ঢাকা ১০:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প চরমভাবে ‘অস্বচ্ছ’: টিআইবি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১২:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৫৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে জলবায়ু অর্থায়ন তহবিল থেকে বাস্তবায়িত প্রকল্পে চরম অস্বচ্ছ্তা, অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর বাংলাদেশ শাখা টিআইবি। সংস্থাটির গবেষণায় এই তথ্য বের হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে তারা।

বুধাবর দুপুরে রাজধানীতে সংস্থাটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সময় বলা হয়, ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রকল্প অনুমোদনে বিভিন্ন পর্যায়ে সুপারিশ করে।

২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ছয়টি প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা করেছে টিআইবি। প্রকল্পগুলো হলো: ১. খরা ঝুঁকি মোকাবেলায় অবকাঠামো নির্মাণ, নদীতীর সংরক্ষণ ও নদী পুনঃখনন; ২. বন্যা ঝুঁকি এড়াতে নদীতীর সংরক্ষণ; ৩. ঘূর্ণিঝড় ও লবণাক্ততা ঝুঁকিতে নদী তীর সংরক্ষণ ও বাঁধ পুন:নির্মাণ; ৫. ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার জন্য পোল্ডার নির্মাণ; ৬. বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ। এসব প্রকল্প ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। এ গবেষণার তথ্য পাউবো কর্তৃক বাস্তবায়িত ছয়টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

পাউবো কর্তৃক বাস্তবায়িত জলবায়ু প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ গবেষণা একটি সামগ্রিক ধারণা দিলেও এর ফলাফল সকল প্রকল্পের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য নয়।

যেসব অনিয়ম

আলোচ্য ছয়টি প্রকল্পের কোনোটিতেই জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়নি। কোন প্রকল্পেই স্থানীয় প্রকল্প প্রণয়ন বিষয়ক সভা করা হয়নি; প্রকল্পের উপকারভোগী, প্রকল্পের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে কোন সামাজিক মূল্যায়ন হয়নি।

এছাড়া গবেষণাধীন কোনো প্রকল্পের তদারকিতে স্থানীয় জনসাধারণের অংশগ্রহণ ছিল না এবং প্রকল্পের কাজের মান সম্পর্কে উপকারভোগী/স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। এক্ষেত্রে বিদ্যমান নির্দেশিকা সম্পর্কে না জানা এবং জানলেও আমলে না নেয়া দুটি বিষয়ই পরিলক্ষিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জলবায়ু প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ উন্নয়ন বাজেটের প্রকল্পের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ব্যবস্থাপনার দিক থেকে গুরুত্ব কম পাচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন অংশীজনদের যোগসাজশে অনিয়ম। অর্থায়নকারী সংস্থা এবং পাউবো-এর কোনো আইন/নির্দেশিকায় কার্যকর অভিযোগ ব্যবস্থার নির্দেশনা নেই যা জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া প্রকল্প প্রণয়ন ও অনুমোদনে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন; তথ্যের স্বপ্রণোদিত উন্মুক্ততা এবং চাহিদাভিত্তিক তথ্য প্রদান উভয় ক্ষেত্রেই ঘাটতি; জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিষ্ক্রিয়তা এবং সমন্বয়ের ঘাটতি; শুদ্ধাচার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দায়িত্ব পালনে ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। যার প্রভাব ঠিকাদার নিয়োগ, ঠিকাদার কর্তৃক কাজের মান প্রভৃতির উপর পড়েছে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির সহায়ক পরিবেশ হিসেবে কাজ করছে।

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন এ গবেষণা দলের সদস্য টিআইবির গোলাম মহিউদ্দিন। প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকে সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত রয়েছে। সেটি না মেনে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রকল্প দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল। উন্নয়ন কাজের দরপত্র প্রদান প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়, সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে ই-টেন্ডারিং পদ্ধতিকে আর্দশ ব্যবস্থা মনে করা হয়। কিন্তু এ পদ্ধতি কেবল টেন্ডার জমাদান পর্যন্ত সীমিত। টেন্ডার মূল্যায়ন ও নির্বাচনে আগের পদ্ধতি বহাল থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ।

টিআইবি বলছে, জলবায়ু অর্থায়নের টেন্ডার বাস্তবায়নে সাত স্তরের জবাবদিহিতা থাকার কথা। কিন্তু এতেও ঘাটতি আছে। টিআইবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছয়টি প্রকল্প গবেষণার আওতায় নেয়। দেখা গেছে, বিসিসিটিএফ (বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড) মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়, আইএমইডি (বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ বিভাগ) এসব প্রকল্প শেষ হওয়ার পর মূল্যায়ন, নিরীক্ষা ও পরিবীক্ষণ করেনি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে চারটি প্রকল্প পরিবীক্ষণের দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সেসব কোন প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় কাজ সম্পর্কে বোর্ডে তথ্য প্রকাশ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হয় না।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যর্থতা উদ্বেগজনক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণে দুর্বলতা আছে। টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা ও স্বার্থের বিষয়ে প্রধান্য পায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি হাওরে ভয়াবহ বিপর্যয় হয়েছে। সেখানে ১.৮ লক্ষ হেক্টর আবাদি ভূমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর পাশাপাশি এক হাজার ২৭৬ টন মাছ এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে। এই বিপর্যয়ের অত্যতম কারণ বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম ও দুর্নীতি।

‘হাওর অ্যাভোকেসি প্লাটফর্ম’ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিভিন্ন সময়ে হাওর এলাকা পরিদর্শন করে পাউবোর বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম পেয়েছে। হাঁওরে বাধ নির্মাণে সুনামগঞ্জ পাউবো এর সুশাসন সম্পর্কিত টিআইবি এর গবেষণায়ও (২০০৯) উঠে আসে পাউবো কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারের যোগসাজশে দুর্নীতির বিষয়টি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প চরমভাবে ‘অস্বচ্ছ’: টিআইবি

আপডেট টাইম : ০৬:১২:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে জলবায়ু অর্থায়ন তহবিল থেকে বাস্তবায়িত প্রকল্পে চরম অস্বচ্ছ্তা, অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর বাংলাদেশ শাখা টিআইবি। সংস্থাটির গবেষণায় এই তথ্য বের হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে তারা।

বুধাবর দুপুরে রাজধানীতে সংস্থাটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সময় বলা হয়, ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রকল্প অনুমোদনে বিভিন্ন পর্যায়ে সুপারিশ করে।

২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ছয়টি প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা করেছে টিআইবি। প্রকল্পগুলো হলো: ১. খরা ঝুঁকি মোকাবেলায় অবকাঠামো নির্মাণ, নদীতীর সংরক্ষণ ও নদী পুনঃখনন; ২. বন্যা ঝুঁকি এড়াতে নদীতীর সংরক্ষণ; ৩. ঘূর্ণিঝড় ও লবণাক্ততা ঝুঁকিতে নদী তীর সংরক্ষণ ও বাঁধ পুন:নির্মাণ; ৫. ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার জন্য পোল্ডার নির্মাণ; ৬. বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ। এসব প্রকল্প ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। এ গবেষণার তথ্য পাউবো কর্তৃক বাস্তবায়িত ছয়টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

পাউবো কর্তৃক বাস্তবায়িত জলবায়ু প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ গবেষণা একটি সামগ্রিক ধারণা দিলেও এর ফলাফল সকল প্রকল্পের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য নয়।

যেসব অনিয়ম

আলোচ্য ছয়টি প্রকল্পের কোনোটিতেই জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়নি। কোন প্রকল্পেই স্থানীয় প্রকল্প প্রণয়ন বিষয়ক সভা করা হয়নি; প্রকল্পের উপকারভোগী, প্রকল্পের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে কোন সামাজিক মূল্যায়ন হয়নি।

