হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারে বাইরের হস্তক্ষেপের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাশিয়া জানায় রোহিঙ্গা সংকট দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে’ হস্তক্ষেপের উদ্যোগ শুধু ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
রুশ বার্তা সংস্থা তাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাকে বক্তব্য উল্লেখ করে জানিয়েছে, ‘এটা মনে রাখা দরকার যে, একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার ইচ্ছা কেবল আন্তঃধর্মীয় বিরোধ বাড়িয়ে দিতে পারে।’
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে তিন সপ্তাহে চার লাখের মতো মুসলিম রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে; তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ ও ঘর পোড়ানোর কথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই নৃশংসতার নিন্দা জানিয়েছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তার ওই আহ্বানের পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অতিরিক্ত সহিংসতার খবরে উদ্বেগ জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদে যে কোনো প্রস্তাব আটকে দেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত চীনের সঙ্গে রাশিয়াও রয়েছে।
রাশিয়ার এই বক্তব্যের আগে রোহিঙ্গা সংকটের জন্য এই মুসলিম জনগোষ্ঠীকেই দায়ী করেছিলেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং চিয়াং।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে পুলিশের উপর হামলার কারণে সহিংসতা শুরু হয়। এর পর রোহিঙ্গারা সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলছেন, মিয়ানমারে সংকট সমাধানে ধর্মীয় নেতাদের আলোচনার উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে মস্কো।
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি এবং ওই ধর্মের অনুসারীদের প্রতি উগ্রপন্থিদের উসকানিতে ঝাপিয়ে না পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
জাখারোভ বলেন, ‘জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ ‘বাস্তবায়নে’ মিয়ানমারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে মস্কো। এজন্য মিয়ানমারের সমাজকল্যাণমন্ত্রীর নেতৃত্বে কমিটি গঠনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলছেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে কর্তৃপক্ষ সহায়তা করছে।
জাখারোভ বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমানে করে রাখাইনে খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামত করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, স্থানীয় ও বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জন্য ওই এলাকার উত্তরাঞ্চলে সফরের আয়োজন করা হয়েছে।