ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩৩ মণের দ্বীপরাজে কাঁপছে গাবতলী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৭
  • ৩৭৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাদা শরীর জুড়ে কালো ছোপ ছোপ। দেখতে অনেকটা ডোরা কাটা বাঘের মতো। ছোট্ট দুটি শিং, বুলবুলির পাখির মতো উঁচু ঝুট সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গলার ঝুল, মাটি ছুঁই ছুঁই বাহারি লেজ। লেজের শেষ ভাগ, শিং ও কানের কিছু অংশ বাদে সমস্ত শরীরজুড়ে সাদা চামড়ার ভিতর লালচে আভা। লাল-সাদা রশি নাক ও গলায় বাঁধা। মূলত বিশালদেহীকে নিয়ন্ত্রণ করতেই নাক বেয়ে গলায় মোড়ানো নাইলনের ওই শক্ত রশি। বিশালদেহী গরুটির নাম দ্বীপরাজ।

সোমবার রাজধানীর গাবতলীর পশুর হাটের প্রবেশ মুখের পাশেই দেখা মিলেছে দ্বীপরাজের। কুষ্টিয়া কুমারখালীর কবুর হাট গ্রাম থেকে এসেছে দ্বীপরাজ। বয়স দুই বছর আট মাস। চার দাঁতের দ্বীপরাজের ওজন ৩৩ মণ। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ। কোরবানি উপলক্ষে দুই দিন আগে কুষ্টিয়া থেকে গাবতলীতে এসেছে গরুটি। দ্বীপরাজ এখন গাবতলীর বড় গরু!

ফ্রিজিয়ানা জাতের গরুটির জন্ম খামারেই। নয় বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান সেলিনাকে (গাভী) কেনেন দ্বীপরাজের মালিক শাহিন বিশ্বাস। সেলিনার দুই নম্বর সন্তান দ্বীপরাজ। মা সেলিনা প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ কেজি দুধ দেয়। তবে দ্বীপরাজ জন্মানোর দুই বছর পর্যন্ত দুধ দহন করেনি শাহিন। দ্বীপরাজকে হৃষ্টপুষ্ট করতে তার জন্য বরাদ্দ ছিলো সবটুকু দুধ।

তবে গাবতলী হাটে দ্বীপরাজকে এনে বিপাকে পড়েছেন শাহিন। গাবতলী হাট মালিককে সাত হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি। বিনিময়ে গরুর জন্য দুইটা ফ্যান এবং একটা টিউবলাইট পাওয়ার কথা। অথচ এর কোনোটিই করেনি হাট কর্তৃপক্ষ। ফলে আবারও পকেটের টাকা খরচা করে টেবিল ফ্যান কিনে দ্বীপরাজের মাথায় ধরেছেন শাহিন। কারণ আদুরে দ্বীপরাজের দুই ফ্যান ছাড়া চলে না।

দ্বীপরাজ প্রসঙ্গে শাহিন বিশ্বাস বলেন, অল্প বয়সে অনেক বড় হয়েছে দ্বীপরাজ। ওর মা সেলিনাও কোনো অংশে কম না। ওর মার মতোই দেখতে হয়েছে দ্বীপরাজ। সেলিনার দুধ আমরা দহন করিনি। দুই লাখ টাকার দুধই খেয়েছে, দিনে ২৫ থেকে ৩০ কেজি দুধ দ্বীপরাজ খেয়েছে। হয়তো কোনোদিন বাড়িতে আত্মীয় স্বজন এলে এক থেকে দেড় কেজি দুধ আমরা দহন করেছি। রাতে ঘুমাতে দ্বীপরাজের দুই ফ্যান লাগে। কিন্তু হাটে সেই সুবিধা নাই।

বিশালদেহী দ্বীপরাজের দৈনিক খাবার লাগে ১৮ থেকে ২০ কেজি। অল্প বয়সেই হাতির মতো দেখতে হয়েছে গরুটি। মা সেলিনার দুধের পাশাপাশি প্রতিদিন গম, ভুট্টা, খেসারির ভূষি খেতে না দিলে বেঁকে বসে দ্বীপরাজ। দুই বেলা গোসল করানো হয় তাকে। সঙ্গে থাকে সাবান ও শ্যাম্পু। সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয় থাকার জায়গা। দ্বীপরাজের উচ্চতা ছয় ফুটের ওপরে, দৈর্ঘ্যও ১১ ফুট।

দ্বীপরাজের সঙ্গে আরো বিশাল গরু রাখা হয়েছে প্যান্ডেলের নিচে। দ্বীপরাজের ঠিক পেছনে রাখা হয়েছে কুষ্টিয়া থেকে আনা আরেক বিশালদেহী গরু কালা বাবু। কালা বাবুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১৩ লাখ টাকা। সাড়ে তিন বছর বয়স কালা বাবুর ওজন ৩২ মণ। এটাও দ্বীপরাজের মতো ফ্রিজিয়ানা জাতের।

কালা বাবুর মালিক জিয়াউর রহমান সুমন বলেন, কালা বাবুর দাম ১৩ লাখ। দুই দিন আগে কুষ্টিয়া থেকে কালা বাবুকে গাবতলীতে আনা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ছয় লাখ টাকা দাম উঠেছে। কালা বাবুর ওজন ৩২ মণ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

