ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারের অনুদান সঠিকভাবে বণ্টন হয় না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৫৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির অনুদানসমূহ প্রান্তিক পর্যায়ে দরিদ্র মানুষগুলোর কাছে সঠিকভাবে বণ্টন হয় না বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির নীতিমালা ও বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের উদ্যোগে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের সহায়তায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে গবেষণা ও মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতার আলোকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকারের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ অলী।

মূল প্রবন্ধে দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের কিছু নির্দেশনার পাশাপাশি কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জন্য আমরা অনেক পথ এগিয়েছি। এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য দরিদ্রতা দূর করা। এর জন্য সরকার বিভিন্ন উন্নয়ণমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

তবে এসব প্রকল্পের অনুদান প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পে গৃহীত কর্মসূচি প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছাতে কিছুটা বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়। ভাতা প্রদানের জন্য যে অনুদান দেওয়া হয় তা সঠিকবাবে বিতরণ হয় না। এ থেকে উত্তরণের জন্য ইতোমধ্যে আমরা একটি জরিপ শুরু করেছি। যাতে করে সঠিক মানুষের কাছে অনুদানটি পৌঁছায়।

এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দরিদ্রতা থেকে বের হয়ে আনতে নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। যাতে করে তারা ঘরে বসেই আয় করতে পারে।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বর্তমান সরকার ৫৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে আমরা ১০ লাখ নারীকে প্রশিক্ষণ এবং ৩ লাখ নারীকে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করছি।

তিনি বলেন, দরিদ্রতা থেকে মুক্তি মানে এই নয় যে সরকারের অনুদান বা ভাতার জন্য বসে থাকতে হবে। এটা উচিত নয়। নিজেদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ তৈরি করতে হবে। তবেই দারিদ্র্য থেকে মুক্তি মিলবে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মো. নুরুল কবির বলেন, দরিদ্রতা থেকে মুক্তির জন্য সরকারের ক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সব উপকারভোগীর কাছে ভাতা পৌঁছানো হচ্ছে। বর্তমানে ৮ লাখ ২৫ হাজার প্রবীণকে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। আগামীতে আরও বৃদ্ধি করা হবে।

তিনি বলেন, সরকার সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) সফলতার সঙ্গে অর্জন করেছে। আশা করি ২০৩০ সালের জন্য যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; সেটিও সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এবং পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আমি কোনো প্রকল্পে বিশ্বাস করি না। সরাসরি দীর্ঘ মেয়াদি কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।

কর্মসূচিতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সব মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের পরিচালক চন্দন জেড গোমেজ, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নুরুল ইসলাম তালুকদার, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. রাজনীন আহমেদ প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সরকারের অনুদান সঠিকভাবে বণ্টন হয় না

আপডেট টাইম : ০৬:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির অনুদানসমূহ প্রান্তিক পর্যায়ে দরিদ্র মানুষগুলোর কাছে সঠিকভাবে বণ্টন হয় না বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির নীতিমালা ও বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের উদ্যোগে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের সহায়তায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে গবেষণা ও মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতার আলোকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকারের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ অলী।

মূল প্রবন্ধে দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের কিছু নির্দেশনার পাশাপাশি কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জন্য আমরা অনেক পথ এগিয়েছি। এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য দরিদ্রতা দূর করা। এর জন্য সরকার বিভিন্ন উন্নয়ণমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

তবে এসব প্রকল্পের অনুদান প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পে গৃহীত কর্মসূচি প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছাতে কিছুটা বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়। ভাতা প্রদানের জন্য যে অনুদান দেওয়া হয় তা সঠিকবাবে বিতরণ হয় না। এ থেকে উত্তরণের জন্য ইতোমধ্যে আমরা একটি জরিপ শুরু করেছি। যাতে করে সঠিক মানুষের কাছে অনুদানটি পৌঁছায়।

এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দরিদ্রতা থেকে বের হয়ে আনতে নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। যাতে করে তারা ঘরে বসেই আয় করতে পারে।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বর্তমান সরকার ৫৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে আমরা ১০ লাখ নারীকে প্রশিক্ষণ এবং ৩ লাখ নারীকে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করছি।

তিনি বলেন, দরিদ্রতা থেকে মুক্তি মানে এই নয় যে সরকারের অনুদান বা ভাতার জন্য বসে থাকতে হবে। এটা উচিত নয়। নিজেদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ তৈরি করতে হবে। তবেই দারিদ্র্য থেকে মুক্তি মিলবে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মো. নুরুল কবির বলেন, দরিদ্রতা থেকে মুক্তির জন্য সরকারের ক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সব উপকারভোগীর কাছে ভাতা পৌঁছানো হচ্ছে। বর্তমানে ৮ লাখ ২৫ হাজার প্রবীণকে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। আগামীতে আরও বৃদ্ধি করা হবে।

তিনি বলেন, সরকার সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) সফলতার সঙ্গে অর্জন করেছে। আশা করি ২০৩০ সালের জন্য যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; সেটিও সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এবং পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আমি কোনো প্রকল্পে বিশ্বাস করি না। সরাসরি দীর্ঘ মেয়াদি কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।

কর্মসূচিতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সব মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের পরিচালক চন্দন জেড গোমেজ, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নুরুল ইসলাম তালুকদার, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. রাজনীন আহমেদ প্রমুখ।