ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৪৩০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মেহেরপুরের প্রায় প্রতিটি ঘরেই পালন হচ্ছে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল। শহর কী গ্রাম অসহায় ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ একদিকে মিটাচ্ছে পুষ্টির চাহিদা আর অন্যদিকে গতিশীল করছে অর্থনীতির চাকা।

মেহেরপুরে এখন প্রায় ১ লাখ পরিবারে প্রায় ২ লাখ ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।

মেহেরপুর জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুরে ১ লাখ ৬ হাজার পরিবারে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৮ টি ছাগল পালন হচ্ছে। যার সবগুলো ব্লাক বেঙ্গল ছাগল।

মেহেরপুরের শহর ও গ্রামে প্রচুর পরিমাণে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল দেখা যায়। এমন কম বাড়ি দেখা যায় যে বাড়িতে ছাগল নেই। এসব ছাগল পালনকারীরা অনেক সময় নিজেরাই জানেন না যে তারা যে ছাগল পালন করছেন তা বিশ্বের প্রথম শ্রেণির ছাগল এবং এর মাংশ অন্যান্য ছাগলের মাংশের চেয়ে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। এছাড়া এর চামড়া বিশ্বমানের এবং কুষ্টিয়া গ্রেড হিসেবেও পরিচিত।

এ অঞ্চলের ছাগলের চাহিদা থাকায় প্রতি সপ্তাহে মেহেরপুর জেলার পশু হাট থেকে ট্রাক ভর্তি করে ছাগল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উত্তরপূর্ব জেলাগুলোতে নেয়া হয় বলে জানালেন ছাগল পালনকারী কবির হোসেন।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ছাগল উৎপাদনকারি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪র্থ স্থানটি দখল করে রেখেছে। আর এদেশে উৎপন্ন ৯৫ ভাগ ছাগলই ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল।

মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরসহ দেশের দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় এ ছাগলের চাষ বেশি লক্ষ্য করা যায়। মেহেরপুর জেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ৫ থেকে ২০টি পর্যন্ত ছাগল রয়েছে। যার সামর্থ্য নেই সে ও অন্তত ২ টি থেকে ৩ টি ছাগল পালন করছেন।

আশি’র দশকে বি.আর.ডি.বি’র সহযোগিতায় মেহেরপুরে উন্নত ছাগলের সংকরজাত ছাগল উৎপাদনের জন্য জাপানিরা শহরের পুলিশ লাইন এলাকায় প্রথম একটি ছাগলের খামার করে। কিন্তু এ জেলার মানুষ সংকরজাত ছাগল উৎপাদনে আগ্রহী না হওয়ায় তা অল্প দিনের ব্যবধানে মুখ থুবড়ে পড়ে। ওই স্থানে এখনো খামারের অস্তিত্ব থাকলেও নেই কোন দেশি-বিদেশী ছাগল।

মেহেরপুর সদর শোলমারী গ্রামের বাঙালপাড়ায় ছাগল পালন করছেন বিলকিস। প্রথমে দু’টি ছাগল পালনের মাধ্যমে তার ছাগল পালনের যাত্রা শুরু হলেও এখন তার কাছে ছাগল রয়েছে ৬২টি। এবার ঈদে তিনি বেশ কয়েকটি ছাগল বিক্রি করে লাভের মুখও দেখেছেন।

ছাগল বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি বাড়ি করার জমি কিনে পাঁকা বাড়িও করেছেন ইতোমধ্যে। মেহেরপুরে সংসারে আর্থিক সহযোগিতা করতে নারীরা দু’চারটি ছাগল পালন করছেন।

মেহেরপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক কুমার মণ্ডল জানান, মেহেরপুর ছাগল উৎপাদন ও পালন করার মতো একটি উন্নত জেলা। এ জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল উৎপাদন হচ্ছে। খামারীদের পাশা-পাশি বাড়িতে বাড়িতে এ ছাগল পালন চলছে। মেহেরপুর প্রাণি সম্পদ বিভাগ ছাগল পালনকারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মেহেরপুরে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল

