রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে জাতিসংঘের পদক্ষেপ নিতে হবে :প্রধানমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরাতে জাতিসংঘের কার্যকর পদক্ষেপ চেয়েছেন। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ডি ওয়াটকিনস গতকাল বুধবার বিদায়ী সাক্ষাত্ করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেলে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের যাতে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, সেজন্য জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।

মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। গত ২৪ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির হামলার পর সীমান্তে নতুন করে মিয়ানমার নাগরিক এই রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। রবার্ট ওয়াটকিনস সাক্ষাত্কালে প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদের হিসাব অনুযায়ী এই দফায় প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে আরো বহু মানুষ শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের বিদায়ী আবাসিক প্রতিনিধি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, ‘মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের কারা অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করছে, তা খুঁজে বের করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

রবার্ট ওয়াটকিনস প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখছেন। রাখাইনের ওই পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট সংকটে মানবিক দিক থেকে যা করণীয় বাংলাদেশ তাই করছে বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের চিহ্নিত করতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সাহায্য করতে পারে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের এ ধরনের সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশ তাকে স্বাগত জানাবে। দুর্যোগে ক্ষতি এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি এড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন এবং কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আবু মোজাফ্ফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর লেখা বই ‘শেখ মুজিব আমার পিতা ’ তিনটি ভাষায় প্রকাশিত হচ্ছে

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইটি একই সঙ্গে তিনটি ভাষায় প্রকাশিত হচ্ছে। ইংরেজি, হিন্দি ও জার্মান এই তিন ভাষায় বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বইটির প্রকাশক ও আগামী প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বাসসকে জানান। তিনি জানান, বইটির ইংরেজি সংস্করণ আগামী প্রকাশনী প্রকাশ করবে। হিন্দি সংস্করণ কলকাতার একটি প্রকাশনা সংস্থা এবং জার্মানের একটি প্রকাশনা সংস্থা জামার্নি ভাষায় বইটি প্রকাশ করবে। তিনি জানান ইংরেজি সংস্করণ আগামী বইমেলায় প্রকাশ করা হবে। ইংরেজি অনুবাদের কাজ চলছে বলে তিনি জানান। হিন্দি ও জার্মান ভাষায় অনুবাদ কাজের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

শেখ হাসিনার ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইটি প্রথম বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে কলকাতা বইমেলায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর