয়ে এসব জেলে এখন জড়িয়ে পড়ছে চড়াসুদের দীর্ঘ মেয়াদি ঋণে।

পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে বেঁচে থাকতে তারা বাধ্য হয়ে জড়িয়ে পড়ছে ঋণের জালে।

শুধু নবদ্বীপ মালো নন। তার মতো জেলে পাড়ার অন্যান্যরাও ‘আশা’, ‘ব্র্যাক’সহ বিভিন্ন সংস্থার ঋণে জড়িয়ে পড়ছেন।

জেলে নবদ্বীপ মালো আরো জানায়, ‘আশা’ থেকে ঋণ নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যেই কিস্তি দেয়া শুরু করতে হয়। আমাদের প্রথম কিস্তির সময়ে কর্মকর্তাদের হাতে-পায়ে ধরে অনুরোধ করলে তারা মানবিক কারণে আমাদের সুযোগ দেয়।

এরপরেই জাল ফেলার সুযোগ আসলে মাছ ধরে বিক্রি করে কিস্তি দেয়া শুরু করি। ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ এ ২২ দিন সময়ের ঘাটতি পোষাতে আমাদের কমপক্ষে ৩ মাস বেগ পেতে হয়। মাস খানেক পরে আবার শুরু হবে জাটকা বিরোধী অভিযান। যত প্রতিকূল অবস্থা সবই আমাদের প্রান্তিক জেলেদের।

বেসরকারি সংস্থা ‘আশা’ জেলা ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, জেলেদের জন্য

আমাদের বিশেষ কোন ঋণের ব্যবস্থা নেই। সাধারণ গ্রাহকের মতোই জেলেরা এসে আমাদের কাছ থেকে ঋণ নেয়। কিস্তি নেয়ার সময় অনুরোধ করলে আমরা মানবিক কারণে তাদের অতিরিক্ত সুযোগ দেই।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক জানান, জেলেদের ২০ কেজি ভিজিএফ চাল সহায়তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বরাদ্দ আসলেই আমরা তাদের দিতে পারবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চড়াসুদের ঋণে জড়িয়ে পড়ছে জেলেরা

আপডেট টাইম : ০৬:২০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলছে মা ইলিশ নিধন বিরোধী অভিযান। নদীতে জাল ফেললেই ভ্রাম্যমাণ আদালত জেলেদের আটক ও জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এসময়ে সরকারি বরাদ্ধের ২০ কেজি করে ভিজিএফ চালের সহায়তাও পাচ্ছি না। সংসার চালানোর জন্য বেসরকারি সংস্থা ‘আশা’ থেকে ১০ টাকা হারে সুদে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি।

কথাগুলো বলছিলেন জেলেপাড়ার ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি ও জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি ।

এ স্থানে এক সময় বিপুল সংখ্যক জেলেরা বাস করতো বলে এলাকাটির নাম জেলে পাড়া। বর্তমানে সেখানে জেলে পরিবার রয়েছে মাত্র ৩৫ টি। এসব পরিবারের ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক লোক নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরে জিবীকা নির্বাহ করেন। কিন্তু নদীতে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ মৌসুমে তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এসব জেলেদের জন্য ভিজিএফের চাল বরাদ্ধ থাকলেও পাচ্ছেন না তারা। নিরুপায় হয়ে এসব জেলে এখন জড়িয়ে পড়ছে চড়াসুদের দীর্ঘ মেয়াদি ঋণে।

পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে বেঁচে থাকতে তারা বাধ্য হয়ে জড়িয়ে পড়ছে ঋণের জালে।

শুধু নবদ্বীপ মালো নন। তার মতো জেলে পাড়ার অন্যান্যরাও ‘আশা’, ‘ব্র্যাক’সহ বিভিন্ন সংস্থার ঋণে জড়িয়ে পড়ছেন।

জেলে নবদ্বীপ মালো আরো জানায়, ‘আশা’ থেকে ঋণ নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যেই কিস্তি দেয়া শুরু করতে হয়। আমাদের প্রথম কিস্তির সময়ে কর্মকর্তাদের হাতে-পায়ে ধরে অনুরোধ করলে তারা মানবিক কারণে আমাদের সুযোগ দেয়।

এরপরেই জাল ফেলার সুযোগ আসলে মাছ ধরে বিক্রি করে কিস্তি দেয়া শুরু করি। ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ এ ২২ দিন সময়ের ঘাটতি পোষাতে আমাদের কমপক্ষে ৩ মাস বেগ পেতে হয়। মাস খানেক পরে আবার শুরু হবে জাটকা বিরোধী অভিযান। যত প্রতিকূল অবস্থা সবই আমাদের প্রান্তিক জেলেদের।

বেসরকারি সংস্থা ‘আশা’ জেলা ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, জেলেদের জন্য

আমাদের বিশেষ কোন ঋণের ব্যবস্থা নেই। সাধারণ গ্রাহকের মতোই জেলেরা এসে আমাদের কাছ থেকে ঋণ নেয়। কিস্তি নেয়ার সময় অনুরোধ করলে আমরা মানবিক কারণে তাদের অতিরিক্ত সুযোগ দেই।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক জানান, জেলেদের ২০ কেজি ভিজিএফ চাল সহায়তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বরাদ্দ আসলেই আমরা তাদের দিতে পারবো।