এছাড়া গবেষণাধীন কোনো প্রকল্পের তদারকিতে স্থানীয় জনসাধারণের অংশগ্রহণ ছিল না এবং প্রকল্পের কাজের মান সম্পর্কে উপকারভোগী/স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। এক্ষেত্রে বিদ্যমান নির্দেশিকা সম্পর্কে না জানা এবং জানলেও আমলে না নেয়া দুটি বিষয়ই পরিলক্ষিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জলবায়ু প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ উন্নয়ন বাজেটের প্রকল্পের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ব্যবস্থাপনার দিক থেকে গুরুত্ব কম পাচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন অংশীজনদের যোগসাজশে অনিয়ম। অর্থায়নকারী সংস্থা এবং পাউবো-এর কোনো আইন/নির্দেশিকায় কার্যকর অভিযোগ ব্যবস্থার নির্দেশনা নেই যা জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া প্রকল্প প্রণয়ন ও অনুমোদনে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন; তথ্যের স্বপ্রণোদিত উন্মুক্ততা এবং চাহিদাভিত্তিক তথ্য প্রদান উভয় ক্ষেত্রেই ঘাটতি; জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিষ্ক্রিয়তা এবং সমন্বয়ের ঘাটতি; শুদ্ধাচার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দায়িত্ব পালনে ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। যার প্রভাব ঠিকাদার নিয়োগ, ঠিকাদার কর্তৃক কাজের মান প্রভৃতির উপর পড়েছে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির সহায়ক পরিবেশ হিসেবে কাজ করছে।

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন এ গবেষণা দলের সদস্য টিআইবির গোলাম মহিউদ্দিন। প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকে সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত রয়েছে। সেটি না মেনে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রকল্প দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল। উন্নয়ন কাজের দরপত্র প্রদান প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়, সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে ই-টেন্ডারিং পদ্ধতিকে আর্দশ ব্যবস্থা মনে করা হয়। কিন্তু এ পদ্ধতি কেবল টেন্ডার জমাদান পর্যন্ত সীমিত। টেন্ডার মূল্যায়ন ও নির্বাচনে আগের পদ্ধতি বহাল থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ।

টিআইবি বলছে, জলবায়ু অর্থায়নের টেন্ডার বাস্তবায়নে সাত স্তরের জবাবদিহিতা থাকার কথা। কিন্তু এতেও ঘাটতি আছে। টিআইবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছয়টি প্রকল্প গবেষণার আওতায় নেয়। দেখা গেছে, বিসিসিটিএফ (বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড) মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়, আইএমইডি (বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ বিভাগ) এসব প্রকল্প শেষ হওয়ার পর মূল্যায়ন, নিরীক্ষা ও পরিবীক্ষণ করেনি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে চারটি প্রকল্প পরিবীক্ষণের দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সেসব কোন প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় কাজ সম্পর্কে বোর্ডে তথ্য প্রকাশ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হয় না।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যর্থতা উদ্বেগজনক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণে দুর্বলতা আছে। টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা ও স্বার্থের বিষয়ে প্রধান্য পায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি হাওরে ভয়াবহ বিপর্যয় হয়েছে। সেখানে ১.৮ লক্ষ হেক্টর আবাদি ভূমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর পাশাপাশি এক হাজার ২৭৬ টন মাছ এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে। এই বিপর্যয়ের অত্যতম কারণ বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম ও দুর্নীতি।

‘হাওর অ্যাভোকেসি প্লাটফর্ম’ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিভিন্ন সময়ে হাওর এলাকা পরিদর্শন করে পাউবোর বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম পেয়েছে। হাঁওরে বাধ নির্মাণে সুনামগঞ্জ পাউবো এর সুশাসন সম্পর্কিত টিআইবি এর গবেষণায়ও (২০০৯) উঠে আসে পাউবো কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারের যোগসাজশে দুর্নীতির বিষয়টি।