আপডেট টাইম : ০৮:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মেহেরপুরের প্রায় প্রতিটি ঘরেই পালন হচ্ছে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল। শহর কী গ্রাম অসহায় ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ একদিকে মিটাচ্ছে পুষ্টির চাহিদা আর অন্যদিকে গতিশীল করছে অর্থনীতির চাকা।

মেহেরপুরে এখন প্রায় ১ লাখ পরিবারে প্রায় ২ লাখ ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।

মেহেরপুর জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুরে ১ লাখ ৬ হাজার পরিবারে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৮ টি ছাগল পালন হচ্ছে। যার সবগুলো ব্লাক বেঙ্গল ছাগল।

মেহেরপুরের শহর ও গ্রামে প্রচুর পরিমাণে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল দেখা যায়। এমন কম বাড়ি দেখা যায় যে বাড়িতে ছাগল নেই। এসব ছাগল পালনকারীরা অনেক সময় নিজেরাই জানেন না যে তারা যে ছাগল পালন করছেন তা বিশ্বের প্রথম শ্রেণির ছাগল এবং এর মাংশ অন্যান্য ছাগলের মাংশের চেয়ে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। এছাড়া এর চামড়া বিশ্বমানের এবং কুষ্টিয়া গ্রেড হিসেবেও পরিচিত।

এ অঞ্চলের ছাগলের চাহিদা থাকায় প্রতি সপ্তাহে মেহেরপুর জেলার পশু হাট থেকে ট্রাক ভর্তি করে ছাগল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উত্তরপূর্ব জেলাগুলোতে নেয়া হয় বলে জানালেন ছাগল পালনকারী কবির হোসেন।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ছাগল উৎপাদনকারি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪র্থ স্থানটি দখল করে রেখেছে। আর এদেশে উৎপন্ন ৯৫ ভাগ ছাগলই ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল।

মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরসহ দেশের দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় এ ছাগলের চাষ বেশি লক্ষ্য করা যায়। মেহেরপুর জেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ৫ থেকে ২০টি পর্যন্ত ছাগল রয়েছে। যার সামর্থ্য নেই সে ও অন্তত ২ টি থেকে ৩ টি ছাগল পালন করছেন।

আশি’র দশকে বি.আর.ডি.বি’র সহযোগিতায় মেহেরপুরে উন্নত ছাগলের সংকরজাত ছাগল উৎপাদনের জন্য জাপানিরা শহরের পুলিশ লাইন এলাকায় প্রথম একটি ছাগলের খামার করে। কিন্তু এ জেলার মানুষ সংকরজাত ছাগল উৎপাদনে আগ্রহী না হওয়ায় তা অল্প দিনের ব্যবধানে মুখ থুবড়ে পড়ে। ওই স্থানে এখনো খামারের অস্তিত্ব থাকলেও নেই কোন দেশি-বিদেশী ছাগল।

মেহেরপুর সদর শোলমারী গ্রামের বাঙালপাড়ায় ছাগল পালন করছেন বিলকিস। প্রথমে দু’টি ছাগল পালনের মাধ্যমে তার ছাগল পালনের যাত্রা শুরু হলেও এখন তার কাছে ছাগল রয়েছে ৬২টি। এবার ঈদে তিনি বেশ কয়েকটি ছাগল বিক্রি করে লাভের মুখও দেখেছেন।

ছাগল বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি বাড়ি করার জমি কিনে পাঁকা বাড়িও করেছেন ইতোমধ্যে। মেহেরপুরে সংসারে আর্থিক সহযোগিতা করতে নারীরা দু’চারটি ছাগল পালন করছেন।

মেহেরপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক কুমার মণ্ডল জানান, মেহেরপুর ছাগল উৎপাদন ও পালন করার মতো একটি উন্নত জেলা। এ জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল উৎপাদন হচ্ছে। খামারীদের পাশা-পাশি বাড়িতে বাড়িতে এ ছাগল পালন চলছে। মেহেরপুর প্রাণি সম্পদ বিভাগ ছাগল পালনকারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।