৩৩ মণের দ্বীপরাজে কাঁপছে গাবতলী

আপডেট টাইম : ০৯:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাদা শরীর জুড়ে কালো ছোপ ছোপ। দেখতে অনেকটা ডোরা কাটা বাঘের মতো। ছোট্ট দুটি শিং, বুলবুলির পাখির মতো উঁচু ঝুট সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গলার ঝুল, মাটি ছুঁই ছুঁই বাহারি লেজ। লেজের শেষ ভাগ, শিং ও কানের কিছু অংশ বাদে সমস্ত শরীরজুড়ে সাদা চামড়ার ভিতর লালচে আভা। লাল-সাদা রশি নাক ও গলায় বাঁধা। মূলত বিশালদেহীকে নিয়ন্ত্রণ করতেই নাক বেয়ে গলায় মোড়ানো নাইলনের ওই শক্ত রশি। বিশালদেহী গরুটির নাম দ্বীপরাজ।

সোমবার রাজধানীর গাবতলীর পশুর হাটের প্রবেশ মুখের পাশেই দেখা মিলেছে দ্বীপরাজের। কুষ্টিয়া কুমারখালীর কবুর হাট গ্রাম থেকে এসেছে দ্বীপরাজ। বয়স দুই বছর আট মাস। চার দাঁতের দ্বীপরাজের ওজন ৩৩ মণ। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ। কোরবানি উপলক্ষে দুই দিন আগে কুষ্টিয়া থেকে গাবতলীতে এসেছে গরুটি। দ্বীপরাজ এখন গাবতলীর বড় গরু!

ফ্রিজিয়ানা জাতের গরুটির জন্ম খামারেই। নয় বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান সেলিনাকে (গাভী) কেনেন দ্বীপরাজের মালিক শাহিন বিশ্বাস। সেলিনার দুই নম্বর সন্তান দ্বীপরাজ। মা সেলিনা প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ কেজি দুধ দেয়। তবে দ্বীপরাজ জন্মানোর দুই বছর পর্যন্ত দুধ দহন করেনি শাহিন। দ্বীপরাজকে হৃষ্টপুষ্ট করতে তার জন্য বরাদ্দ ছিলো সবটুকু দুধ।

তবে গাবতলী হাটে দ্বীপরাজকে এনে বিপাকে পড়েছেন শাহিন। গাবতলী হাট মালিককে সাত হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি। বিনিময়ে গরুর জন্য দুইটা ফ্যান এবং একটা টিউবলাইট পাওয়ার কথা। অথচ এর কোনোটিই করেনি হাট কর্তৃপক্ষ। ফলে আবারও পকেটের টাকা খরচা করে টেবিল ফ্যান কিনে দ্বীপরাজের মাথায় ধরেছেন শাহিন। কারণ আদুরে দ্বীপরাজের দুই ফ্যান ছাড়া চলে না।

দ্বীপরাজ প্রসঙ্গে শাহিন বিশ্বাস বলেন, অল্প বয়সে অনেক বড় হয়েছে দ্বীপরাজ। ওর মা সেলিনাও কোনো অংশে কম না। ওর মার মতোই দেখতে হয়েছে দ্বীপরাজ। সেলিনার দুধ আমরা দহন করিনি। দুই লাখ টাকার দুধই খেয়েছে, দিনে ২৫ থেকে ৩০ কেজি দুধ দ্বীপরাজ খেয়েছে। হয়তো কোনোদিন বাড়িতে আত্মীয় স্বজন এলে এক থেকে দেড় কেজি দুধ আমরা দহন করেছি। রাতে ঘুমাতে দ্বীপরাজের দুই ফ্যান লাগে। কিন্তু হাটে সেই সুবিধা নাই।

বিশালদেহী দ্বীপরাজের দৈনিক খাবার লাগে ১৮ থেকে ২০ কেজি। অল্প বয়সেই হাতির মতো দেখতে হয়েছে গরুটি। মা সেলিনার দুধের পাশাপাশি প্রতিদিন গম, ভুট্টা, খেসারির ভূষি খেতে না দিলে বেঁকে বসে দ্বীপরাজ। দুই বেলা গোসল করানো হয় তাকে। সঙ্গে থাকে সাবান ও শ্যাম্পু। সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয় থাকার জায়গা। দ্বীপরাজের উচ্চতা ছয় ফুটের ওপরে, দৈর্ঘ্যও ১১ ফুট।

দ্বীপরাজের সঙ্গে আরো বিশাল গরু রাখা হয়েছে প্যান্ডেলের নিচে। দ্বীপরাজের ঠিক পেছনে রাখা হয়েছে কুষ্টিয়া থেকে আনা আরেক বিশালদেহী গরু কালা বাবু। কালা বাবুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১৩ লাখ টাকা। সাড়ে তিন বছর বয়স কালা বাবুর ওজন ৩২ মণ। এটাও দ্বীপরাজের মতো ফ্রিজিয়ানা জাতের।

কালা বাবুর মালিক জিয়াউর রহমান সুমন বলেন, কালা বাবুর দাম ১৩ লাখ। দুই দিন আগে কুষ্টিয়া থেকে কালা বাবুকে গাবতলীতে আনা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ছয় লাখ টাকা দাম উঠেছে। কালা বাবুর ওজন ৩২ মণ।