হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচনকালীন সরকার ও জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়ন চায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর এম এ মুকিত ও মহাসচিব বি এ নাজমুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রবিবার বিকালে ইসির সঙ্গে সংলাপে বসে। এসময় তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে ১২ দফা লিখিত প্রস্তাব দেয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে বিকাল ৩টায় এ সংলাপ শুরু হয়। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
দলটি মনে করে নির্বাচনে সংসদ বহাল থাকলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাই তারা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তার দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির অন্য দাবিগুলো হলো- নির্বাচনের কমপক্ষে ছয় মাস আগে ভোটারদের হালনাগাদ তালিকা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশের ব্যবস্থা, নির্বাচনের তিন মাস আগে নির্বাচনের পরবর্তী কমপক্ষে একমাস পর্যন্ত মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার লক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও নির্বাচন কমিশনের জনবলের সল্পতার কথা বিবেচনা করে জাতীয় নির্বাচন প্রশাসনিক বিভাগ অনুযায়ী অর্থাৎ এক বিভাগে একদিন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আযোজন এবং নির্বাচন শেষে এক দিনে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা প্রস্তাব, যে সব কর্মকর্তার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল বা আছে এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচলনার সব পর্যায়ে দায়িত্ব দেয়া থেকে বিরত রাখা, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে যে কোনো ধরনের অনিয়ম রোধে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, প্রবাসী ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বিদেশে অবস্থিত দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে তাদের ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা, ভোট গ্রহণ কার্যক্রমে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল না বা বর্তমানে নাই এমন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালে সন্ত্রাস-পেশীশক্তি প্রদর্শন রোধের জন্য প্রার্থীদের নিজ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সব মিছিল ও জনসভা নিষিদ্ধ করে প্রতিটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের খরচে ও উদ্যোগের অংশ গ্রহণকারী সব প্রার্থীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিচিতি সভা করা (এক মঞ্চে সবাই) অনুষ্ঠানের বিধান করা, দেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আনুপাতিক হারে সংসদে আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, না ভোটের বিধান চালু করা।
দলটি লিখিত অভিগোগ করে নির্বাচন কমিশনকে জানায় যে, সরকারের মন্ত্রী ও সংসদের সরকারি ব্যয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালাচ্ছে। অন্যদিকে অনেক বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তাই সরকারি ব্যয়ে অনুষ্ঠিত সভা-সমাবেশে নির্বাচনী প্রচার চালানো থেকে বিরত রাখতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ হতে সরকারের প্রতি অহবান জানানোর অনুরোধ করে করছি।
অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো যাতে স্বাভাবিক রাজনৈতিক সভা- সমাবেশ করতে পারে তা নিশ্চিত করতেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহবান জানানোর অনুরোধ করে দলটি।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানে হয়, আমরা আশা করছি নির্বাচন কমিশন সব দলের জন্য এখন থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে উদ্যো নেবে।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে ইসির ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী এ সংলাপ করছে ইসি। সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের পর ধারাবাহিক রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন। গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজ, ১৬ ও ১৭ অগাস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপের পর ২৪ অগাস্ট থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মত বিনিময় শুরু করে ইসি।