হাওর বার্তা ডেস্কঃ নরসিংদীতে ঘুষের টাকা সহ সরকারী কর্মচারীকে আটক করেছে দুদক। নরসিংদী জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে বিআরটিএ অফিসে কর্মরত সীল মেকানিক সুমন কুমার সাহা ঘুষের ১০ হাজার টাকাসহ দুদক কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় টাকাসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার করা হয়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা গ্রাহক বেলাবো উপজেলার রাজারবাগ গ্রামের মৃত আব্দুল রাশেদের পুত্র ইয়াসিন আরাফাত জানায়, চাকরীর প্রয়োজনে গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বিআরটিএ নরসিংদী কার্যালয়ে আসলে উক্ত কার্যলয়ের কর্মকর্তা সিল মেকানিক সুমন কুমার সাহা তার লাইসেন্স করে দেয়ার কথা বলে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এবং ১ মাস ১০ দিনের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্সের সমস্ত কাজ করে দেবেন বলে জানান। ইয়াসিন নিজেকে ছাত্র বলে কিছু টাকা কম দিতে চাইলেও রাজি হয় নি সিল মেকানিক। পরে বাধ্য হয়ে ঢাকা দুদক অফিসে জানালে দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি টিম নরসিংদীতে অবস্থান করেন। ইয়াসিন তার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সুমন কুমার সাহার হাতে ঘুষের ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। দুদকের কর্মকর্তারা টাকাসহ তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
নরসিংদী বিআরটিএ অসাধু কর্মকর্তা মটরপরিদর্শক কামরুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক একেএম মিজানুর রশীদের সহযোগীতায় একটি দালালচক্র গড়ে উঠে এবং গ্রাহকদের কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের নিকট থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। গ্রাহকরা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করলেও আমলে নেয়নি কর্মকর্তারা। এই অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজই হচ্ছিলো না। প্রতিটি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য সরকারীভাবে ২ হাজার ৫ শত টাকা লাগে। এর স্থলে সকলে মিলে মিশে প্রতি লাইসেন্স বাবদ ২০-২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও ট্রাক-বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি, মটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য নরসিংদী বিআরটিএ অফিসে আসলে সরকারী ফির চেয়ে ২-৩ গুন বেশি টাকা দিতে হচ্ছে তাদেরকে। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা দুদক কর্মকর্তাদের কাছে পেয়ে মৌখিক অভিযোগ প্রদান করেন।
এ ব্যপারে দুনীতি দমন কমিশন ঢাকা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বাদী হয়ে সুমন কুমার সাহা সিল মেকানিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে এবং সুমন কুমার সাহাকে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরন করেন।
এসব ব্যপারে নরসিংদী বিআরটিএ চেয়ারম্যান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ছুটিতে থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।