ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুরে এক লাখ ২৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৫:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৮৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দিনাজপুরে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন ধানসহ মৌসুমি বিভিন্ন সবজি পানির নিচে এখনো তলিয়ে আছে। ভয়াবহ বন্যার দিনাজপুরে এক লাখ ২৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।

ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার বিনষ্ট ফসলি জমি সরেজমিনে পরিদর্শন এবং এ সময় করণীয় বিষয় নিয়ে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’র প্রতিনিধি দল।

বন্যার পানি উঁচু জায়গা আর ঘর-বাড়ি থেকে সরে গেলেও এখনো দিনাজপুরের অনেক ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে আছে। এবারের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার দিনাজপুরে এক লাখ ২৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়েক’শ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ তথ্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের।

বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের কৃষক। দক্ষিণ কোতোয়ালির মহববতপুর এলাকার কৃষক হাজী মতিউর রহমান জানান, ‘এবারের বন্যা হামাক সর্বনাশ করি দিছে। নষ্ট করি ফেলাইছে, তামান ফসল। আমার এখন কি হবি আল্লাহ জানে!’

জেলা সদর, বিরল, বীরগঞ্জ, কাহারোল, খানসামা, পাবর্তীপুর, বোচাগঞ্জ ও চিরিরবন্দর উপজেলায় বন্যায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন, বীজতলা, শাকসবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কিছু এলাকার পানি নেমে গেলেও ফসল পচে গলে গেছে বলে জানান চিরিরবন্দর নশরতপুর এলাকার কৃষক রমজান। তিনি বলেন, ‘হামরা সাড়ে ৩ বিঘা জমিত ধান লাগাইছোনো। তামান এখন শেষ।’

দিনাজপুর সদর, বিরল, কাহারোল ও চিরিরবন্দর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় বিনষ্ট ফসলি জমি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’র প্রতিনিধি দল। এ সময় ফসল নিয়ে করণীয় বিষয় নিয়ে তারা কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’র পরিচালক (প্রশাসন) ড. শাহাজাহান কবীর এবং বারি’র রংপুর অঞ্চলের প্রধান ড. আবু বকর সিদ্দিক সরকার।

প্রতিনিধি দল বলেন, ভেসে ওঠা ধানগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে পরিচর্যা করলে তা বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া যেসব ধান বিনষ্ট হয়েছে তা এখনো ৩০ ভাদ্র পর্যন্ত ধান লাগানোর সময় আছে। এসময় ব্রি-ধান-২২, ব্রি-ধান-৩৪, কাঠারি ভোগ এবং স্থানীয় জাতের ধান এ মুহূর্তে লাগানো সম্ভব। বীজতোলা তৈরি করে ১৫/২০ দিনের মধ্যে তা লাগাতে হবে। এতে কৃষক তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

দিনাজপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ৬ লাখ ২২ হাজার ৮শ ৮৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই কৃষক পরিবার বলে জানা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দিনাজপুরে এক লাখ ২৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে

আপডেট টাইম : ০৫:০৫:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দিনাজপুরে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন ধানসহ মৌসুমি বিভিন্ন সবজি পানির নিচে এখনো তলিয়ে আছে। ভয়াবহ বন্যার দিনাজপুরে এক লাখ ২৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।

ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার বিনষ্ট ফসলি জমি সরেজমিনে পরিদর্শন এবং এ সময় করণীয় বিষয় নিয়ে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’র প্রতিনিধি দল।

বন্যার পানি উঁচু জায়গা আর ঘর-বাড়ি থেকে সরে গেলেও এখনো দিনাজপুরের অনেক ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে আছে। এবারের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার দিনাজপুরে এক লাখ ২৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়েক’শ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ তথ্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের।

বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের কৃষক। দক্ষিণ কোতোয়ালির মহববতপুর এলাকার কৃষক হাজী মতিউর রহমান জানান, ‘এবারের বন্যা হামাক সর্বনাশ করি দিছে। নষ্ট করি ফেলাইছে, তামান ফসল। আমার এখন কি হবি আল্লাহ জানে!’

জেলা সদর, বিরল, বীরগঞ্জ, কাহারোল, খানসামা, পাবর্তীপুর, বোচাগঞ্জ ও চিরিরবন্দর উপজেলায় বন্যায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন, বীজতলা, শাকসবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কিছু এলাকার পানি নেমে গেলেও ফসল পচে গলে গেছে বলে জানান চিরিরবন্দর নশরতপুর এলাকার কৃষক রমজান। তিনি বলেন, ‘হামরা সাড়ে ৩ বিঘা জমিত ধান লাগাইছোনো। তামান এখন শেষ।’

দিনাজপুর সদর, বিরল, কাহারোল ও চিরিরবন্দর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় বিনষ্ট ফসলি জমি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’র প্রতিনিধি দল। এ সময় ফসল নিয়ে করণীয় বিষয় নিয়ে তারা কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’র পরিচালক (প্রশাসন) ড. শাহাজাহান কবীর এবং বারি’র রংপুর অঞ্চলের প্রধান ড. আবু বকর সিদ্দিক সরকার।

প্রতিনিধি দল বলেন, ভেসে ওঠা ধানগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে পরিচর্যা করলে তা বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া যেসব ধান বিনষ্ট হয়েছে তা এখনো ৩০ ভাদ্র পর্যন্ত ধান লাগানোর সময় আছে। এসময় ব্রি-ধান-২২, ব্রি-ধান-৩৪, কাঠারি ভোগ এবং স্থানীয় জাতের ধান এ মুহূর্তে লাগানো সম্ভব। বীজতোলা তৈরি করে ১৫/২০ দিনের মধ্যে তা লাগাতে হবে। এতে কৃষক তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

দিনাজপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ৬ লাখ ২২ হাজার ৮শ ৮৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই কৃষক পরিবার বলে জানা গেছে।