হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার ঝকমকে বিশ্বকাপের উত্তেজনায় কাঁপবে পুরো বিশ্ব, আর লিওনেল মেসি তখন বাড়িতে বসে অলস সময় কাটাবেন! কেমন লাগবে এমনটা হলে? মেসির কথা বাদ দিন, বিশ্বকাপেরই কেমন লাগবে। তর্ক সাপেক্ষে বর্তমান বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে ছাড়া বিশ্বসেরা হওয়ার লড়াই জমে নাকি? জমুক আর না জমুক, এমনটা কিন্তু ঘটতেও পারে। শঙ্কার কালো মেঘ জমতে জমতে অনেক গারো হয়েছে। সেটা সরে যাবে কিনা অর্থাৎ আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ খেলা হবে কিনা তার উত্তর পাওয়া যাবে আগামীকাল ভোরে। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর সাড়ে ৫টায় রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে যারা কিনা ৩৫ নম্বরে। আর্জেন্টিনা ৪ নম্বরে। আর্জেন্টিনার সহজ জয়ের ম্যাচ। কিন্তু পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তার উল্টা। গঞ্জালো হিগুয়েইন, সার্জিও আগুয়েরো, ডি মারিয়া, মার্কো ইকার্দিরা ক্লাবের ফর্ম ভুলে যাচ্ছেন আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে তুললেই। যার কারণে বাছাই পর্বের প্রথম ১৭ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৬টিতে জিততে পেরেছে আর্জেন্টিনা। জয়হীন বাকি ১১ ম্যাচের চারটি সর্বশেষ চার ম্যাচে। অর্থাৎ সর্বশেষ চার ম্যাচে জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার। আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্সের পর্যায়টা একেবারেই তলানির দিকে। ইতিহাস ও অবস্থানও ভাবাচ্ছে আর্জেন্টাইনদের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট উচ্চতার মাঠে ইকুয়েডর মুখোমুখি হতে হবে আর্জেন্টিনাকে। বিপক্ষ কন্ডিশন আর্জেন্টিনাকে কতটা ভোগাতে পারে ইতিহাস ঘাটলেও ভালো উত্তর পাওয়া যাবে। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে ইকুয়েডরের মাঠে জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার। ইকুয়েডরের মাঠে আর্জেন্টিনার সর্বশেষ জয়টা সেই ২০০১ সালে। ইকুয়েডরকে হারাতে হলে অসাধ্য সাধনই করতে হবে মেসিদের।
তবে অসাধ্য সাধন করলেই যে রাশিয়া বিশ্বকাপে টিকিট মিলবে এমনটা কিন্তু নয়। সর্বশেষ ম্যাচে ড্র করাতে বিশ্বকাপ খেলার বিষয়টি নিজেদের হাতে রাখতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে জিততে হবে। তারপর তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদিকে ফলের দিকে। কলম্বিয়া-পেরুর বিপক্ষের ম্যাচটা যদি ড্র হয় তাহলে সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে যাবে আর্জেন্টিনার। আর কলম্বিয়া যদি জিতে যায় এবং অপর ম্যাচে চিলিও যদি জিতে যায় তাহলে প্লে-অফ খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে। আর ইকুয়েডরের বিপক্ষে হারলে এত সমীকরণ ঘাটতে হবে না মেসিদের। সরাসরিই বিদায়।
এই দুর্দশার মধ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের সাহায্যও দরকার আর্জেন্টিনার। কারণ চিলি সর্বশেষ ম্যাচটি খেলতে নামবে ব্রাজিলের বিপক্ষে। ব্রাজিল যদি চিলিকে হারিয়ে দেয় তাহলে অনেকটা উপকার হবে আর্জেন্টিনার। আর ব্রাজিলের হেরে যাওয়া মানে আর্জেন্টিনার বিপদ বাড়িয়ে যাওয়া। অনেকে মনে করছেন চির শত্রুদের বিপদ বাড়িয়ে দিতে চিলির বিপক্ষে গা-ছাড়া ফুটবল খেলবে ব্রাজিল। কারণ তাদের বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়েছে ছয় মাস আগেই। চিলির বিপক্ষে হারলে কোনো সমস্যা হবে না ব্রাজিলের। তবে ব্রাজিলিয়ানরা আর্জেন্টিনাকে বিপদে ফেলার জন্য গা-ছাড়া ফুটবল খেলবেন এমন কথাকে হাস্যকর মনে করছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি টোস্টাও।