ঢাকা ০৬:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে আউশ ধানের বাম্পার ফলন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৩০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মেহেরপুরে চলতি মৌসুমে আউশ ধানের আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। এদিকে কাঁচা ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ৭০০ টাকা দরে। ফলে কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পাট চাষে লোকসান হওয়ায় আউশ ধান আবাদের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৩ উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। যা গত বছর আবাদের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর। বোরো ও আমন ধান চাষের চেয়ে আউশের খরচ তুলনামূলক কম। অন্যদিকে ভাদ্র মাসে গো-খাদ্যের সংকট পূরণ হচ্ছে আউশ ধানের খড় বিচুলিতে। বোরো ও আমন মৌসুমের মাঝামাঝি আউশ ধান পেয়ে কৃষি পরিবারের ভাতের জোগানও হচ্ছে। এসব বিবেচনায় আউশ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

এ মৌসুমের আবাদকৃত ধানের মধ্যে প্রায় ৪০ ভাগ কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। যার গড় ফলন বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২৪ মণ পর্যন্ত। বিভিন্ন মাঠে হাইব্রিড, নেরিকা মিউটেন্ট ও ব্রি ধান-৪৮ আবাদ হয়েছে। তবে এর মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগই ব্রি ধান-৪৮।

ভোমরদহ-জোড়পুকুরিয়া মাঠে ভোমরদহ গ্রামের কৃষক হাসান আলী গত সপ্তাহে ধান ঘরে তোলেন। তিনি বলেন, ‘বোরো ও আমন মৌসুমে উৎপাদিত ধানের চাল থেকে পরিবারের ভাতের যোগান হয়। চাষের খরচের প্রয়োজনে ধান বিক্রি করতে হয়। এতে প্রতিবছরের শ্রাবণ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত আমার ঘরে অভাব থাকে। তবে ভাদ্র মাসে আউশ ধান উত্তোলনের ফলে অভাব দূর হচ্ছে।

অপরদিকে ভরা বর্ষা মৌসুম তাই গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। মাঠেঘাটে ঘাসের আকাল। তাই কয়েকজন গরু পালনকারী আমার খেতের ধান কেটে মাড়াই করে দিয়েছেন। বিনিময়ে তারা ধানের বিচুলি নিয়েছে। এতে ধান কাটা ও মাড়াই খরচ বাবদ প্রায় ৪ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি ধান-৪৮। জাতীয় বীজবোর্ড ২০০৮ সালে রোপা আউশ হিসেবে জাতটি অবমুক্ত করে। জাতের বৈশিষ্ট্য অধিক ফলন, চাল মাঝারি মোটা, ভাত ঝরঝরে ও সু-স্বাদু। ফলে আর্থিক ও খাদ্য যোগানের ক্ষেত্রে ব্রি ধান-৪৮ সকলের নজর কেড়েছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘এ অঞ্চলের কৃষকের কাছে আস্থা অর্জন করেছে ব্রি ধান-৪৮। হাইব্রিড ও নেরিকা মিউটেন্ট জাতের ধান আবাদ হলেও তা পরিমাণে কম। আউশ ধান আবাদে খাদ্য চাহিদা পূরণ ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে গত বছরের চেয়ে এবার আউশ ধান আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মেহেরপুরে আউশ ধানের বাম্পার ফলন

আপডেট টাইম : ০৭:৪০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মেহেরপুরে চলতি মৌসুমে আউশ ধানের আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। এদিকে কাঁচা ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ৭০০ টাকা দরে। ফলে কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পাট চাষে লোকসান হওয়ায় আউশ ধান আবাদের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৩ উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। যা গত বছর আবাদের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর। বোরো ও আমন ধান চাষের চেয়ে আউশের খরচ তুলনামূলক কম। অন্যদিকে ভাদ্র মাসে গো-খাদ্যের সংকট পূরণ হচ্ছে আউশ ধানের খড় বিচুলিতে। বোরো ও আমন মৌসুমের মাঝামাঝি আউশ ধান পেয়ে কৃষি পরিবারের ভাতের জোগানও হচ্ছে। এসব বিবেচনায় আউশ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

এ মৌসুমের আবাদকৃত ধানের মধ্যে প্রায় ৪০ ভাগ কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। যার গড় ফলন বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২৪ মণ পর্যন্ত। বিভিন্ন মাঠে হাইব্রিড, নেরিকা মিউটেন্ট ও ব্রি ধান-৪৮ আবাদ হয়েছে। তবে এর মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগই ব্রি ধান-৪৮।

ভোমরদহ-জোড়পুকুরিয়া মাঠে ভোমরদহ গ্রামের কৃষক হাসান আলী গত সপ্তাহে ধান ঘরে তোলেন। তিনি বলেন, ‘বোরো ও আমন মৌসুমে উৎপাদিত ধানের চাল থেকে পরিবারের ভাতের যোগান হয়। চাষের খরচের প্রয়োজনে ধান বিক্রি করতে হয়। এতে প্রতিবছরের শ্রাবণ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত আমার ঘরে অভাব থাকে। তবে ভাদ্র মাসে আউশ ধান উত্তোলনের ফলে অভাব দূর হচ্ছে।

অপরদিকে ভরা বর্ষা মৌসুম তাই গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। মাঠেঘাটে ঘাসের আকাল। তাই কয়েকজন গরু পালনকারী আমার খেতের ধান কেটে মাড়াই করে দিয়েছেন। বিনিময়ে তারা ধানের বিচুলি নিয়েছে। এতে ধান কাটা ও মাড়াই খরচ বাবদ প্রায় ৪ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি ধান-৪৮। জাতীয় বীজবোর্ড ২০০৮ সালে রোপা আউশ হিসেবে জাতটি অবমুক্ত করে। জাতের বৈশিষ্ট্য অধিক ফলন, চাল মাঝারি মোটা, ভাত ঝরঝরে ও সু-স্বাদু। ফলে আর্থিক ও খাদ্য যোগানের ক্ষেত্রে ব্রি ধান-৪৮ সকলের নজর কেড়েছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘এ অঞ্চলের কৃষকের কাছে আস্থা অর্জন করেছে ব্রি ধান-৪৮। হাইব্রিড ও নেরিকা মিউটেন্ট জাতের ধান আবাদ হলেও তা পরিমাণে কম। আউশ ধান আবাদে খাদ্য চাহিদা পূরণ ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে গত বছরের চেয়ে এবার আউশ ধান আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।